৪৬ পরিবারে টিকে আছে বাঁশ-বেত শিল্প

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আধুনিক সভ্যতার প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে বরগুনার বেতাগী উপজেলা ও পৌর শহরের বাসিন্দারা হারাতে বসেছে বাঁশ ও বেত শিল্পের ব্যবহার। বাঁশ আর বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা। তবুও বাপ-দাদার এই পেশাকে এখনও জীবিকার প্রধান বাহক হিসাবে আঁকড়ে রেখেছে উপজেলার কিছু সংখ্যক পরিবার।  ঘিওরে বিলুপ্তির পথে বাঁশ-বেত শিল্প: ভিন্ন পেশায় ৫ শতাধিক কারিগর | Barcik  News Portal

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে বেতাগী পৌরসভা ও উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৪৬টি পরিবারই বর্তমানে এই শিল্পটি ধরে রেখেছেন। যেখানে একযুগ আগেও এ উপজেলায় চার শতাধিক পরিবার এ পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।

পুরুষদের পাশাপাশি সংসারের কাজ শেষ করে নারী কারিগররাই বাঁশ দিয়ে এই সব পণ্য বেশি তৈরি করে থাকেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বাঁশ ও বেত দ্বারা এই সব পণ্য তৈরি করে থাকেন। বর্তমানে বেত তেমন সহজলভ্য না হওয়ায় বাঁশ দিয়েই বেশি এই সব চিরচেনা পণ্য তৈরি করছেন এই কারিগররা।

কয়েক দশক আগে বেতাগী পৌর শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো এই কারিগরদের তৈরি এই সব বাঁশ ও বেতের পণ্যগুলো। বাঁশ ও বেত থেকে তৈরি সামগ্রী শিশুদের দোলনা, র‌্যাগ, পাখা, ঝাড়ু, টোপা, ডালীর এখন আর দেখা মেলে না গ্রামে। সাজি, ওরা, কুলা, মোরা, পুরা, দাড়িপাল্লা, ঝাঁপি, ফুলদানি, ফুলের ডালি, খাবার ঘরের ডাইনিং টেবিল, চেয়ার, টেবিল, সোফা সেট, খাট, মাছ ধরার পোলোসহ বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র নান্দনিক ব্যবহার ছিলো এক সময়।হস্তশিল্প - Wikiwand

উপজেলার বাসন্ডা গ্রামের অনেকে বলেন, হাতে গোনা আমরা কয়েকটি পরিবার আজও এ কাজে নিয়োজিত আছি। একটি বাঁশ থেকে ১০-১২টি ডালি তৈরি হয়। সকল খরচ বাদ দিয়ে প্রতিটি পণ্য থেকে ১০-২০টাকা করে লাভ থাকে। তবে বর্তমানে আগের মত আর বেশি লাভ হয় না। নিজেদেরই বিভিন্ন হাটে গিয়ে ও গ্রামে গ্রামে ফেরি করে এসব পণ্য বিক্রি করতে হয়।

হোসনাবাদ গ্রামের রতন হাওলাদার জানান, অতি কষ্টে তাদের বাপ-দাদার এই পেশাকে টিকে রাখতে ধার দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে লোন নিয়ে কাজ করছে। শেঁকড় আকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন মজুমদার বলেন, বাঁশ ও বেত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে কৃষকদের সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, বাঁশ ও বেত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে আসা দরকার। কৃষক ও  কারিকরদের আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং যথাযথ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করানো প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর