ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ইটনায় জাতীয় পরিচয়পত্র পরিষেবা স্থানান্তর ও কূট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ইটনায় এ প্লাস ক্যাম্পেইন অবহিত করন সভা অনুষ্ঠিত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে যেসব শর্ত দিলেন পুতিন রান্না শেখাচ্ছেন পড়শী, ঈদে দেখা যাবে অভিনয় আর গানে শিমের রাজ্য সীতাকুণ্ড ২১০ কোটি টাকার শিম উৎপাদন, কৃষকের হাসি জাতিসংঘ, মহাসচিব, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি অবশেষে মায়ের কোলে ফিরল সায়ান হরেদরে সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করতে হবে: মাহফুজ আলম পেঁয়াজের দাম না পেয়ে লোকসানের শঙ্কায় পাবনার চাষিরা পাচারকালে নারী শিশুসহ ১৮ রোহিঙ্গা উদ্ধার, দালাল আটক

ভেলকা-এলসি নামে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১০:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১
  • ১৪৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ভেলকা (৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম) ও এলসি (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) নামে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্ডার করলেই নির্দিষ্ট স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাছ।

এছাড়া ধান ক্ষেতের আড়ালে আর ছোট ছোট খালে নৌকায় করে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। দ্রুত পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে মোটরসাইকেল।

এক শ্রেণির অসাধু চক্র তেঁতুলিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

অভিযোগে জানা যায়, ইলিশ রক্ষার জন্য গঠিত স্থানীয় কমিটির অসাধু লোকজন, অভিযানে নিয়োজিত ট্রলার শ্রমিকদের যোগসাজসে দিনে রাতে অবাধে শিকার করা হচ্ছে মা ইলিশ।

অভিযোগ উঠেছে অভিযান পরিচালনার সময় মাঝনদীতে ট্রলারে বসেই ইলিশ ফ্রাই করে খাওয়ার। এছাড়া মোবাইল ফোনে খোঁজ-খবর রেখে নদী পাড়ের ধান ক্ষেতের পাশে আড়ালে মাছ চলে কেনাবেচা।

ইলিশ শিকারের দায়ে সাজা এড়াতে ও মুচলেকার মতো সহজ শর্তে মুক্তি পেতে অনেকে আবার কৌশল হিসেবে শিশু-কিশোরদেরও ব্যবহার করছেন শিকারের কাজে। সম্প্রতি নৌ পুলিশের অভিযানে আটক ২১ জেলের মধ্যে ১১ জনই কিশোর হওয়ায় মুচলেকার মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

ধুলিয়া ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া নদী তীরবর্তী দুলাল হোসেন, নাসির উদ্দিন, রেজাউল করিম ও জামাল হোসেন বলেন, ছোট বড় ইলিশ ধরা পড়ছে তেঁতুলিয়ায়। বেপরোয়া শিকারিরা সুযোগমতো জালও ফেলছে নদীতে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতেও অভিযান পরিচালনার সময় প্রশাসনের বিশ্রামের সুযোগ বুঝে জেলেরা নদীতে শিকার করছে ইলিশ। সাইজে ছোট বড় হলেও শিকার করা অধিকাংশ মাছের পেটেই রয়েছে ডিম।

তারা বলেন, নদী তীরবর্তী বাউফলের নিমদী, ধানদী, ছয়হিস্যা, ডালিমা, চরওয়াডেল, চরব্যারেট, চরমিয়াজান, চরফেডারেশন, তালতলী, রায়সাহেবের চর, বগীবাজার, মমিনপুর, ধুলিয়া, বাদামতলী এলাকায় চরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট খালে, ঝোঁপে-ঝাড়ে, ধানক্ষেতে, রাস্তার পাশে ও বাসা বাড়িতে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। এসব মাছ ভেলকা ও এলসি নামে বিক্রি হচ্ছে।

বাউফলে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন সেভ দি বার্ড অ্যান্ড বি’র পরিচালক শামসুন নাহার বলেন, একটি মা ইলিশ ১০ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়ে। এত পোনা বড় হয়ে কোথায় হারিয়ে যায়? বেড়, বাঁধা, কারেন্টসহ নিষিদ্ধ সব জাল দিয়ে সারা বছর অবাধে মাছের রেনু ধ্বংস করায় তেঁতুলিয়ায় ইলিশসহ সব মাছের উৎপাদন কমেছে। আর প্রজনন মৌসুমে কতিপয় লোভী জেলে, দালাল, মৎস্য ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী মহলের দাপট আর প্রশাসনের ঢিলেঢালা অভিযানের ফলে মা ইলিশ শিকার হচ্ছে অবাধে।

বাউফল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এখন পর্যন্ত ২৬ জনকে নৌকা, জাল ও ইলিশসহ আটক করা হয়েছে। অব্যাহত রয়েছে অভিযান। ইলিশ বেচাকেনা, মোটরসাইকেলে পরিবহনের দৃশ্য আমার চোখে পড়েনি। নদীতে ট্রলারে বসে ইলিশ ফ্রাইয়ের বিষয় কিংবা টাকার লেনদেনে কাউকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টিও আমার জানা নেই। জেলেরা নদীতে মাছ ধরবে, ইলিশ রক্ষা করবে এমন মনোভাব তৈরিতে সবার এগিয়ে আসা উচিত।

