ঢাকা ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকৃতির সৌন্দর্য নওগাঁয় পাখির দু’টি গ্রাম গাছের ডালে নিরাপদেই থাকতে চায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৫:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১
  • ১৫৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাখির গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর ও গোনা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রাম। প্রতিদিনই গ্রাম দু’টিতে লোকজন আসেন পাখি দেখতে। আবার অনেকেই গ্রামবাসীর অজান্তে পাখি শিকার করছেন। যদি গ্রামের কেউ ঠের পায় তাহলে শিকারিরা দ্রæত কেটে পড়ে।

গ্রাম দু’টির বড় বড় গাছের ডালে পাখির বসে থাকা প্রকৃতির সৌন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েক বছর ধরে বাস করছে শামুকখৈল ও তার একাধিক প্রজাতি এবং বকসহ কয়েকটি প্রজাতির প্রায় কয়েক হাজার পাখি। সারাক্ষণ চলে ওদের ডানা ঝাপটানো ও দল বেধে উড়ে যাওয়া আবার ফিরে গাছের ডালে বসে পড়া।
পাখিগুলো উড়ে যায় খাবার সংগ্রহ করতে। খাবার নিয়ে এসে তুলে দেয় বাচ্চার মুখে। সারাদিন চলে পাখির এমন কর্মযজ্ঞ। সন্ধ্যার একটু আগে থেকে এই অঞ্চলটি মুখরিত হয়ে ওঠে পাখির কল-কাকলিতে। নির্বিঘেœ রাত কাটিয়ে আবার ভোর হলেই খাবারের সন্ধানে উড়ে যায়। দিনশেষে আবারও তারা নীড়ে ফিরে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা আসলাম হোসেন ও বকুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, পাখিগুলো বর্তমানে পরিবারের সদস্যে পরিণত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে গ্রামে প্রবেশের আগেই যদি সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ও সচেতনমূলক কিছু পোস্টার, ব্যানার কিংবা সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে এই অঞ্চলকে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন। তাহলে হয়তো পাখি শিকার বন্ধ হয়ে আগামীতে বিলুপ্ত প্রায় এই প্রজাতির পাখিগুলো এই অঞ্চলেই প্রজনন ও বংশবিস্তার করতে পারতো।
দর্শনার্থী কাজী কামাল হোসেন, শাহরুখ হোসেন বলেন, লোকমুখে শুনে পাখিগুলো দেখতে এসেছি। হাজার পাখির সমাবেশ খুব সুন্দর লেগেছে। কিন্তু পাখির নিরাপত্তার জন্য সরকারি ভাবে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সঠিক পদক্ষেপ নিলে হয়তো একদিন এই হাজার হাজার পাখি জাতীয় সম্পদে পরিণত হতে পারে।
উপজেলা প্রকৃতি ও পাখি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও গণমাধ্যমকর্মী এস. এম সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিগুলোর টিকে থাকা অনেক জরুরি। কিন্তু আমরা অনেকেই নির্বিচারে বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিগুলো শিকার করছি যা আইনের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ। এক্ষেত্রে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, আমি নিজে ওই পাখির অঞ্চল পরিদর্শন করবো। এছাড়া পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। শুধু সরকার নয়, পাশাপাশি সবারই প্রকৃতির এই সম্পদ রক্ষা করতে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, হাজার হাজার পাখির নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করা জরুরি। পাখিগুলো যদি নিরাপত্তা ও আর মানুষের ভালোবাসা পায় তাহলে গ্রাম দু’টিতে তাদের বসবাস ও বংশবিস্তার হতে পারে এমনটাই আশা সচেতন মহলের।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

প্রকৃতির সৌন্দর্য নওগাঁয় পাখির দু’টি গ্রাম গাছের ডালে নিরাপদেই থাকতে চায়

আপডেট টাইম : ১০:০৫:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাখির গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর ও গোনা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রাম। প্রতিদিনই গ্রাম দু’টিতে লোকজন আসেন পাখি দেখতে। আবার অনেকেই গ্রামবাসীর অজান্তে পাখি শিকার করছেন। যদি গ্রামের কেউ ঠের পায় তাহলে শিকারিরা দ্রæত কেটে পড়ে।

গ্রাম দু’টির বড় বড় গাছের ডালে পাখির বসে থাকা প্রকৃতির সৌন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েক বছর ধরে বাস করছে শামুকখৈল ও তার একাধিক প্রজাতি এবং বকসহ কয়েকটি প্রজাতির প্রায় কয়েক হাজার পাখি। সারাক্ষণ চলে ওদের ডানা ঝাপটানো ও দল বেধে উড়ে যাওয়া আবার ফিরে গাছের ডালে বসে পড়া।
পাখিগুলো উড়ে যায় খাবার সংগ্রহ করতে। খাবার নিয়ে এসে তুলে দেয় বাচ্চার মুখে। সারাদিন চলে পাখির এমন কর্মযজ্ঞ। সন্ধ্যার একটু আগে থেকে এই অঞ্চলটি মুখরিত হয়ে ওঠে পাখির কল-কাকলিতে। নির্বিঘেœ রাত কাটিয়ে আবার ভোর হলেই খাবারের সন্ধানে উড়ে যায়। দিনশেষে আবারও তারা নীড়ে ফিরে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা আসলাম হোসেন ও বকুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, পাখিগুলো বর্তমানে পরিবারের সদস্যে পরিণত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে গ্রামে প্রবেশের আগেই যদি সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ও সচেতনমূলক কিছু পোস্টার, ব্যানার কিংবা সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে এই অঞ্চলকে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন। তাহলে হয়তো পাখি শিকার বন্ধ হয়ে আগামীতে বিলুপ্ত প্রায় এই প্রজাতির পাখিগুলো এই অঞ্চলেই প্রজনন ও বংশবিস্তার করতে পারতো।
দর্শনার্থী কাজী কামাল হোসেন, শাহরুখ হোসেন বলেন, লোকমুখে শুনে পাখিগুলো দেখতে এসেছি। হাজার পাখির সমাবেশ খুব সুন্দর লেগেছে। কিন্তু পাখির নিরাপত্তার জন্য সরকারি ভাবে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সঠিক পদক্ষেপ নিলে হয়তো একদিন এই হাজার হাজার পাখি জাতীয় সম্পদে পরিণত হতে পারে।
উপজেলা প্রকৃতি ও পাখি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও গণমাধ্যমকর্মী এস. এম সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিগুলোর টিকে থাকা অনেক জরুরি। কিন্তু আমরা অনেকেই নির্বিচারে বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিগুলো শিকার করছি যা আইনের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ। এক্ষেত্রে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, আমি নিজে ওই পাখির অঞ্চল পরিদর্শন করবো। এছাড়া পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। শুধু সরকার নয়, পাশাপাশি সবারই প্রকৃতির এই সম্পদ রক্ষা করতে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, হাজার হাজার পাখির নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করা জরুরি। পাখিগুলো যদি নিরাপত্তা ও আর মানুষের ভালোবাসা পায় তাহলে গ্রাম দু’টিতে তাদের বসবাস ও বংশবিস্তার হতে পারে এমনটাই আশা সচেতন মহলের।