আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়ে ষড়যন্ত্রে জড়িত রাজনীতিকদের ভুল স্বীকার করে অনুতপ্ত ও সংযত হওয়া উচিত। তাহলে আমরা অনেক অবাঞ্চিত সত্য উদঘাটন করতে পারবো। তিনি বলেন, দেশে আর কখনো ইলেভেন আসবে না। আরেকটি ১/১১ ঘটানোর খায়েশ কোনদিন পূরণ হবে না।
মঙ্গলবার জাতীয় যাদুঘরে আমরা সূর্যমুখী আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন: দেশ ও গণ মানুষের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ১/১১ প্রসঙ্গে আরো বলেন, ওই সময় বিরাজনীতিকরণের লক্ষ্য হাসিলের জন্য মঞ্চের কুশিলবদের পেছন থেকে কিছু রাজনীতিবিদ সহযোগিতা করেছেন। কোন পলিটিশিয়ানরা রাতের আঁধারে সামরিক মাজারে গোয়েন্দাদের সঙ্গে সহযোগতায় সামিল হয়েছেন। ছোট ছোট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বড় বড় নেতারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করেছেন। রাজনীতি যদি ঠিক হয়, রাজনীতিবিদরা যদি ঠিক থাকেন অন্তত নৈতিকতার প্রশ্নে – তাহলে অশুভ শক্তির যে কোন ষড়যন্ত্র বা পাঁয়তারা কোন দিনও সফল হবে না। রাজনীতি ঠিক হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ওয়ান ইলেভেনে কারা কুশিলব, কারা কারিগর, কারা মঞ্চে, কারা নেপথ্যে তা একদিন বেরিয়ে আসবেই। আসলে ১/১১’র লক্ষ্য ছিলো মাইনাস টু ফর্মূলা অর্থাৎ বিরাজনীতিকরণ। বিরাজনীতিকরণ যখন উদ্দেশ্য, সেখানে কোন পলিটিশিয়ানরা সেদিন সেখানে নেপথ্যে ছিলেন? তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেন নিয়ে ২০০৯ এ একটা ঝড় উঠেছিলো। তুমুল আলোচনা, তুমুল বিতর্ক। এক সময় কোন ইঙ্গিতে সঙ্গীত থেমে গেছে আমি বলতে পারবো না। তখন দাবি উঠেছে, ওয়ান ইলেভেন কুশীলবদের বের করে আনতে হবে, তাদেরকে বিচার করতে হবে। সত্য একদিন বের হবেই। সত্যকে কথনো থামাচাপা দিয়ে রাখা যায় না। ওয়ান-ইলেভেনের মতো ঘটনা-দুর্ঘটনা নিয়ে একদিন বাংলাদেশে গবেষণা হবেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে কতজন শহীদ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না, যা সত্য তা সবাই জানে। রাজনীতিতে যারা আন্দোলন-সংগ্রাম-নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে ভুল করে, তাদের ব্যর্থতার জন্য আজকে তারা চমক দেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে ইতিহাসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। কিন্তু তারা একদিন ইতিহাসের চালুনির ছিদ্র দিয়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠাতা নায়ক, সেখানে জিয়াউর রহমান সাহেব একটা ফুটনোট হতে পারেন। প্রতিষ্ঠাতা নায়কের সঙ্গে একজন ফুটনোটের তুলনা করার কিছু আছে বলে আমি মনে করি না।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি আবদুল বাসেত মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহান, গোলাম ফারুক প্রিন্স, জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি শফিকুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি উপহার দেয়া হয়। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আলোচনা সভায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম উপস্থিত থাকলেও মঞ্চে ওঠেননি।