সাপাহারে অসময়ে মিলছে পাকা আম, কেজি ৩০০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সারাবছরই মিলছে আম। জ্যৈষ্ঠের ফল উৎসবে আম পাড়তে অপেক্ষা করতে হয় না আমচাষিদের। মৌসুমি ফল আগাম জাতের আম বাজারে আসতে এখনও একমাস বাকি। এদিকে চলছে পবিত্র রমজান।

যে গরম চলছে, তাতে এসব ফল ইফতারে তৃপ্তি, তৃষ্ণা ও খাদ্যগুণ সবকটিই মেটাতে সক্ষম। বিশেষ করে এই বৈশাখে পাকা আম পাওয়া যাচ্ছে। আমের রাজধানী খ্যাত নওগাঁর সাপাহারে। তবে দাম বেশ চড়া। প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক ক্রেতা।

আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত মে থেকে সেপ্টেম্বর মোট ৫ মাস আমের মৌসুম থাকে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাকে আগাম জাতের আম। ‘কাটিমন’ আম ১২ মাসের হওয়ায় দাম ভালো পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে এই আম চাষ করে লাভবান হচ্ছে অনেকে।

সরেজমিনে উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের কোচকুড়লিয়া এলাকায় বকুল ৫ বিঘা ও একই ইউনিয়নের সারোকডাংগা এলাকার হাফিজুরের ১৫ বিঘা বারোমাসি আমবাগানে গিয়ে দেখা যায়, বারোমাসি আমের বাগান থেকে ‘কাটিমন’ আম কার্টনে ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন।

হাফিজুর ও বকুল বলেন, গত চার-পাঁচ বছর ধরে বারোমাসি আম চাষের সঙ্গে জড়িত। এর আগে ভালো লাভবান না হলেও এবার আমের দাম ভালো হওয়ায় আমরা গত তিনমাসে প্রায় ২০ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। আশা করছি সামনে ছয় থেকে আট মাসে আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকার আম বিক্রি করা যাবে।

তারা আরও বলেন, এখনও আমাদের বাগানে পাকা আম আছে। এই আমের সব ক্রেতা অনলাইনে অর্ডার করেন এবং কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গাছ থেকে নামানো আম ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আমাদের বাগানে এখনো কাটিমন, বারি-১১, এ দুধরনের সুস্বাদু আম আছে।

বকুলের বাগানে কাজ করছিলেন কর্মচারী তুহিন বলেন, এ বাগানে সারাবছরই সুস্বাদু আম পাওয়া যায়। সেগুলো কার্টনে করে দেশে বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ার যোগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী রেদুয়ান মুন বলেন, এ গ্রামেই আমার বাড়ি। রোজার প্রথম দিকে জানতে পারি বকুল ভাইয়ের বাগানে সুস্বাদু আম পাওয়া যাচ্ছে। তাই ইফতারিতে খাওয়ার জন্য দুই কেজি পাকা আম কিনতে এসেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন, ‘কাটিমন’ মৌসুমি আম না হওয়ায় চাহিদা বেশি। তবে আমের স্বাদ ভালো। একসময় আমের চাষ শুধু দেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কয়েকটি জেলায়ই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ‘আম্রপালি’ ও ‘কাটিমন’ দুটি জাতের প্রবর্তনের ফলে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে নওগাঁ সাপাহারের নাম।

তিনি আরও জানান, কাটিমন আম আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী। আম্রপালির মতো ছোট গাছে আম হয়। এই জাতে প্রচুর আম ধরে। একই গাছে একসঙ্গে মুকুল, ছোট, মাঝারি, বড় ও পাকা আম থাকে। এই গাছে নতুন কুশি ছাড়লেই মুকুল আসে। এর কোনো সিজন আর অফ সিজন নেই।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর