৩১ দলীয় জাতীয় জোটের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে উন্নয়ন দৃশ্যমান হলেও মানবাধিকারের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
সোমবার দুপুরে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ‘আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করা হয়।
নাজমুল হুদা বলেন, রাষ্ট্রের ক্ষমতার মালিক হবে জনগণ’। ভোট হচ্ছে জনগণের শক্তি। ভোট দিতে না পারলে জনগণ শক্তিহীন। বিদেশি শক্তি, সন্ত্রাসীরা যদি কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয় সেই সরকার কেন জনগণের দিকে তাকাবে? অতীতে দেখেছেন, আপনার ভোট অন্যজন দিয়ে দিয়েছে। ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়েছে।
তিনি বলেন, আগে আমি বলেছিলাম, দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসা দরকার। সদিচ্ছা থাকলে বাংলাদেশকে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে পারেন দুই নেত্রী।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে নাজমুল হুদা বলেন, আপনি কেন অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে রেখেছিলেন? কেন প্রথমদিনের পরই প্রত্যাহার করে নিলেন না? সে সময় যে জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে তার দায় আপনাকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, ভালো থেকে মন্দ সব ক্ষমতা এখন এক হাতে। এক হাতের ক্ষমতাকে প্রশংসা না করে পারছি না। এখন রাস্তাঘাটে অপকর্ম হয় না। পেট্রলবোমা নেই। প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ, তিনি রাস্তায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। তার হাতেই সব ক্ষমতা।
বিএনপি ছাড়ার প্রসঙ্গে নাজমুল হুদা বলেন,
আমি সহিংস রাজনীতিতে ইস্তফা দিয়ে চলে এসেছি। আমি বলেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর উচিত সংলাপে ডাকা। কিন্তু তিনি ডাকেননি। আমি বিএনপি চেয়ারপারসনকে বলেছিলাম, ৫ জুন প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপে আহ্বান করুন, না করলে ৬ জুন আমি পার্টি থেকে পদত্যাগ করবো। আমি কথা রেখেছি।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি সরাসরি বলেছি, উন্নয়নের দিক থেকে আপনি অনেক কিছু করেছেন। কিন্তু মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আপনার সরকার প্রশ্নবিদ্ধ। বিশেষ করে ক্রসফায়ারের ক্ষেত্রে।
নাজমুল হুদা বলেন, আমি রাজনীতিবিদ। বিএনপি ছেড়েছি। কিন্তু রাজনীতি ছাড়তে পারবো না। সুস্থ রাজনীতির মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৩১ দলের জোট গড়েছি। এমপি, মন্ত্রী হওয়া আমার জন্য বড় কিছু নয়। এরই মধ্যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা ৭ দফা তুলে ধরেছি জাতির সামনে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী এম নাজিমুদ্দিন আল আজাদ।
আলোচনায় অংশ নেন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লায়ন জাফর উল্লাহ, মহাসচিব মাওলানা আবেদ আলী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মুক্তিযোদ্ধা এসএম মর্তুজা হোসেন, নগর মহিলা শাখার সভাপতি মনোয়ারা বেগম হেনা, মো. ইকবাল হোসেন, মিজানুর রহমান মজুমদার, সৈয়দ মো. আমান উল্লাহ, আজিম উদ্দিন অভি, এসএম আলী, তৃষা সেনগুপ্ত, কোব্বাত আলী, অ্যাডভোকেট সেলিনা আকতার, আক্কাস আলী খান প্রমুখ।