হাওর বার্তা ডেস্কঃ দূষণমুক্ত শহর গড়ে তুলে নজির গড়ার ঘোষণা দিয়েছিল সৌদি আরব। সব কিছু ঠিক থাকলে ‘নিওম’ প্রকল্পের অধীনে ২০২৪ সালের মধ্যেই সেই শহর পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে
পরিবেশবান্ধব এই শহরটির নাম রাখা হয়েছে ‘দ্য লাইন’। শহরটির কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সাল থেকে।
উপর থেকে ছবি তুললে মনে হবে যেন কেউ জঙ্গলের মধ্যে একটা লাইন এঁকে দিয়েছেন। এজন্যই শহরটির এমন নাম। ১০৫ মাইল দীর্ঘ এলাকায় গড়ে উঠছে এই শহর। তিনটি স্তর থাকবে শহরটিতে। একেবারে উপরের স্তর মাটির উপরে। সেখানে শুধুমাত্র হাঁটা পথ থাকবে।
পাহাড়-জঙ্গল কেটে তৈরি হচ্ছে এই দীর্ঘ লম্বা শহর, যত সম্ভব প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি কম করার জন্যই তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে শহরটিকে। যাতে কম সংখ্যক গাছ-পাহাড় কাটা যায়।
শহরটিতে চলবে না কোনো গাড়ি! থাকবে না গাড়ি চলাচলের রাস্তাও! সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত হওয়ার নজির গড়ে তুলবে। বিশ্বে প্রথম এমন শহর গড়ে উঠতে চলেছে।
শহরটির নীচের দু’টি স্তর ভূগর্ভস্থ। সেখানে গাড়ি চলাচলের রাস্তা থাকবে। দ্বিতীয় স্তর মূলত পরিকাঠামো পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা থাকবে। তৃতীয় স্তর দিয়ে দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রেন এবং অন্য যানবাহন যাতায়াত করবে। এর ফলে একেবারের উপরের স্তর থাকবে সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত।
এই শহরে ১০ লাখ মানুষ একসঙ্গে বাস করতে পারবেন। শহরের নকশা এমন ভাবে বানানো হবে, যেন হাসপাতাল, স্কুল, রেস্টুরেন্টসহ সব জায়গায় পাঁচ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। এই শহর থেকে আশপাশের অঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপন হবে তৃতীয় স্তরের যাতায়াত ব্যবস্থার মাধ্যমে।
সৌদি আরব এই প্রকল্পে ২০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অন্তত তিন লক্ষ ৮০ হাজার কর্মসংস্থান হবে। ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) ৪৮০০ কোটি ডলার বৃদ্ধি পাবে।
এই পুরো প্রকল্পটিই ‘নিওম’ প্রকল্পের অধীন। সৌদি আরবের তাবুক প্রদেশের দশ হাজার বর্গ মাইল এলাকায় গড়ে উঠছে এই প্রকল্প। ‘নিওম’ শব্দটির অর্থ হল নতুন ভবিষ্যৎ।
ড্রোন ট্যাক্সি, বিনোদনের জন্য জুরাসিক পার্ক (যেখানে ঘুরে বেড়াবে রোবট ডাইনোসর) এর মতো বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকছে।
পুরো শহরকে পর্যবেক্ষণে রাখবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি। রোজকার জীবনে বাসিন্দাদের শহরে থাকতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হলে সেটাও নথিভুক্ত করবে এবং ভবিষ্যতে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে এই প্রযুক্তি।