তৃণমূলকে কথা বলার সুযোগ দিতেই সম্মেলন দুই দিন

এবারই প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন।

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সম্মেলনে তৃণমূলের নেতাদের বক্তব্যের সুযোগ দিতেই এবার দুইদিন ব্যাপী সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সম্মেলনে জেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পাবেন। আগামী ১০ ও ১১ জুলাই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

সর্বশেষ আওয়ামী লীগের ১৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ওই কমিটির মেয়াদ গত ২৯ ডিসেম্বর শেষ হয়।

এর আগে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ২৮ মার্চ। কিন্তু ২০ মার্চ গণভবনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি বৈঠকে সম্মেলনের তারিখ পিছিয়ে দেয়া হয়। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, ১০ ও ১১ জুলাই সম্মেলনের দিন ঠিক হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সূত্রগুলো বলছে, এর আগে দলের সম্মেলন এক দিনে শেষ হলেও এবার দুই দিন করা হয়েছে তৃণমুলের কথা চিন্তা করেই। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জেলা পর্যায়ের নেতারা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের চিত্র তুলে ধরবেন। এ জন্য সময় বেশি লাগবে বলেই সম্মেলনের সময় দুই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনের পর দ্বিতীয় অধিবেশনে চলবে দলের জেলা পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্য। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা সকল জেলার নেতাদের বক্তব্য শুনবেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শুধুমাত্র বিভাগীয় নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু দলের হাইকমান্ড মনে করে, দলের তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে জেলা পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্যও শোনা প্রয়োজন। তৃণমূলের বক্তব্য থেকেই বেরিয়ে আসবে সময়োপযোগী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি তৃণমূলের সংগঠনের কাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য সেখান থেকেই সঠিক সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা । এ জন্যই সম্মেলনের ব্যাপ্তি বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী পূর্বপশ্চিমকে বলেন, সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন হয়তো আনুষ্ঠানিকতায় শেষ হবে। দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দিবেন। তৃণমূল নেতারা এ সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মাসে। এ জন্য সম্মেলনে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২৩ জুনকে ঘিরে আয়োজন রাখা হবে। দলের আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের সকল শুভাকাঙ্খিকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধে দলটির ভূমিকা তুলে ধরা হবে সম্মেলনে। থাকবে বর্ণিল আলোকসজ্জাও। সম্মেলনের মঞ্চ কেমন হবে তা ঠিক করতে ইতিমধ্যেই একাধিকবার বৈঠক করেছে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটি।

দলের শীর্ষনেতারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের সম্মেলন হবে উৎসবমুখর। কারণ এ দলটি উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন দল। এই দল মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। দেশকে বর্তমানে সমৃ্দ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বৃহত্তর এইসব প্রেক্ষাপট সম্মেলনে তুলে আনা প্রয়োজন, একদিনের সংক্ষিপ্ত পরিসরে যা সম্ভব নয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইসতেহার রুপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ নিয়ে আয়োজন থাকবে। সেই আয়োজনে আওয়ামী লীগ সরকারের সাত বছরের বিভিন্ন অর্জন প্রাধান্য পাবে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সরকারের অর্জনগুলোকে তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে সম্মেলনে রাজধানী ঢাকাকে বর্ণিলভাবেও সাজানো হবে। সম্মেলনের প্রচারে প্রযুক্তির ব্যবহার রাখা হতে পারে। রাজধানীর প্রবেশমুখে তৈরি করা হবে নানা রং-বেরঙের তোরণ।

এ ছাড়া রাজধানীজুড়ে লাগানো হবে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন; যেখানে থাকবে দেশের জন্য প্রধানমন্ত্রীর যত অর্জন। বর্তমান সরকারের সফলতা ও কর্মকাণ্ডসমূহ জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর