ঢাকা ১২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন জেলায় আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
  • ১১৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিন জেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক অববাহিকা এবং মেঘালয় রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। সেটা থেকেই এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিষ্ঠান বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) রোববার বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা সম্পর্কিত ৮ দিনের বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে আগাম বন্যার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ১০ থেকে ১৭ এপ্রিল উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে উল্লিখিত অঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, যদুকাটা, লুভাছড়া, সারিগোয়াইন, ধলাগাং, পিয়াইন, ঝালুখালি, সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস, ধনু-বাউলাই নদ-নদীতে পানির সমতল বেড়ে যেতে পারে। ফলে এই সময়কার (১০-১৭ এপ্রিল) শেষের দিকে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কিছু স্থানে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

জানতে চাইলে বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, সিলেট অঞ্চলে সাধারণত মে মাসের শেষের দিকে আকস্মিক বন্যা হয়। পাহাড় কাছে থাকায় ঢল চলে আসে। তার আগে মানুষজন বোরো ধান তুলে আনে। কিন্তু এবার সেখানে ৩১ মার্চ থেকে ১ এপ্রিলে বন্যা হয়ে গেছে। ফলে নদ-নদীর পানিপ্রবাহ বেশি আছে। এ অবস্থায় ফের ভারী বৃষ্টিপাত হলে তা হাওড়াঞ্চলের জন্য বড় ক্ষতি বয়ে আনবে।

বুয়েট এবং এফএফডব্লিউসি সূত্র জানায়, ১০ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ৮ দিনে আসাম ও মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেয়ারিক অ্যামিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) বরাত দিয়ে বলা হয়, এক সপ্তাহে ২৬১ মিলিলিটার বৃষ্টি হতে পারে। আর ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম-রেঞ্জ ফোরকাস্টস (ইসিএমডব্লিউএফ) প্রকাশিত বৃষ্টির মডেল পূর্বাভাস থেকে জানা যায়, প্রায় ৬৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে।

বুয়েটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, যদি প্রথমটি সঠিক হয়ে যায় তাহলে সেটা বড় বন্যা নয়। গত সপ্তাহের বন্যার কারণে উজানের কোনো কোনো জেলায় নদ-নদীতে কিছু বৃষ্টির পানি আছে। ফলে মাঝারি আকারের বৃষ্টিতে বন্যা দেখা দিতে পারে। যদিও তা বড় আকার নাও হতে পারে। কিন্তু পরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টিপাত হলে অনেক বড় বন্যা হতে পারে।

এই বন্যা বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, মাত্র চার বছরের মাথায় দেশ এভাবে আকস্মিক বন্যার কারণে পড়ার প্রধান কারণ জলবায়ুর পরিবর্তন। যখন বৃষ্টি হবার কথা নয়, তখন বৃষ্টি হচ্ছে। এবার তো ‘অতি আগাম’ বৃষ্টি হয়ে গেল। তার মতে, কেবল আগাম বা মৌসুমী বন্যার ক্ষেত্রেই নয়, অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগও গত কয়েক বছর ধরে বেশি হচ্ছে। ২০১৭ সালেও সিলেট অঞ্চলে একাধিক বন্যা হয়েছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তিন জেলায় আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস

আপডেট টাইম : ১০:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিন জেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক অববাহিকা এবং মেঘালয় রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। সেটা থেকেই এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিষ্ঠান বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) রোববার বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা সম্পর্কিত ৮ দিনের বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে আগাম বন্যার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ১০ থেকে ১৭ এপ্রিল উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে উল্লিখিত অঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, যদুকাটা, লুভাছড়া, সারিগোয়াইন, ধলাগাং, পিয়াইন, ঝালুখালি, সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস, ধনু-বাউলাই নদ-নদীতে পানির সমতল বেড়ে যেতে পারে। ফলে এই সময়কার (১০-১৭ এপ্রিল) শেষের দিকে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কিছু স্থানে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

জানতে চাইলে বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, সিলেট অঞ্চলে সাধারণত মে মাসের শেষের দিকে আকস্মিক বন্যা হয়। পাহাড় কাছে থাকায় ঢল চলে আসে। তার আগে মানুষজন বোরো ধান তুলে আনে। কিন্তু এবার সেখানে ৩১ মার্চ থেকে ১ এপ্রিলে বন্যা হয়ে গেছে। ফলে নদ-নদীর পানিপ্রবাহ বেশি আছে। এ অবস্থায় ফের ভারী বৃষ্টিপাত হলে তা হাওড়াঞ্চলের জন্য বড় ক্ষতি বয়ে আনবে।

বুয়েট এবং এফএফডব্লিউসি সূত্র জানায়, ১০ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ৮ দিনে আসাম ও মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেয়ারিক অ্যামিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) বরাত দিয়ে বলা হয়, এক সপ্তাহে ২৬১ মিলিলিটার বৃষ্টি হতে পারে। আর ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম-রেঞ্জ ফোরকাস্টস (ইসিএমডব্লিউএফ) প্রকাশিত বৃষ্টির মডেল পূর্বাভাস থেকে জানা যায়, প্রায় ৬৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে।

বুয়েটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, যদি প্রথমটি সঠিক হয়ে যায় তাহলে সেটা বড় বন্যা নয়। গত সপ্তাহের বন্যার কারণে উজানের কোনো কোনো জেলায় নদ-নদীতে কিছু বৃষ্টির পানি আছে। ফলে মাঝারি আকারের বৃষ্টিতে বন্যা দেখা দিতে পারে। যদিও তা বড় আকার নাও হতে পারে। কিন্তু পরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টিপাত হলে অনেক বড় বন্যা হতে পারে।

এই বন্যা বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, মাত্র চার বছরের মাথায় দেশ এভাবে আকস্মিক বন্যার কারণে পড়ার প্রধান কারণ জলবায়ুর পরিবর্তন। যখন বৃষ্টি হবার কথা নয়, তখন বৃষ্টি হচ্ছে। এবার তো ‘অতি আগাম’ বৃষ্টি হয়ে গেল। তার মতে, কেবল আগাম বা মৌসুমী বন্যার ক্ষেত্রেই নয়, অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগও গত কয়েক বছর ধরে বেশি হচ্ছে। ২০১৭ সালেও সিলেট অঞ্চলে একাধিক বন্যা হয়েছিল।