হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতীয় জনতা পাটির (বিজেপি) দুইবারের মন্ত্রী ও জনপ্রিয় শিল্পী বাবুল সুপ্রিয়ের পর এবার দল ছাড়ার গুঞ্জন অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। শুধু অভিনেতা হিরণ-ই নয়, সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিজেপির ৫ বিধায়কও দল ছাড়ছেন বলে চারদিকে গুঞ্জন রটেছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, শুক্রবার বিজেপির পরিষদীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না ওই ৬ বিধায়ক। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য খড়্গপুর সদরের বিধায়ক ও জনপ্রিয় অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তার সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষের নাকি মুখ দেখাদেখি নেই। তাই তিনি দল ছাড়তে পারেন। আবার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সুসম্পর্ক এখন রাজ্য নেতৃত্বকে ভাবিয়ে তুলেছে।
মাত্র দুদিন আগে (বুধবার) বিজেপির সাবেক মন্ত্রী ও সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বাবুল সুপিয় তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, শুধুমাত্র ঔদ্ধত্যের কারণে একজন অনুগত কর্মীকে আপনার বিজেপি ছাড়তে বাধ্য করেছেন। মিলিয়ে নেবেন, আগামী দিনে আরো অনেকে বিজেপি ছাড়বেন। তাতে আমার কোনো ভূমিকা থাকবে না। তারা বিজেপি ছাড়বেন নিজেদের তাগিদে। আপনাদের রোজকার খেয়োখেয়িতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে।
বাবুল সুপ্রিয়ের এমন ভবিষ্যদ্বাণী খুব তাড়াতাড়িই তাহলে ফলতে শুরু করেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, পরিষদীয় বৈঠকে দিলীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন বলে হিরণ সেই বৈঠক এড়িয়ে গেছেন। সংসদ সদস্য–বিধায়কের সম্পর্ক অবনতি এবং বিজেপি ত্যাগ চিন্তার বিষয় বলে জানিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর বিধায়কদের নিয়ে সুকান্ত যে বৈঠক করলেন সেখানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। সেখানেও দেখা যায়নি হিরণকে। এমনকী খড়্গপুরের রেল ফুটব্রিজ উদ্বোধনে তিনি ছিলেন না।
এই বিষয়ে বিধানসভায় বিজেপির মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, হিরণকে নিয়ে এমন জল্পনার কারণ নেই। চিকিৎসার জন্য তিনি এখন দক্ষিণ ভারতে আছেন। সেটা দল জানে।
কিন্তু বাকি নেতা–নেত্রীরা? এই প্রশ্ন উঠছে কারণ শুক্রবারের বৈঠকে দেখা যায়নি আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, ইংরেজবাজারের শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, দার্জিলিংয়ের নীরজ জিম্বা, কোচবিহার উত্তরের সুকুমার রায়, সোনামুখীর দিবাকর ঘরামি। মোট ৬ জন। এই নিয়ে মনোজ টিগ্গা বলেন, এদের কাউকে নিয়েই জল্পনার কোনো কারণ নেই। রাজ্য সভাপতিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় দলের পক্ষে। সেই ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন অগ্নিমিত্রা। বাকিরাও শারীরিক অসুস্থতার কথা আগেই জানিয়েছিলেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, সুকান্ত মজুমদার যখন নয়াদিল্লি গেছেন তখন অমিত শাহ তাকে বার্তা দেন দলের ভাঙন যাতে আর না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে। কিন্তু তারপরও ভাঙন ধরেছে। রায়গঞ্জ তার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। এখন আশঙ্কা এই পরিস্থিতিতে যদি হিরণ চট্টোপাধ্যায় বিজেপি থেকে পদত্যাগ করেন তাহলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বিজেপি। তাই বিধায়কদের ধরে রাখতে বৈঠক করা হয়েছে। যাত্রা শুরু করেছিলেন মুকুল রায়। তারপর আরো তিন বিধায়ক— বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ, বাগদার বিশ্বজিৎ দাস আর কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমুল কংগ্রেসে গিয়েছেন।