ঢাকা ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

তেলের দাম ১১৮ ডলার ছাড়ালো, সংকট চললে ইতিহাসে সর্বোচ্চ হওয়ার শঙ্কা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০২২
  • ১১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগতে চলছে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েই চলেছে। সংকট চলতে থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যে এর দাম ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্যারেলপ্রতি ১৫০ মার্কিন ডলার ছাড়াবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, শুক্রবার (৪ মার্চ) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম বেড়েছে ব্যারেলপ্রতি ৭ দশমিক ৬৫ ডলার। দিন শেষে এর দর আগের দিনের চেয়ে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১১৮ দশমিক ১১ ডলার, যা ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বোচ্চ।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর মাত্র এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে ব্রেন্টের দাম বেড়েছে অন্তত ২১ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম বেড়েছে পুরো ২৬ শতাংশ। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলো একজোট হয়ে নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করায় বিশ্ব অর্থনীতিতে এই সংকট দেখা দেয়। এখন পর্যন্ত রুশ তেল-গ্যাসের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সেই পথেই যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে রুশ তেল আমদানি নিষিদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। রয়টার্সের এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ শতাংশ মানুষ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন।

তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করেছে কানাডা। রুশ তেলের বৃহত্তম আমদানিকারক চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডেসের মতো দেশগুলোতে অনেক পরিশোধনকারীই নিষেধাজ্ঞার ভয়ে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে অনীহা দেখাতে শুরু করেছেন।

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা প্রায় সমঝোতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমা মন্ত্রীরা। এটি কার্যকর হলে বিশ্ববাজারে দৈনিক আরও ১০ লাখ ব্যারেল তেল যোগ হতে পারে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানি তেল দিয়ে রাশিয়ার ঘাটতি পূরণ সম্ভব হবে না।

সৌদি আরবের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক রাশিয়া। তারা দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করে থাকে। ফলে মস্কোর ওপর জ্বালানি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে তা সংকট আরও বাড়িয়ে দেবে।

২০০৮ সালের জুলাই মাসে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম উঠেছিল ১৪৭ দশমিক ২৭ ডলার। আজ পর্যন্ত এটিই তেলের দামের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

গোল্ডম্যান স্যাশ গ্রুপের জ্বালানি গবেষণার প্রধান ড্যামিয়েন কুরভালিন মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন, রাশিয়ার তেল ব্যাপকভাবে পরিহার অব্যাহত থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৫০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।

তার মতে, রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্ররা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরে তেলের দাম কমানোর একমাত্র উপায় হবে চাহিদা কমানো। এটি ছাড়া তেলের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানোর আর কোনো রাস্তা নেই বলে মন্তব্য করেছেন এ বিশেষজ্ঞ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

তেলের দাম ১১৮ ডলার ছাড়ালো, সংকট চললে ইতিহাসে সর্বোচ্চ হওয়ার শঙ্কা

আপডেট টাইম : ০৯:৫৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগতে চলছে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েই চলেছে। সংকট চলতে থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যে এর দাম ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্যারেলপ্রতি ১৫০ মার্কিন ডলার ছাড়াবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, শুক্রবার (৪ মার্চ) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম বেড়েছে ব্যারেলপ্রতি ৭ দশমিক ৬৫ ডলার। দিন শেষে এর দর আগের দিনের চেয়ে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১১৮ দশমিক ১১ ডলার, যা ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বোচ্চ।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর মাত্র এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে ব্রেন্টের দাম বেড়েছে অন্তত ২১ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম বেড়েছে পুরো ২৬ শতাংশ। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলো একজোট হয়ে নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করায় বিশ্ব অর্থনীতিতে এই সংকট দেখা দেয়। এখন পর্যন্ত রুশ তেল-গ্যাসের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সেই পথেই যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে রুশ তেল আমদানি নিষিদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। রয়টার্সের এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ শতাংশ মানুষ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন।

তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করেছে কানাডা। রুশ তেলের বৃহত্তম আমদানিকারক চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডেসের মতো দেশগুলোতে অনেক পরিশোধনকারীই নিষেধাজ্ঞার ভয়ে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে অনীহা দেখাতে শুরু করেছেন।

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা প্রায় সমঝোতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমা মন্ত্রীরা। এটি কার্যকর হলে বিশ্ববাজারে দৈনিক আরও ১০ লাখ ব্যারেল তেল যোগ হতে পারে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানি তেল দিয়ে রাশিয়ার ঘাটতি পূরণ সম্ভব হবে না।

সৌদি আরবের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক রাশিয়া। তারা দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করে থাকে। ফলে মস্কোর ওপর জ্বালানি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে তা সংকট আরও বাড়িয়ে দেবে।

২০০৮ সালের জুলাই মাসে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম উঠেছিল ১৪৭ দশমিক ২৭ ডলার। আজ পর্যন্ত এটিই তেলের দামের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

গোল্ডম্যান স্যাশ গ্রুপের জ্বালানি গবেষণার প্রধান ড্যামিয়েন কুরভালিন মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন, রাশিয়ার তেল ব্যাপকভাবে পরিহার অব্যাহত থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৫০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।

তার মতে, রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্ররা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরে তেলের দাম কমানোর একমাত্র উপায় হবে চাহিদা কমানো। এটি ছাড়া তেলের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানোর আর কোনো রাস্তা নেই বলে মন্তব্য করেছেন এ বিশেষজ্ঞ।