হাওর বার্তা ডেস্কঃ আলেক্সান্দ্রা এবং আন্তোনিনা চার্চে একটি কফিন রাখা। কফিনটি রাশিয়ার তিন রঙা পতাকায় মোড়া।
কাস্কেটের ওপর রাখা এক ফৌজি টুপি এবং একটি ছবি। কফিনে মোড়ানো মিখাইল অর্চিকভ ছিলেন মোটর রাইফেল ব্রিগেডের ডেপুটি কমান্ডার।
ইউক্রেনে লড়াই করতে গিয়ে নিহত হন তিনি। সশস্ত্র রুশ সেনারা তাকে গার্ড অব অনার দেওয়ার জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন।
রুশ অর্থোডক্স চার্চের এক যাজক কফিনের চারপাশ দিয়ে হেঁটে প্রার্থনা করছেন এবং একটি ধাতব পাত্র দুলিয়ে ধূপের গন্ধ ছড়াচ্ছেন।
চার্চের ভেতরে এর তীব্র গন্ধ যেন মিশে যাচ্ছে গায়কদলের সুমিষ্ট সুরের মূর্ছনার সঙ্গে। নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর মাথা কালো স্কার্ফে ঢাকা, তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন নিকটাত্মীয়রা।
যাজক বলেন, আমাদের দেশের অবস্থা এখন মোটেই সহজ নয়, সবাই সেটা বোঝেন।
ক্রেমলিন জনগণকে এমন কথা বিশ্বাস করাতে চায় যে ইউক্রেনে যাওয়া রুশ সেনারা হচ্ছে বীর এবং সেখানে রাশিয়া যা করছে, সেটা আত্ম-রক্ষার্থে তাদের করতে হচ্ছে।
রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনের সংবাদ বিষয়ক এক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানের সাম্প্রতিক এক পর্বে উপস্থাপক দাবি করলেন, যদি রাশিয়া এখনই হস্তক্ষেপ না করতো, তিন বছরের মধ্যেই ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিত, তারা পরমাণু বোমা অধিকারী হতো।
অনুষ্ঠানে যে চিত্র তুলে ধরা হচ্ছিল তা একেবারেই এক ‘ভিন্ন বাস্তবতা’, যেখানে ইউক্রেনই আগ্রাসন চালিয়েছে।
কোস্ট্রোমা শহরের রাস্তায় অনেকেই ক্রেমলিনের এই সরকারি ভাষ্য বিশ্বাস করেন।
মিখাইল অর্চিকভকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় কবর দেওয়া হয়েছে। তাকে বর্ণনা করা হয়েছে ‘পিতৃভূমি রক্ষায় আত্মদানকারী সৈনিক’ বলে।
মিখাইলের মতো আরো বহু সেনা ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা গেছেন। ইউক্রেনে কত রুশ সেনা এ পর্যন্ত মারা গেছেন? রাশিয়ায় সরকারের দেওয়া তথ্যের বাইরে এ নিয়ে অন্য কিছু প্রকাশ করা ফৌজদারি অপরাধ।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত ইউক্রেনে তাদের ভাষায় ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ অংশ নিতে গিয়ে ৪৯৮ জন রুশ সেনা নিহত হয়েছেন।
নিহতদের সংখ্যা নিয়ে এটাই রাশিয়ার সর্বশেষ তথ্য, যা প্রকাশ করা হয় গত ২ মার্চ। কিন্তু গত দুই সপ্তাহে এর পর আর কোন নতুন তথ্য দেওয়া হয়নি।