ঢাকা ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অকালে চুল পাঁকার কারণ ও প্রতিরোধের উপায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
  • ১৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বয়স হলেই চুল পাঁকবে, ত্বকে পড়বে বলিরেখা। তবে আমাদের চারপাশে এমন অনেকেই আছেন; যাদের অকালেই চুল পেঁকে যায়। যা মোটেও কাম্য নয়। কিছু সচেতনতাবোধ দূরে রাখবে অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা থেকে।

যেসব কারণে চুলে পাঁক ধরে-

বংশগত কারণ: রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনের চুল অকালেই পেঁকে যাবার ইতিহাস থাকলে, পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের চুল অকালেই পাঁকতে পারে।

যে কারণে অকালে চুল পাকে, কী করবেন?

 

হরমোনের সমস্যা: হরমোন রক্তের ভীষণ জরুরি উপাদান। হাইপোথাইরয়ডিজম এবং হাইপার থাইরয়ডিজম নামে এক ধরণের হরমোনের অসুখে চুল অকালেই পাঁকতে পারে। গলায় থাইরয়েড নামে এক ধরণের গ্রন্থি রয়েছে। এই গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়।

হাইপোথাইরয়েডিজম মানে রক্তে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং হাইপারথাইরয়ডিজম মানে রক্তে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিকভাবে হরমোন নিঃসৃত করতে না পারলে এই দুই ধরণের অসুখ হয়। এ দুই ধরণের হরমোনের সমস্যার জন্য চুল অকালেই সাদা হতে পারে।

মানসিক অবসাদ: অতিরক্ত দুঃখ, কষ্ট, দুশ্চিন্তা থেকে অকালেই চুক পাঁকতে পারে। আমাদের তারুণ্য বজায় রাখতে সোরোটোনিন হরমোন অনেক বড় একটা ভূমিকা পালন করে। মানসিক অবসাদ রক্তে সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। পরিণামে মানুষের ত্বক, চুলের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

সেরোটোনিন হরমোন মানসিক উৎকর্ষতার জন্য কাজ করে। যতো বেশি আমাদের মন ভালো থাকবে, আমরা ততো বেশি পরিমাণে ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারবো।

ভিটামিনের অভাব: ফোলেট, ভিটামিন বি-১২, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এর অভাবে অকালেই চুল পেঁকে যায়। ভিটামিন সি জাতীয় খাবারের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। যা ত্বক, চুল পুষ্টি সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। রক্তে এই ধরণের ভিটামিন, মিনারেল এর অভাবে অনেকের চুল অকালেই পেঁকে যায়।

অতিরিক্ত কেমিক্যালের ব্যবহার: চুলে অতিমাত্রায় ডাই, রং ব্যবহার করলেও চুল অকালে পাঁকতে পারে। সব প্রসাধনী সব বয়সের মানুষের জন্য উপযোগী নয়। সৌন্দর্যের আশায় অতিরিক্ত কেমিক্যাল এর ব্যবহার, ভেজাল খাবার পরিবেশ দূষণ এর জন্যও চুল পাঁকতে পারে।

অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড: উচ্চমাত্রার প্রোটিন, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, অতিমাত্রায় কোমল পানীয় এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, বয়স অনুযায়ী দীর্ঘ বছর ওজন বেড়ে থাকলেও মাথার চুল অকালেই পাঁকতে পারে।

jagonews24

অটোইমিউন অসুখ: কিছু অটোইমিউন অসুখেও চুল অকালেই পেঁকে যায়।

চুল পেঁকে যাওয়া রোধে করণীয়-

>> মৌসুমী ফল, শাক সবজি নিয়মিত খেতে হবে। সবুজ হলুদ ফলের মধ্যে এ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে উচ্চমাত্রায়। যা তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

>> ধর্ম, কর্ম, ইতিবাচক চিন্তা, সৃজনশীল কাজ মানুষের মানসিক প্রশান্তি যোগায়, মন ভালো থাকলে চুল, ত্বক থাকবে পুষ্টি সমৃদ্ধ।

>> নিয়মিত কাঁচা সবজি, মৌসুমী ফল খেতে হবে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লিটার পানি রক্ত পরিষ্কার রাখতে এবং শরীর থেকে রোগ জীবাণু দেহের বাহিরে বের করে দিতে সাহায্য করবে।

>> ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলস্টেরল বা চর্বির মাত্রা সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

>> ফাস্টফুড, অতিমাত্রায় কোমলপানীয়, মাদকদ্রব্য, ধূমপান বর্জনীয়।

অকালে চুল পাকা রোধের দুই উপায়!

 

>> নিয়মিত ভালোভাবে চুল আঁচড়াতে হবে। তাহলে চুলের গোড়াতে পুষ্টি সরবরাহ হবে।

>> সময় পেলেই হাঁটতে হবে। এতে পুরো দেহের সবগুলো অঙ্গে রক্ত সরবরাহ হবে। ফলে দেহের সব অঙ্গ, ত্বক, চুল ভালো থাকবে।

>> সবসময় ঠান্ডা পানিতে গোসল করার অভ্যাস গড়ুন।

>> কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপিসহ কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় চুল পেঁকে যায়। চিকিৎকের পরামর্শ ব্যতীত চুলে কলপ, কেমিক্যাল ব্যবহার করা অনুচিত।

>> মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী, মানহীন বিউটি পার্লার থেকে সেবা গ্রহণ না করাই ভালো।

>> চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত রূপচর্চার জন্য কোনো ওষুধ খাবেন না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অকালে চুল পাঁকার কারণ ও প্রতিরোধের উপায়

আপডেট টাইম : ১০:৫১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বয়স হলেই চুল পাঁকবে, ত্বকে পড়বে বলিরেখা। তবে আমাদের চারপাশে এমন অনেকেই আছেন; যাদের অকালেই চুল পেঁকে যায়। যা মোটেও কাম্য নয়। কিছু সচেতনতাবোধ দূরে রাখবে অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা থেকে।

যেসব কারণে চুলে পাঁক ধরে-

বংশগত কারণ: রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনের চুল অকালেই পেঁকে যাবার ইতিহাস থাকলে, পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের চুল অকালেই পাঁকতে পারে।

যে কারণে অকালে চুল পাকে, কী করবেন?

 

হরমোনের সমস্যা: হরমোন রক্তের ভীষণ জরুরি উপাদান। হাইপোথাইরয়ডিজম এবং হাইপার থাইরয়ডিজম নামে এক ধরণের হরমোনের অসুখে চুল অকালেই পাঁকতে পারে। গলায় থাইরয়েড নামে এক ধরণের গ্রন্থি রয়েছে। এই গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়।

হাইপোথাইরয়েডিজম মানে রক্তে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং হাইপারথাইরয়ডিজম মানে রক্তে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিকভাবে হরমোন নিঃসৃত করতে না পারলে এই দুই ধরণের অসুখ হয়। এ দুই ধরণের হরমোনের সমস্যার জন্য চুল অকালেই সাদা হতে পারে।

মানসিক অবসাদ: অতিরক্ত দুঃখ, কষ্ট, দুশ্চিন্তা থেকে অকালেই চুক পাঁকতে পারে। আমাদের তারুণ্য বজায় রাখতে সোরোটোনিন হরমোন অনেক বড় একটা ভূমিকা পালন করে। মানসিক অবসাদ রক্তে সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। পরিণামে মানুষের ত্বক, চুলের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

সেরোটোনিন হরমোন মানসিক উৎকর্ষতার জন্য কাজ করে। যতো বেশি আমাদের মন ভালো থাকবে, আমরা ততো বেশি পরিমাণে ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারবো।

ভিটামিনের অভাব: ফোলেট, ভিটামিন বি-১২, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এর অভাবে অকালেই চুল পেঁকে যায়। ভিটামিন সি জাতীয় খাবারের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। যা ত্বক, চুল পুষ্টি সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। রক্তে এই ধরণের ভিটামিন, মিনারেল এর অভাবে অনেকের চুল অকালেই পেঁকে যায়।

অতিরিক্ত কেমিক্যালের ব্যবহার: চুলে অতিমাত্রায় ডাই, রং ব্যবহার করলেও চুল অকালে পাঁকতে পারে। সব প্রসাধনী সব বয়সের মানুষের জন্য উপযোগী নয়। সৌন্দর্যের আশায় অতিরিক্ত কেমিক্যাল এর ব্যবহার, ভেজাল খাবার পরিবেশ দূষণ এর জন্যও চুল পাঁকতে পারে।

অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড: উচ্চমাত্রার প্রোটিন, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, অতিমাত্রায় কোমল পানীয় এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, বয়স অনুযায়ী দীর্ঘ বছর ওজন বেড়ে থাকলেও মাথার চুল অকালেই পাঁকতে পারে।

jagonews24

অটোইমিউন অসুখ: কিছু অটোইমিউন অসুখেও চুল অকালেই পেঁকে যায়।

চুল পেঁকে যাওয়া রোধে করণীয়-

>> মৌসুমী ফল, শাক সবজি নিয়মিত খেতে হবে। সবুজ হলুদ ফলের মধ্যে এ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে উচ্চমাত্রায়। যা তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

>> ধর্ম, কর্ম, ইতিবাচক চিন্তা, সৃজনশীল কাজ মানুষের মানসিক প্রশান্তি যোগায়, মন ভালো থাকলে চুল, ত্বক থাকবে পুষ্টি সমৃদ্ধ।

>> নিয়মিত কাঁচা সবজি, মৌসুমী ফল খেতে হবে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লিটার পানি রক্ত পরিষ্কার রাখতে এবং শরীর থেকে রোগ জীবাণু দেহের বাহিরে বের করে দিতে সাহায্য করবে।

>> ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলস্টেরল বা চর্বির মাত্রা সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

>> ফাস্টফুড, অতিমাত্রায় কোমলপানীয়, মাদকদ্রব্য, ধূমপান বর্জনীয়।

অকালে চুল পাকা রোধের দুই উপায়!

 

>> নিয়মিত ভালোভাবে চুল আঁচড়াতে হবে। তাহলে চুলের গোড়াতে পুষ্টি সরবরাহ হবে।

>> সময় পেলেই হাঁটতে হবে। এতে পুরো দেহের সবগুলো অঙ্গে রক্ত সরবরাহ হবে। ফলে দেহের সব অঙ্গ, ত্বক, চুল ভালো থাকবে।

>> সবসময় ঠান্ডা পানিতে গোসল করার অভ্যাস গড়ুন।

>> কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপিসহ কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় চুল পেঁকে যায়। চিকিৎকের পরামর্শ ব্যতীত চুলে কলপ, কেমিক্যাল ব্যবহার করা অনুচিত।

>> মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী, মানহীন বিউটি পার্লার থেকে সেবা গ্রহণ না করাই ভালো।

>> চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত রূপচর্চার জন্য কোনো ওষুধ খাবেন না।