প্রসঙ্গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে ইলিশ মাছ আহরণ,পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ইলিশের অন্যতম প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইটনায় জাতীয় পরিচয়পত্র পরিষেবা স্থানান্তর ও কূট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ভেলকা-এলসি নামে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ

আপডেট টাইম : ১০:১০:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ভেলকা (৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম) ও এলসি (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) নামে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্ডার করলেই নির্দিষ্ট স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাছ।

এছাড়া ধান ক্ষেতের আড়ালে আর ছোট ছোট খালে নৌকায় করে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। দ্রুত পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে মোটরসাইকেল।

এক শ্রেণির অসাধু চক্র তেঁতুলিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

অভিযোগে জানা যায়, ইলিশ রক্ষার জন্য গঠিত স্থানীয় কমিটির অসাধু লোকজন, অভিযানে নিয়োজিত ট্রলার শ্রমিকদের যোগসাজসে দিনে রাতে অবাধে শিকার করা হচ্ছে মা ইলিশ।

অভিযোগ উঠেছে অভিযান পরিচালনার সময় মাঝনদীতে ট্রলারে বসেই ইলিশ ফ্রাই করে খাওয়ার। এছাড়া মোবাইল ফোনে খোঁজ-খবর রেখে নদী পাড়ের ধান ক্ষেতের পাশে আড়ালে মাছ চলে কেনাবেচা।

ইলিশ শিকারের দায়ে সাজা এড়াতে ও মুচলেকার মতো সহজ শর্তে মুক্তি পেতে অনেকে আবার কৌশল হিসেবে শিশু-কিশোরদেরও ব্যবহার করছেন শিকারের কাজে। সম্প্রতি নৌ পুলিশের অভিযানে আটক ২১ জেলের মধ্যে ১১ জনই কিশোর হওয়ায় মুচলেকার মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

ধুলিয়া ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া নদী তীরবর্তী দুলাল হোসেন, নাসির উদ্দিন, রেজাউল করিম ও জামাল হোসেন বলেন, ছোট বড় ইলিশ ধরা পড়ছে তেঁতুলিয়ায়। বেপরোয়া শিকারিরা সুযোগমতো জালও ফেলছে নদীতে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতেও অভিযান পরিচালনার সময় প্রশাসনের বিশ্রামের সুযোগ বুঝে জেলেরা নদীতে শিকার করছে ইলিশ। সাইজে ছোট বড় হলেও শিকার করা অধিকাংশ মাছের পেটেই রয়েছে ডিম।

তারা বলেন, নদী তীরবর্তী বাউফলের নিমদী, ধানদী, ছয়হিস্যা, ডালিমা, চরওয়াডেল, চরব্যারেট, চরমিয়াজান, চরফেডারেশন, তালতলী, রায়সাহেবের চর, বগীবাজার, মমিনপুর, ধুলিয়া, বাদামতলী এলাকায় চরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট খালে, ঝোঁপে-ঝাড়ে, ধানক্ষেতে, রাস্তার পাশে ও বাসা বাড়িতে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। এসব মাছ ভেলকা ও এলসি নামে বিক্রি হচ্ছে।

বাউফলে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন সেভ দি বার্ড অ্যান্ড বি’র পরিচালক শামসুন নাহার বলেন, একটি মা ইলিশ ১০ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়ে। এত পোনা বড় হয়ে কোথায় হারিয়ে যায়? বেড়, বাঁধা, কারেন্টসহ নিষিদ্ধ সব জাল দিয়ে সারা বছর অবাধে মাছের রেনু ধ্বংস করায় তেঁতুলিয়ায় ইলিশসহ সব মাছের উৎপাদন কমেছে। আর প্রজনন মৌসুমে কতিপয় লোভী জেলে, দালাল, মৎস্য ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী মহলের দাপট আর প্রশাসনের ঢিলেঢালা অভিযানের ফলে মা ইলিশ শিকার হচ্ছে অবাধে।

বাউফল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এখন পর্যন্ত ২৬ জনকে নৌকা, জাল ও ইলিশসহ আটক করা হয়েছে। অব্যাহত রয়েছে অভিযান। ইলিশ বেচাকেনা, মোটরসাইকেলে পরিবহনের দৃশ্য আমার চোখে পড়েনি। নদীতে ট্রলারে বসে ইলিশ ফ্রাইয়ের বিষয় কিংবা টাকার লেনদেনে কাউকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টিও আমার জানা নেই। জেলেরা নদীতে মাছ ধরবে, ইলিশ রক্ষা করবে এমন মনোভাব তৈরিতে সবার এগিয়ে আসা উচিত।

প্রসঙ্গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে ইলিশ মাছ আহরণ,পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ইলিশের অন্যতম প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা।