ঢাকা ০৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বকশীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ‘জামাই মেলা’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৬:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মে ২০২২
  • ১৫৩ বার

হাওর বাতা ডেস্কঃ প্রায় ২ বছর করোনায় বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে জামালপুরের বকশীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ‘জামাই মেলা’।

রোববার (০৫ মে) এই মেলা শুরু হয়।

প্রতিবছর বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের রোববার এই মেলা হওয়ার কথা থাকলেও রমাজান মাসের কারণে এবার ঈদের পর শুরু হয়।

বকশীগঞ্জের দড়িপাড়া গ্রামের কুকরা বিল এলাকায় বসে এ মেলা। এদিনের পর ৩দিন জামাইরা তাদের শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করেন। পরে বৃহস্পতিবার আবারো একই স্থানে মেলা হয়। মেলা শেষে জামাইরা তাদের নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যান। এসময়ে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মাঝপাড়া, দড়িপাড়া, টালিয়াপাড়া, চিকরকান্দি, জানকিপুর ও বাঁশকান্দাসহ ছয়টি গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। এছাড়া এ ইউনিয়নের আশপাশের গ্রামগুলোতেও এসময় জামাইদের আনাগোনা লক্ষ্য করার মতো। জামাইদের পাশাপশি নানা বয়সী নারী-পুরুষ মেলায় দেখতে আসেন।

এদিনের অপেক্ষায় থাকেন এসব এলাকার জামাইরা। প্রতিবছর এদিন জামাইরা নতুন কাপড় পরে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। জামাইদের অনাগোনায় আনন্দ উৎসব মুখর হয়ে থাকে। দেশীয় পিঠা পায়েস তৈরি করে দেওয়া হয় জামাইদের।

পাখিমারা গ্রামের জামাই মনিরুজ্জামান বলেন, আমি ৩০ বছর আগে বিয়ে করেছি। কিন্তু প্রতিবছর এই দিন আমরা শ্বশুরবাড়ি আসি। তিনদিন থাকার পর বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারে চলে যাই।

টিকরকান্দী গ্রামের জামাই মোখলেছ মিয়া জানান, আসলে এটি একটি উৎসব। আমরা এই দিনটার অপেক্ষায় থাকি।

সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও আনুমানিক ২০০ বছর ধরে বকশীগঞ্জে জামাই মেলার রীতি চলে আসছে। ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলামেলায় রয়েছে পুতুলনাচ, নাগরদোলা ও লাঠি খেলা। মিষ্টি-মন্ডার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে চমচম, রসগোল্লা, সন্দেশ, মুড়ি-মুড়কি, ঝুরি, বাতাসা, কদমা, নৈ-টানা ও সাজ। শিশুদের জন্য আছে বিভিন্ন প্রকার খেলনা।

এছাড়া প্রসাধন সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য, পোশাক, মৃৎশিল্প, তৈজসপত্র, আসবাবপত্র, বেঁতের তৈরি ডালা, ডাকি, দাঁড়িপাল্লা, বাঁশের তৈরি চালুন, খালই, ধারাই, ডুলি; তালের পাতার তৈরি হাতপাখা, শীতল পাটি; সিসা ও মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিলসহ গৃহস্থের বাড়ির সব ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিপুল সমারোহ দেখা যাচ্ছে মেলায়। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় তরকারি বেগুন, আলু, করলা, তরমুজ ও সাজনাসহ বিভিন্ন প্রকার মাছ ও শাক-সবজি তো আছেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস

বকশীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ‘জামাই মেলা’

আপডেট টাইম : ০৫:২৬:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মে ২০২২

হাওর বাতা ডেস্কঃ প্রায় ২ বছর করোনায় বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে জামালপুরের বকশীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ‘জামাই মেলা’।

রোববার (০৫ মে) এই মেলা শুরু হয়।

প্রতিবছর বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের রোববার এই মেলা হওয়ার কথা থাকলেও রমাজান মাসের কারণে এবার ঈদের পর শুরু হয়।

বকশীগঞ্জের দড়িপাড়া গ্রামের কুকরা বিল এলাকায় বসে এ মেলা। এদিনের পর ৩দিন জামাইরা তাদের শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করেন। পরে বৃহস্পতিবার আবারো একই স্থানে মেলা হয়। মেলা শেষে জামাইরা তাদের নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যান। এসময়ে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মাঝপাড়া, দড়িপাড়া, টালিয়াপাড়া, চিকরকান্দি, জানকিপুর ও বাঁশকান্দাসহ ছয়টি গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। এছাড়া এ ইউনিয়নের আশপাশের গ্রামগুলোতেও এসময় জামাইদের আনাগোনা লক্ষ্য করার মতো। জামাইদের পাশাপশি নানা বয়সী নারী-পুরুষ মেলায় দেখতে আসেন।

এদিনের অপেক্ষায় থাকেন এসব এলাকার জামাইরা। প্রতিবছর এদিন জামাইরা নতুন কাপড় পরে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। জামাইদের অনাগোনায় আনন্দ উৎসব মুখর হয়ে থাকে। দেশীয় পিঠা পায়েস তৈরি করে দেওয়া হয় জামাইদের।

পাখিমারা গ্রামের জামাই মনিরুজ্জামান বলেন, আমি ৩০ বছর আগে বিয়ে করেছি। কিন্তু প্রতিবছর এই দিন আমরা শ্বশুরবাড়ি আসি। তিনদিন থাকার পর বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারে চলে যাই।

টিকরকান্দী গ্রামের জামাই মোখলেছ মিয়া জানান, আসলে এটি একটি উৎসব। আমরা এই দিনটার অপেক্ষায় থাকি।

সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও আনুমানিক ২০০ বছর ধরে বকশীগঞ্জে জামাই মেলার রীতি চলে আসছে। ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলামেলায় রয়েছে পুতুলনাচ, নাগরদোলা ও লাঠি খেলা। মিষ্টি-মন্ডার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে চমচম, রসগোল্লা, সন্দেশ, মুড়ি-মুড়কি, ঝুরি, বাতাসা, কদমা, নৈ-টানা ও সাজ। শিশুদের জন্য আছে বিভিন্ন প্রকার খেলনা।

এছাড়া প্রসাধন সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য, পোশাক, মৃৎশিল্প, তৈজসপত্র, আসবাবপত্র, বেঁতের তৈরি ডালা, ডাকি, দাঁড়িপাল্লা, বাঁশের তৈরি চালুন, খালই, ধারাই, ডুলি; তালের পাতার তৈরি হাতপাখা, শীতল পাটি; সিসা ও মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিলসহ গৃহস্থের বাড়ির সব ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিপুল সমারোহ দেখা যাচ্ছে মেলায়। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় তরকারি বেগুন, আলু, করলা, তরমুজ ও সাজনাসহ বিভিন্ন প্রকার মাছ ও শাক-সবজি তো আছেই।