ঢাকা ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিষ্টি আলু চাষে সফল ডুমুরিয়ার চাষিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৮:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১
  • ২১৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিষ্টি আলু আবাদে সফলতার মুখ দেখছেন খুলনার ডুমুরিয়ার চাষিরা। এবছর ডুমুরিয়া উপজেলায় কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রথম বারের মত এক হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের কৃষক মৃত্যুঞ্জয় বাংলানিউজকে বলেন, কৃষি অফিস থেকে প্রথম বারের মত লতি ও সার পেয়ে ২০ শতক জমিতে বারি মিষ্টি আলু ১২ জাতের চাষ করি।  আগে লবণাক্ততার কারণে  যেখানে কেবলমাত্র একটি ফসল হতো এবং আমন পরবর্তী সময়ে পতিত থাকত, সেই জমিতে ৬২ মন আলু পেয়েছি। উৎপাদন খরচ কম ও ভালো মূল্য পাওয়ায় আগামীতে অনেক কৃষক এটির চাষ করবে।

সলুয়া গ্রামের কৃষক রনজিত মণ্ডল বলেন, প্রদর্শনী সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেয়ে আমি ২০ শতক জমিতে প্রথম বারের মত বারি মিষ্টি আলু ৮ জাতের আলুর আবাদ করেছিলাম এবং ৪২ মণ আলু পেয়েছি। বাজার মূল্যও গোল আলুর তুলনায় ভালো এবং ঝুঁকি কম, এজন্য আগামীতে এর আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকরা অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করেই লাভের মুখ দেখছেন বলে জানান চাষিরা।

তারা জানান গত কয়েক বছর ধরে বাজারে মিষ্টি আলুর চাহিদা বেড়েছে। ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে মিষ্টি আলুর দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। মিষ্টি আলু চাষাবাদে তেমন একটা সার প্রয়োগ করতে হয় না বলে খরচ কম। এ ফসলে তেমন কোনো রোগ বালাইও দেখা যায় না। তাই এই আবাদে অল্প পুঁজি ও শ্রমে অধিক লাভ পাওয়া যায়। যে কারণে মিষ্টি আলু চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন এই উপজেলার কৃষকরা।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, উচ্চ ফলনশীল, ঝুঁকি ও রোগ পোকামাকড় কম, অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এটি স্বল্প জীবন কালীন এবং অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ মূল্যের একটি সবজি। ডুমুরিয়ার আবহাওয়া এবং মাটি এটি চাষের জন্য উপযোগী এবং এ ফসলে ঝুঁকিও কম। এটি মাটিকে ঢেকে রাখে বলে মাটিতে অনেক দিন রস থাকে, আগাছা কম হয় এবং এর পাতা পচে উৎকৃষ্ট সার হয়।

তিনি আরও বলেন, এটি সম্প্রসারণের জন্য আমরা কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষককে নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং প্রদর্শনী সহায়তা দিচ্ছি এবং এটি সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে এর আবাদ ও এলাকা বৃদ্ধি পাবে।

কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি কৃষিবিদ মো. মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন,  আগে কন্দাল ফসল অনাদর অবহেলায় বিভিন্ন বাগান বাদাড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে জন্মাতো, কন্দাল ফসল বলতেই নিরাপদ এবং উচ্চ মূল্যের, এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কৃষককে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করে এটি বাণিজ্যিক চাষাবাদ ও উদ্যোক্তা তৈরির কাজ করছি এবং কৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য এটি বাইরে রপ্তানির জন্যও কাজ করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মিষ্টি আলু চাষে সফল ডুমুরিয়ার চাষিরা

আপডেট টাইম : ১০:১৮:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিষ্টি আলু আবাদে সফলতার মুখ দেখছেন খুলনার ডুমুরিয়ার চাষিরা। এবছর ডুমুরিয়া উপজেলায় কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রথম বারের মত এক হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের কৃষক মৃত্যুঞ্জয় বাংলানিউজকে বলেন, কৃষি অফিস থেকে প্রথম বারের মত লতি ও সার পেয়ে ২০ শতক জমিতে বারি মিষ্টি আলু ১২ জাতের চাষ করি।  আগে লবণাক্ততার কারণে  যেখানে কেবলমাত্র একটি ফসল হতো এবং আমন পরবর্তী সময়ে পতিত থাকত, সেই জমিতে ৬২ মন আলু পেয়েছি। উৎপাদন খরচ কম ও ভালো মূল্য পাওয়ায় আগামীতে অনেক কৃষক এটির চাষ করবে।

সলুয়া গ্রামের কৃষক রনজিত মণ্ডল বলেন, প্রদর্শনী সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেয়ে আমি ২০ শতক জমিতে প্রথম বারের মত বারি মিষ্টি আলু ৮ জাতের আলুর আবাদ করেছিলাম এবং ৪২ মণ আলু পেয়েছি। বাজার মূল্যও গোল আলুর তুলনায় ভালো এবং ঝুঁকি কম, এজন্য আগামীতে এর আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকরা অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করেই লাভের মুখ দেখছেন বলে জানান চাষিরা।

তারা জানান গত কয়েক বছর ধরে বাজারে মিষ্টি আলুর চাহিদা বেড়েছে। ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে মিষ্টি আলুর দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। মিষ্টি আলু চাষাবাদে তেমন একটা সার প্রয়োগ করতে হয় না বলে খরচ কম। এ ফসলে তেমন কোনো রোগ বালাইও দেখা যায় না। তাই এই আবাদে অল্প পুঁজি ও শ্রমে অধিক লাভ পাওয়া যায়। যে কারণে মিষ্টি আলু চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন এই উপজেলার কৃষকরা।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, উচ্চ ফলনশীল, ঝুঁকি ও রোগ পোকামাকড় কম, অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এটি স্বল্প জীবন কালীন এবং অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ মূল্যের একটি সবজি। ডুমুরিয়ার আবহাওয়া এবং মাটি এটি চাষের জন্য উপযোগী এবং এ ফসলে ঝুঁকিও কম। এটি মাটিকে ঢেকে রাখে বলে মাটিতে অনেক দিন রস থাকে, আগাছা কম হয় এবং এর পাতা পচে উৎকৃষ্ট সার হয়।

তিনি আরও বলেন, এটি সম্প্রসারণের জন্য আমরা কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষককে নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং প্রদর্শনী সহায়তা দিচ্ছি এবং এটি সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে এর আবাদ ও এলাকা বৃদ্ধি পাবে।

কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি কৃষিবিদ মো. মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন,  আগে কন্দাল ফসল অনাদর অবহেলায় বিভিন্ন বাগান বাদাড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে জন্মাতো, কন্দাল ফসল বলতেই নিরাপদ এবং উচ্চ মূল্যের, এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কৃষককে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করে এটি বাণিজ্যিক চাষাবাদ ও উদ্যোক্তা তৈরির কাজ করছি এবং কৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য এটি বাইরে রপ্তানির জন্যও কাজ করছি।