ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার চেয়ে বড় বিমানবন্দর বানাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১৭০ বার

প্রতিদ্বন্দ্বী সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াকে টেক্কা দিতে নিজেদের একটি বিমানবন্দরকে উড়োজাহাজ চলাচলের আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এতে খরচ হবে অন্তত ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব একটি ভারতীয় কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবর অনুসারে, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমানবন্দর পরিচালনা কর্তৃপক্ষ আংকাসা পুরা এবং ভারতীয় প্রতিষ্ঠান জিএমআর এয়ারপোর্টস কনসোর্টিয়াম চলতি মাসের শুরুর দিকে উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে এ অঞ্চলের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনার কথা জানায়।

রূপান্তরের পর ইন্দোনেশীয় বিমানবন্দরটি দিয়ে প্রতি বছর পাঁচ কোটি যাত্রী চলাচল করতে পারবেন বলে ধরা হচ্ছে। এটি বাস্তবে পরিণত হলে তা হবে করোনা মহামারির আগে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ও মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করা যাত্রী সংখ্যার প্রায় পাঁচগুণ বেশি।

এই কাজের জন্য জিএমআর গ্রুপ ২৫ বছরের চুক্তিতে ৫৬ লাখ কোটি ইন্দোনেশীয় রুপাইয়া বা ৩৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রকল্পের বাকি অর্থ দেবে ইন্দোনেশিয়া নিজে।

 

তবে আচমকা এই চুক্তির কথা ঘোষণার পর কিছুটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। উত্তর সুমাত্রার পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট অনেকে অভিযোগ করেছেন, বিমানবন্দরটি ‘ভারতের কাছে বিক্রি’ করে দেওয়ার আগে কেন তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হলোনামেদান-ভিত্তিক ট্যুর কোম্পানি পিটি ওয়েসলি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলের জেনারেল ম্যানেজার মার্সি পাংগাবিন বলেন, আমি মনে করি, এটি বিদেশি ব্যবস্থাপনার কাছে হস্তান্তর করা ঠিক আছে, তবে কী ঘটছে তা পরিষ্কার হওয়া দরকার। টেন্ডারের সময় ট্যুর অপারেটরদের কেন এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ডাকা হয়নি? জিএমআর এয়ারপোর্টস কনসোর্টিয়াম টেন্ডার জিতেছে, তা আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানার আগে এ নিয়ে কোনো খবরই ছিল না।

পাংগাবিনের মতে, স্থানীয় ট্যুর অপারেটররা এই চুক্তির বিরুদ্ধে নয়। তবে প্রকল্পের বিবরণ সম্পর্কে আংকাসা পুরা কর্তৃপক্ষকে আরও স্বচ্ছ হওয়া দরকার।

মেদানের বোরাস্পতি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্লেমেন্ট গুলটমও এই ঘোষণায় বিস্মিত হয়েছেন। তবে বিমানবন্দর উন্নয়নের ক্ষেত্রে জিএমআর এয়ারপোর্টস কনসোর্টিয়ামের মতো পোর্টফোলিও কোনো ইন্দোনেশীয় কোম্পানির দেখেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।

কনসোর্টিয়ামের মূল কোম্পানি জিএমআর গ্রুপ দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও হায়দ্রাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনা করে। চুক্তি রয়েছে গ্রিস ও ফিলিপাইনে বিমানবন্দর উন্নয়নেরও। তাদের অন্যতম অংশীদার ফ্রান্সের অ্যারোপোর্টস দে প্যারিস গ্রুপ (এডিপি) প্যারিস-চার্লস দে গল, প্যারিস-ওরলি এবং প্যারিস-লে বোর্গেটের মালিক ও পরিচালনাকারী।

 

কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্তব্যের জন্য আংকাসা পুরা এবং জিএমআরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আল জাজিরা। তবে তাদের কারোরই সাড়া মেলেনি।

তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিষয়ক উপমন্ত্রী কার্তিকা উইরজোটমোজো দেশটির সংসদে বলেছিলেন, কৌশলগত অবস্থানের কারণে কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর একটি বিশ্বমানের বিমানবন্দরে পরিণত হবে।

আর জিএমআর গ্রুপের (বিদ্যুৎ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) চেয়ারম্যান শ্রীনিবাস বোম্মিদালা বলেছিলেন, তারা ইন্দোনেশিয়ার বিমানবন্দরটিকে একটি আন্তর্জাতিক হাব বা কেন্দ্রে রূপান্তরের পরিকল্পনা করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার চেয়ে বড় বিমানবন্দর বানাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া

আপডেট টাইম : ১০:৫৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

প্রতিদ্বন্দ্বী সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াকে টেক্কা দিতে নিজেদের একটি বিমানবন্দরকে উড়োজাহাজ চলাচলের আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এতে খরচ হবে অন্তত ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব একটি ভারতীয় কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবর অনুসারে, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমানবন্দর পরিচালনা কর্তৃপক্ষ আংকাসা পুরা এবং ভারতীয় প্রতিষ্ঠান জিএমআর এয়ারপোর্টস কনসোর্টিয়াম চলতি মাসের শুরুর দিকে উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে এ অঞ্চলের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনার কথা জানায়।

রূপান্তরের পর ইন্দোনেশীয় বিমানবন্দরটি দিয়ে প্রতি বছর পাঁচ কোটি যাত্রী চলাচল করতে পারবেন বলে ধরা হচ্ছে। এটি বাস্তবে পরিণত হলে তা হবে করোনা মহামারির আগে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ও মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করা যাত্রী সংখ্যার প্রায় পাঁচগুণ বেশি।

এই কাজের জন্য জিএমআর গ্রুপ ২৫ বছরের চুক্তিতে ৫৬ লাখ কোটি ইন্দোনেশীয় রুপাইয়া বা ৩৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রকল্পের বাকি অর্থ দেবে ইন্দোনেশিয়া নিজে।

 

তবে আচমকা এই চুক্তির কথা ঘোষণার পর কিছুটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। উত্তর সুমাত্রার পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট অনেকে অভিযোগ করেছেন, বিমানবন্দরটি ‘ভারতের কাছে বিক্রি’ করে দেওয়ার আগে কেন তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হলোনামেদান-ভিত্তিক ট্যুর কোম্পানি পিটি ওয়েসলি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলের জেনারেল ম্যানেজার মার্সি পাংগাবিন বলেন, আমি মনে করি, এটি বিদেশি ব্যবস্থাপনার কাছে হস্তান্তর করা ঠিক আছে, তবে কী ঘটছে তা পরিষ্কার হওয়া দরকার। টেন্ডারের সময় ট্যুর অপারেটরদের কেন এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ডাকা হয়নি? জিএমআর এয়ারপোর্টস কনসোর্টিয়াম টেন্ডার জিতেছে, তা আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানার আগে এ নিয়ে কোনো খবরই ছিল না।

পাংগাবিনের মতে, স্থানীয় ট্যুর অপারেটররা এই চুক্তির বিরুদ্ধে নয়। তবে প্রকল্পের বিবরণ সম্পর্কে আংকাসা পুরা কর্তৃপক্ষকে আরও স্বচ্ছ হওয়া দরকার।

মেদানের বোরাস্পতি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্লেমেন্ট গুলটমও এই ঘোষণায় বিস্মিত হয়েছেন। তবে বিমানবন্দর উন্নয়নের ক্ষেত্রে জিএমআর এয়ারপোর্টস কনসোর্টিয়ামের মতো পোর্টফোলিও কোনো ইন্দোনেশীয় কোম্পানির দেখেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।

কনসোর্টিয়ামের মূল কোম্পানি জিএমআর গ্রুপ দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও হায়দ্রাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনা করে। চুক্তি রয়েছে গ্রিস ও ফিলিপাইনে বিমানবন্দর উন্নয়নেরও। তাদের অন্যতম অংশীদার ফ্রান্সের অ্যারোপোর্টস দে প্যারিস গ্রুপ (এডিপি) প্যারিস-চার্লস দে গল, প্যারিস-ওরলি এবং প্যারিস-লে বোর্গেটের মালিক ও পরিচালনাকারী।

 

কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্তব্যের জন্য আংকাসা পুরা এবং জিএমআরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আল জাজিরা। তবে তাদের কারোরই সাড়া মেলেনি।

তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিষয়ক উপমন্ত্রী কার্তিকা উইরজোটমোজো দেশটির সংসদে বলেছিলেন, কৌশলগত অবস্থানের কারণে কুয়ালানামু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর একটি বিশ্বমানের বিমানবন্দরে পরিণত হবে।

আর জিএমআর গ্রুপের (বিদ্যুৎ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) চেয়ারম্যান শ্রীনিবাস বোম্মিদালা বলেছিলেন, তারা ইন্দোনেশিয়ার বিমানবন্দরটিকে একটি আন্তর্জাতিক হাব বা কেন্দ্রে রূপান্তরের পরিকল্পনা করছেন।