শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে শিক্ষক-অভিভাবকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ -টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জ্ঞানভাণ্ডার হচ্ছে ইন্টারনেট।
জ্ঞানের এই জগৎ থেকে শিশুদের দূরে রেখে তাদেরকে আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যাবে না।
তবে তাদের জন্য ইন্টারনেটকে নিরাপদ করতে হবে। শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে শিক্ষক ও
অভিভাবকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিক্ষক বা অভিভাবকের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ে নূন্যতম ধারণা
থাকলে তারা শিক্ষার্থী বা সন্তানের জন্য প্যারেন্টাইল গাইডেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ইন্টারন্টে নিশ্চিত
করতে পারেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র আয়োজিত অন লাইনে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে পরিস্থিতি
বিশ্লেষণ ও শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান
অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল যুগে
তথ্য সম্পর্কে অসচেতনতা কাম্য হতে পারে না। তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে তথ্যযুগে অসহায়ভাবে
নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে শিশুদের শারীরিক মানসিক নিরাপত্তার ন্যায়
ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়ে বাবা মাকে অধিকতর যত্নশীল হতে হবে। একইভাবে শিক্ষক শিক্ষিকারা
শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের জগৎটাকে যথাযথভাবে গাইড করবেন। তিনি বলেন, যে অবস্থাতে আমরা এখন বসবাস
করছি আগামী দশ বছর পর সে অবস্থা বিরাজ করবে না। আগামী দিনের প্রযুক্তি হবে বিস্ময়কর। ৫ম শিল্প যুগের
প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের ৭০ ভাগ তরুণ জনগোষ্ঠীকে তৈরি করতে হবে। তিনি নতুন প্রজন্মকে

অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে বলেন, নতুনদেরকে সঠিকভাবে তৈরি করতে পারলে তারা বিস্ময়করভাবে সফল হবে।
তিনি শিশুদের ডিজিটাল যন্ত্র থেকে সুরক্ষায় যে কোন সুপারিশ ও পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার
অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখবে বলে আয়োজকদের আশ্বস্ত করেন। মন্ত্রী নিরাপদ ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে
ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্নো সাইট ও ২ হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করা হয়েছে। ফেসবুক ইউটিউব এবং টিকটকসহ
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কমিউনিটি স্টেন্ডার্ড অনুসরণ করার জন্য ফলপ্রসূ ভূমিকা আমরা রাখছি।
তাদের সাথে নিয়মিত আলোচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষতিকর কনটেন্ট বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী প্রতিটি আইনের মতই ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার
কথা বর্ণনা করেন। তিনি অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেন, ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
প্রণয়ন না করে কোনো উপায় ছিলো না।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে হিংসা বিদ্বেষ ছড়ানো
গর্হিত কাজ উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসবের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহজাবিন হক, টিআইসি’র অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম ফারুক এবং আইএসপিএবি’র সভাপতি

ইমদাদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন। শিশু প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন খাতের বক্তারা তাদের বক্তব্য পেশ করেন। আইন
ও সালিশ কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সমন্বয়কারী অম্বিকা রায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের
কর্মকর্তা গোলাম মনোয়ার কামাল অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
#

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর