ঢাকা ০৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ দুর্যোগ প্রশমন দিবস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫১:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১
  • ১৫৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ ১৩ অক্টোবর, বিশ্ব দুর্যোগ প্রশমন দিবস। দুর্যোগের কারণে প্রতিবছর সারা বিশ্বে জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করার কোনো উপায় এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এ বিষয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে সীমিত রাখা সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা কারণে বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে।

ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে- ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে, কাজ করি একসঙ্গে’। এ প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে একসঙ্গে ও সমন্বিতভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

এ বছর বৈশ্বিক পরিসরে তিনটি উন্নয়ন পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত কাঠামো পাশাপাশি চলছে। এগুলো হচ্ছে দুর্যোগ সম্পর্কিত সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা (এসডিজি) এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চুড়ান্ত সংলাপ। তিনটি কাঠামোতেই সমস্যা অনুধাবন, শনাক্তকরণ এবং এদের সমাধানকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ উপরোক্ত তিনটি বৈশ্বিক কাঠামোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অগ্রাধিকার প্রাপ্ত দেশ হিসেবে প্রয়োজনীয় সংলাপ ও আলোচনায় কার্যকর অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন দুর্যোগ ঝুঁকির ক্ষয়ক্ষতি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচন করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জনের রূপরেখা তৈরিতে ভূমিকা রেখে চলেছে।

জ্ঞান একটি ব্যবহার উপযোগী বিষয়, আর প্রয়োজনীয় তথ্য ও দক্ষতা  শিক্ষা গ্রহণ বা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত হয়। এগুলো তিনভাবে এসে থাকে, যথা- অনুধাবন, আবিষ্কার বা উদভাবন এবং অভিজ্ঞতা। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত জ্ঞান আলাদা হলেও এগুলো আমাদের জীবন যাপনকে ব্যাপকভাবে দারুনভাবে প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহার অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সে কারণেই এ বিষয়টিকে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে সেন্দাই ফ্রেমওর্য়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব  দেয়া হয়েছে, যা এতদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ফ্রেমওয়ার্কের ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য।

দুর্যোগ হচ্ছে, একটি সম্ভাব্য ঘটনা বা ঘটনার বাস্তবতা। দুর্যোগের দ্বারা ক্ষয়ক্ষতি ও এর সম্ভাব্য নেতিবাচক ফলাফল কমিয়ে আনার জন্য আমাদের আগাম সতর্ক বার্তা দুর্যোগে প্রস্তুতি নিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। আমরা জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দুর্যোগে যত ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবো, ততো ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো। দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে পারি।

সে কারণে বিশ্ব উন্নয়ন প্রতিবেদন ১৯৯৮/১৯৯৯ এ টেকসই সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জ্ঞানকে পুঁজির চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এবারের আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের লোকায়ত জ্ঞানকে কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে। লোকায়ত জ্ঞান হাজার বছরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত। এটি স্থানীয় পরিবেশ প্রক্রিয়ার একটি অপরিহার্য অংশ। তাই পরিবেশ প্রক্রিয়া ধংস বিভিন্ন দুর্যোগের একটি বড় কারণ। কিন্তু লোকায়ত জ্ঞান পরিবেশ প্রক্রিয়াকে  সংরক্ষণ এবং বিকাশে সহায়তা করে থাকে, যা দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে ব্যপক ভূমিকা রাখে। কখনো কখনো লোকায়ত জ্ঞানকে ‘জন বিজ্ঞান’ বা ‘সামাজিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এ লোকায়ত জ্ঞান দরিদ্র বা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সম্পদ, যা তাদের জীবনযুদ্ধ বা বেঁচে থাকার সংগ্রামে বিনিয়োগ করে খাদ্য যোগান, আশ্রয় ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে থাকে। আমাদের জ্ঞান অর্জনের প্রচেষ্টা মূলত বেঁচে থাকা ও উন্নত জীবন যাপনের উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকে। আমরা বেঁচে থাকার জন্য আমাদের চারপাশ বিশেষ করে প্রতিবেশ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে থাকি। বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞানের বিকাশের বহু পূর্ব থেকেই এ ধারা চলে আসছে। লোকায়ত জ্ঞানের কিছু বিশেষ দিক আছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে –

যুগবাহিত এবং সঞ্চিত।
অনুকরণ ও ধারাবাহিক অনুশীলনের মাধ্যমে প্রসার।
এটা তত্ত্বীয়ের বিপরীতে ব্যবহারিক বিষয়।
প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল কিন্তু কার্যকর
লোকায়িত জ্ঞান ব্যপক ভিত্তিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এটা সব সময় শতভাগ সঠিক নাও হতে পারে; প্রয়োজনে পরীক্ষণের মাধ্যমে গ্রহণ বর্জন হতে পারে।
এটি বিশ্লেষণ ধর্মী নয়, বরং বেশী প্রায়োগিক।

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হয়েও আমরা এর নেতিবাচক প্রভাবের শিকার। জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা কমিয়ে আনতে বৈশ্বিক আলোচনা চলমান আছে। কার্বন নিংসরণের মাত্রা কমিয়ে আনতে মতৈক্য হলেও আমাদের এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন, ঝুঁকিহ্রাস, প্রস্তুতি ও সাড়াদানের কাজ করে যেতে হবে। এছাড়া জলবায়ুর পরিবর্তনের শিকার গ্রামীণ বা শহরের জনগণকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

আন্তর্জাতিক কাঠামোর সাথে মিল রেখে আমাদের নতুন নতুন ঝুঁকি সম্পর্কে আরো ভালো ভাবে জানতে হবে। সেই সাথে বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকিহ্রাস বিষয়ে আমাদের জ্ঞান ও দক্ষতার পরিধি আরো বাড়াতে হবে। দুর্যোগের মাত্রা ও ব্যপকতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলোকে মোকাবেলার জন্য দরকার আধুনিক ও লোকায়ত ও জ্ঞানের সমাবেশ ও এর যথাযথ ব্যবহার। আলোচিত দুই ধরনের জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের জন্য এদের মধ্যে আদান প্রদান বাড়াতে হবে; যার মাধ্যমে ব্যয় সাশ্রয়ী, কম ক্ষতিকর, মূল্যবোধগতভাবে গ্রহণীয় ও টেকসই দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রনয়ণ করা সম্ভব হবে। জ্ঞানের আদান প্রদান একটি দ্বিমুখী মহাসড়ক। আমাদের ঐতিহ্যগত বা লোকায়ত জ্ঞান ও আধুনিক জ্ঞানের মধ্যে যথাযথ মেলবন্ধন করা মানবজাতির অগ্রগতির স্বার্থেই প্রয়োজন।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় আমাদের হাজার বছরের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও অনুশীলনের একটি ঐশ্বর্যমণ্ডিত ভাণ্ডার রয়েছে। সাংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যগতভাবে গ্রহণযোগ্য কোন এলাকার জ্ঞান ভাণ্ডার দেশের অন্য এলাকা, এমনকি পৃথিবীর অন্য কোন দেশেও ব্যবহৃত হতে পারে। আমাদের লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহারের ক্ষেত্র বেশ ব্যাপক; এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে –
কৃষি
বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় ব্যবস্থাপনা
মাটির উর্বরতা ব্যবস্থাপনা
আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (উঁচুতে বাড়িঘর, স্থানীয় পদ্ধতিতে নৌকা তৈরি)।
ভেষজ ও ঔষধী বৃক্ষ
স্বেচ্ছাসেবা ও সামাজিক সংহতি স্থাপন
নানা সামাজিকতা ও আচার-আনুষ্ঠান।
স্থানীয় পদ্ধতিতে পানি ও খাদ্য সংরক্ষণ।
দুর্যোগের আগাম বার্তা প্রদান ইত্যাদি।

বাংলাদেশে আবহাওয়া, জলবায়ু এবং কৃষি বিষয়ে লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহার বিভিন্ন পুস্তুক ও প্রকাশনায় লিপিবদ্ধ আছে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খনার বচন (আদিকালের একজন মহিয়ষী জ্ঞানী নারীর বিভিন্ন বচন), লোক সংগীত ইত্যাদি। লোকায়ত জ্ঞান ব্যবহারের কতিপয় উদাহরণ হচ্ছে জলাবদ্ধ জায়গায় ভাসমান পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষ ও বীজ তলা তৈরি (ধাপ বা বারিদ), বাঁশের বানা ও ঘাস দিয়ে মাটির বাধ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে মিল রেখে চাষাবাদের সময় পরিবর্তন, দুর্যোগ সহনশীল জাতের ধান চাষাবাদ (হরিধান ও অন্যান্য স্থানীয় জাতের  ধান)।

আমরা শুধু দুর্যোগ ঘটনার সংখ্যা ও তীব্রতায় ভুগছি না বরং এর প্রভাব বিশ্বব্যপী বিস্তৃত এবং এর ব্যপকতাও বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, এ অবস্থাকে আরো নাজুক করে তুলছে। দুর্যোগ এখন শুধু উন্নয়নশীল দেশের বিষয় নয়, উপরন্তু এটি এখন বৈশ্বিক ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আমাদের লোকায়ত জ্ঞান ও দক্ষতা যা আছে তা কার্যকরভাবে নিয়োজিত করতে হবে। আমাদের ভোগবাদিতার প্রবণতা উৎপাদন কার্যক্রম ও শক্তিমান জাতি হওয়ার প্রতিযোগিতা ইতিমধ্যে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবেলার চ্যালেঞ্জকে জটিল করে তুলেছে। এসবের মোকাবেলায় আধুনিক ও পাশ্চাত্য জ্ঞান বিদ্যমান থাকলেও এগুলোর কোনটাই বর্তমান চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে যথেষ্ট নয়।

লোকায়ত জ্ঞানকে এখন বৈশ্বিক জ্ঞানের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে এগুলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে। আমাদের বর্তমান উন্নয়নের পদ্ধতি, উদ্যোগ ও কার্যক্রম গুণগতভাবে উন্নত জ়ীবন যাপনে ভূমিকা রাখতে সাময়িকভাবে সক্ষম হতে পারে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের বর্তমান ও ভবিষৎত প্রজন্মের জন্য বহুমুখি অনতিক্রম্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমাদের সমগ্র মানব সমাজের কল্যাণে টেকসই সমাধান বের করতে হবে। এক্ষেত্রে লোকায়ত জ্ঞান এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

লোকায়ত জ্ঞানও বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে; যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- উন্নয়ন অগ্রাধিকার ও পদ্ধতি, অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থাপনা, শাসন ব্যবস্থার রকমফের, উপনিবেশিক শাসনের উত্তরাধিকার, বাহিরের অপরিক্ষীত উপদেশ এবং সবশেষে বু্দ্ধি বৃত্তিক সম্পদের অধিকার। লোকায়ত জ্ঞানও সীমাবদ্ধতার উর্দ্ধে নয়। কিছু কিছু সাংস্কৃতিক অনুশীলন, নিয়মকানুন, অভ্যাস অনেক সময় বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। যেমন- আফ্রিকায় ইবোলা ও এইডস এবং বাংলাদেশের মাতৃমৃত্যুতে স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুকরণ ও অনুশীলন অনেক সময় বিভ্রান্তি ছড়ায়।

সবশেষে, এটি নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, আমাদের জান-মাল রক্ষার্থে লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহার ও এর ভবিষৎত সম্ভাবনা ব্যপক। আমাদের আর যা করতে হবে সেগুলি হচ্ছে –
ব্যবহারযোগ্য ঐতিহ্যগত ও স্থানীয় জ্ঞানের অনুসন্ধান ও চিহ্নিতকরণ।
লোকায়ত জ্ঞানের লিপিবদ্ধকরণ ও এর সংরক্ষণ (যেটি আমাদের সবচেয়ে দুর্বল দিক)।
বিভিন্ন মাধ্যমে লোকায়ত জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেয়া এবং জনগণকে তাদের জীবন জীবিকা রক্ষায় তা ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ করা।
আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় লোকায়ত জ্ঞানকে মূল স্রোতধারায় অন্তর্ভুক্তকরণ।
দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজে লোকায়ত জ্ঞানের অনুশীলনের মাধ্যমে জীবনকে অর্থবহ করে তোলা।

আমরা হয়তো অর্থনৈতিক মানদণ্ডে তুলনামূলকভাবে দরিদ্র, কিন্তু আমাদের যুগবাহিত সংযোজিত জ্ঞান, অনুশীলন এবং আমাদের জীবন দক্ষতা অনেক উন্নত দেশ থেকে সমৃদ্ধ, বৈচিত্রময় ও প্রাচুর্যপূর্ণ। দুর্যোগ সহনশীল বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের অবশ্যই লোকায়ত জ্ঞানের সংরক্ষণ এবং সেই সঙ্গে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা দিতে হবে। এগুলোকে আমাদের সম্পদ হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আজ দুর্যোগ প্রশমন দিবস

আপডেট টাইম : ১০:৫১:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ ১৩ অক্টোবর, বিশ্ব দুর্যোগ প্রশমন দিবস। দুর্যোগের কারণে প্রতিবছর সারা বিশ্বে জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করার কোনো উপায় এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এ বিষয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে সীমিত রাখা সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা কারণে বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে।

ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে- ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে, কাজ করি একসঙ্গে’। এ প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে একসঙ্গে ও সমন্বিতভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

এ বছর বৈশ্বিক পরিসরে তিনটি উন্নয়ন পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত কাঠামো পাশাপাশি চলছে। এগুলো হচ্ছে দুর্যোগ সম্পর্কিত সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা (এসডিজি) এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চুড়ান্ত সংলাপ। তিনটি কাঠামোতেই সমস্যা অনুধাবন, শনাক্তকরণ এবং এদের সমাধানকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ উপরোক্ত তিনটি বৈশ্বিক কাঠামোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অগ্রাধিকার প্রাপ্ত দেশ হিসেবে প্রয়োজনীয় সংলাপ ও আলোচনায় কার্যকর অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন দুর্যোগ ঝুঁকির ক্ষয়ক্ষতি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচন করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জনের রূপরেখা তৈরিতে ভূমিকা রেখে চলেছে।

জ্ঞান একটি ব্যবহার উপযোগী বিষয়, আর প্রয়োজনীয় তথ্য ও দক্ষতা  শিক্ষা গ্রহণ বা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত হয়। এগুলো তিনভাবে এসে থাকে, যথা- অনুধাবন, আবিষ্কার বা উদভাবন এবং অভিজ্ঞতা। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত জ্ঞান আলাদা হলেও এগুলো আমাদের জীবন যাপনকে ব্যাপকভাবে দারুনভাবে প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহার অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সে কারণেই এ বিষয়টিকে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে সেন্দাই ফ্রেমওর্য়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব  দেয়া হয়েছে, যা এতদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ফ্রেমওয়ার্কের ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য।

দুর্যোগ হচ্ছে, একটি সম্ভাব্য ঘটনা বা ঘটনার বাস্তবতা। দুর্যোগের দ্বারা ক্ষয়ক্ষতি ও এর সম্ভাব্য নেতিবাচক ফলাফল কমিয়ে আনার জন্য আমাদের আগাম সতর্ক বার্তা দুর্যোগে প্রস্তুতি নিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। আমরা জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দুর্যোগে যত ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবো, ততো ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো। দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে পারি।

সে কারণে বিশ্ব উন্নয়ন প্রতিবেদন ১৯৯৮/১৯৯৯ এ টেকসই সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জ্ঞানকে পুঁজির চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এবারের আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের লোকায়ত জ্ঞানকে কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে। লোকায়ত জ্ঞান হাজার বছরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত। এটি স্থানীয় পরিবেশ প্রক্রিয়ার একটি অপরিহার্য অংশ। তাই পরিবেশ প্রক্রিয়া ধংস বিভিন্ন দুর্যোগের একটি বড় কারণ। কিন্তু লোকায়ত জ্ঞান পরিবেশ প্রক্রিয়াকে  সংরক্ষণ এবং বিকাশে সহায়তা করে থাকে, যা দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে ব্যপক ভূমিকা রাখে। কখনো কখনো লোকায়ত জ্ঞানকে ‘জন বিজ্ঞান’ বা ‘সামাজিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এ লোকায়ত জ্ঞান দরিদ্র বা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সম্পদ, যা তাদের জীবনযুদ্ধ বা বেঁচে থাকার সংগ্রামে বিনিয়োগ করে খাদ্য যোগান, আশ্রয় ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে থাকে। আমাদের জ্ঞান অর্জনের প্রচেষ্টা মূলত বেঁচে থাকা ও উন্নত জীবন যাপনের উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকে। আমরা বেঁচে থাকার জন্য আমাদের চারপাশ বিশেষ করে প্রতিবেশ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে থাকি। বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞানের বিকাশের বহু পূর্ব থেকেই এ ধারা চলে আসছে। লোকায়ত জ্ঞানের কিছু বিশেষ দিক আছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে –

যুগবাহিত এবং সঞ্চিত।
অনুকরণ ও ধারাবাহিক অনুশীলনের মাধ্যমে প্রসার।
এটা তত্ত্বীয়ের বিপরীতে ব্যবহারিক বিষয়।
প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল কিন্তু কার্যকর
লোকায়িত জ্ঞান ব্যপক ভিত্তিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এটা সব সময় শতভাগ সঠিক নাও হতে পারে; প্রয়োজনে পরীক্ষণের মাধ্যমে গ্রহণ বর্জন হতে পারে।
এটি বিশ্লেষণ ধর্মী নয়, বরং বেশী প্রায়োগিক।

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হয়েও আমরা এর নেতিবাচক প্রভাবের শিকার। জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা কমিয়ে আনতে বৈশ্বিক আলোচনা চলমান আছে। কার্বন নিংসরণের মাত্রা কমিয়ে আনতে মতৈক্য হলেও আমাদের এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন, ঝুঁকিহ্রাস, প্রস্তুতি ও সাড়াদানের কাজ করে যেতে হবে। এছাড়া জলবায়ুর পরিবর্তনের শিকার গ্রামীণ বা শহরের জনগণকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

আন্তর্জাতিক কাঠামোর সাথে মিল রেখে আমাদের নতুন নতুন ঝুঁকি সম্পর্কে আরো ভালো ভাবে জানতে হবে। সেই সাথে বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকিহ্রাস বিষয়ে আমাদের জ্ঞান ও দক্ষতার পরিধি আরো বাড়াতে হবে। দুর্যোগের মাত্রা ও ব্যপকতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলোকে মোকাবেলার জন্য দরকার আধুনিক ও লোকায়ত ও জ্ঞানের সমাবেশ ও এর যথাযথ ব্যবহার। আলোচিত দুই ধরনের জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের জন্য এদের মধ্যে আদান প্রদান বাড়াতে হবে; যার মাধ্যমে ব্যয় সাশ্রয়ী, কম ক্ষতিকর, মূল্যবোধগতভাবে গ্রহণীয় ও টেকসই দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রনয়ণ করা সম্ভব হবে। জ্ঞানের আদান প্রদান একটি দ্বিমুখী মহাসড়ক। আমাদের ঐতিহ্যগত বা লোকায়ত জ্ঞান ও আধুনিক জ্ঞানের মধ্যে যথাযথ মেলবন্ধন করা মানবজাতির অগ্রগতির স্বার্থেই প্রয়োজন।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় আমাদের হাজার বছরের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও অনুশীলনের একটি ঐশ্বর্যমণ্ডিত ভাণ্ডার রয়েছে। সাংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যগতভাবে গ্রহণযোগ্য কোন এলাকার জ্ঞান ভাণ্ডার দেশের অন্য এলাকা, এমনকি পৃথিবীর অন্য কোন দেশেও ব্যবহৃত হতে পারে। আমাদের লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহারের ক্ষেত্র বেশ ব্যাপক; এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে –
কৃষি
বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় ব্যবস্থাপনা
মাটির উর্বরতা ব্যবস্থাপনা
আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (উঁচুতে বাড়িঘর, স্থানীয় পদ্ধতিতে নৌকা তৈরি)।
ভেষজ ও ঔষধী বৃক্ষ
স্বেচ্ছাসেবা ও সামাজিক সংহতি স্থাপন
নানা সামাজিকতা ও আচার-আনুষ্ঠান।
স্থানীয় পদ্ধতিতে পানি ও খাদ্য সংরক্ষণ।
দুর্যোগের আগাম বার্তা প্রদান ইত্যাদি।

বাংলাদেশে আবহাওয়া, জলবায়ু এবং কৃষি বিষয়ে লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহার বিভিন্ন পুস্তুক ও প্রকাশনায় লিপিবদ্ধ আছে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খনার বচন (আদিকালের একজন মহিয়ষী জ্ঞানী নারীর বিভিন্ন বচন), লোক সংগীত ইত্যাদি। লোকায়ত জ্ঞান ব্যবহারের কতিপয় উদাহরণ হচ্ছে জলাবদ্ধ জায়গায় ভাসমান পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষ ও বীজ তলা তৈরি (ধাপ বা বারিদ), বাঁশের বানা ও ঘাস দিয়ে মাটির বাধ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে মিল রেখে চাষাবাদের সময় পরিবর্তন, দুর্যোগ সহনশীল জাতের ধান চাষাবাদ (হরিধান ও অন্যান্য স্থানীয় জাতের  ধান)।

আমরা শুধু দুর্যোগ ঘটনার সংখ্যা ও তীব্রতায় ভুগছি না বরং এর প্রভাব বিশ্বব্যপী বিস্তৃত এবং এর ব্যপকতাও বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, এ অবস্থাকে আরো নাজুক করে তুলছে। দুর্যোগ এখন শুধু উন্নয়নশীল দেশের বিষয় নয়, উপরন্তু এটি এখন বৈশ্বিক ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আমাদের লোকায়ত জ্ঞান ও দক্ষতা যা আছে তা কার্যকরভাবে নিয়োজিত করতে হবে। আমাদের ভোগবাদিতার প্রবণতা উৎপাদন কার্যক্রম ও শক্তিমান জাতি হওয়ার প্রতিযোগিতা ইতিমধ্যে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবেলার চ্যালেঞ্জকে জটিল করে তুলেছে। এসবের মোকাবেলায় আধুনিক ও পাশ্চাত্য জ্ঞান বিদ্যমান থাকলেও এগুলোর কোনটাই বর্তমান চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে যথেষ্ট নয়।

লোকায়ত জ্ঞানকে এখন বৈশ্বিক জ্ঞানের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে এগুলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে। আমাদের বর্তমান উন্নয়নের পদ্ধতি, উদ্যোগ ও কার্যক্রম গুণগতভাবে উন্নত জ়ীবন যাপনে ভূমিকা রাখতে সাময়িকভাবে সক্ষম হতে পারে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের বর্তমান ও ভবিষৎত প্রজন্মের জন্য বহুমুখি অনতিক্রম্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমাদের সমগ্র মানব সমাজের কল্যাণে টেকসই সমাধান বের করতে হবে। এক্ষেত্রে লোকায়ত জ্ঞান এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

লোকায়ত জ্ঞানও বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে; যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- উন্নয়ন অগ্রাধিকার ও পদ্ধতি, অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থাপনা, শাসন ব্যবস্থার রকমফের, উপনিবেশিক শাসনের উত্তরাধিকার, বাহিরের অপরিক্ষীত উপদেশ এবং সবশেষে বু্দ্ধি বৃত্তিক সম্পদের অধিকার। লোকায়ত জ্ঞানও সীমাবদ্ধতার উর্দ্ধে নয়। কিছু কিছু সাংস্কৃতিক অনুশীলন, নিয়মকানুন, অভ্যাস অনেক সময় বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। যেমন- আফ্রিকায় ইবোলা ও এইডস এবং বাংলাদেশের মাতৃমৃত্যুতে স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুকরণ ও অনুশীলন অনেক সময় বিভ্রান্তি ছড়ায়।

সবশেষে, এটি নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, আমাদের জান-মাল রক্ষার্থে লোকায়ত জ্ঞানের ব্যবহার ও এর ভবিষৎত সম্ভাবনা ব্যপক। আমাদের আর যা করতে হবে সেগুলি হচ্ছে –
ব্যবহারযোগ্য ঐতিহ্যগত ও স্থানীয় জ্ঞানের অনুসন্ধান ও চিহ্নিতকরণ।
লোকায়ত জ্ঞানের লিপিবদ্ধকরণ ও এর সংরক্ষণ (যেটি আমাদের সবচেয়ে দুর্বল দিক)।
বিভিন্ন মাধ্যমে লোকায়ত জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেয়া এবং জনগণকে তাদের জীবন জীবিকা রক্ষায় তা ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ করা।
আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় লোকায়ত জ্ঞানকে মূল স্রোতধারায় অন্তর্ভুক্তকরণ।
দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজে লোকায়ত জ্ঞানের অনুশীলনের মাধ্যমে জীবনকে অর্থবহ করে তোলা।

আমরা হয়তো অর্থনৈতিক মানদণ্ডে তুলনামূলকভাবে দরিদ্র, কিন্তু আমাদের যুগবাহিত সংযোজিত জ্ঞান, অনুশীলন এবং আমাদের জীবন দক্ষতা অনেক উন্নত দেশ থেকে সমৃদ্ধ, বৈচিত্রময় ও প্রাচুর্যপূর্ণ। দুর্যোগ সহনশীল বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের অবশ্যই লোকায়ত জ্ঞানের সংরক্ষণ এবং সেই সঙ্গে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা দিতে হবে। এগুলোকে আমাদের সম্পদ হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে।