ঢাকা ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ইটনায় জাতীয় পরিচয়পত্র পরিষেবা স্থানান্তর ও কূট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ইটনায় এ প্লাস ক্যাম্পেইন অবহিত করন সভা অনুষ্ঠিত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে যেসব শর্ত দিলেন পুতিন রান্না শেখাচ্ছেন পড়শী, ঈদে দেখা যাবে অভিনয় আর গানে শিমের রাজ্য সীতাকুণ্ড ২১০ কোটি টাকার শিম উৎপাদন, কৃষকের হাসি জাতিসংঘ, মহাসচিব, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি অবশেষে মায়ের কোলে ফিরল সায়ান হরেদরে সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করতে হবে: মাহফুজ আলম পেঁয়াজের দাম না পেয়ে লোকসানের শঙ্কায় পাবনার চাষিরা পাচারকালে নারী শিশুসহ ১৮ রোহিঙ্গা উদ্ধার, দালাল আটক

অতিথি পাখির কিচির মিচির শব্দে মুখর করতোয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০
  • ১৭৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতের হিমেল হাওয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গে জীবন বাঁচাতে হাজার মাইল দূর থেকে উড়ে আসা অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে করতোয়া নদীর বুক।

বর্তমানে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রাম ঘেষাঁ করতোয়া নদীতে অতিথি পাখির সংখ্যা প্রায় ১০-১২ হাজার হবে বলে স্থানীয় পাখিপ্রেমীদের ধারণা। নদীতে পাখি দেখতে প্রতিদিনই সকাল-বিকেল দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। অতিথি পাখির কলতান, নীলাকাশে ডানা মেলে উড়ে চলার কল-কাকলিতে মুখর করতোয়ার তীর। আর অনেকেই এ সুন্দর মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে রাখছেন।

এ দিকে ঝাঁক বেঁধে বেশি পরিমাণ অতিথি পাখির আগমনকে আনন্দের সঙ্গে নিয়েছে স্থানীয়রা। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোনো শিকারিকে এই এলাকায় প্রবেশ করতে দেবে না। একই সঙ্গে স্থানীয়রাও পাখি শিকার না করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। সবাই মিলে অতিথি পাখি ও দেশীয় পাখির একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়েছেন স্থানীয়রা।

শাহজাদপুর থেকে অতিথি পাখি দেখতে আসা মাতুয়ারা ইসলাম স্বপ্না বলেন, এ বছর করতোয়া নদীতে অনেক পাখি এসেছে। পাখিগুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। প্রতি বছরই এই অতিথি পাখি দেখতে আসি।

নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, এ বছর খাবারের আশায় ঝাঁকে ঝাঁকে আসা অতিথি পাখি চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় এসেছে। তবে নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে তারা জড়ো হচ্ছে করতোয়া নদীতে। এখানে গাছপালা বেশি। এ ছাড়া বিস্তীর্ণ জলাশয় থাকায় পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় মনে করছে।

তাড়াশ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মর্জিনা ইসলাম বলেন, অতিথি পাখি শীতকালের সৌন্দর্য। যার উপস্থিতিতে প্রকৃতিতে আসে নতুন রূপ। নির্দিষ্ট সময়ের পর এই পাখিগুলো চলে যায়। অতিথি পাখি আমাদের ক্ষতি করে না। অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পাখি শিকার করা হয়। জীবন বাঁচাতে এসে জীবন দিতে হয় ভিনদেশি পাখিদের।

জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা সিরাজগঞ্জের দ্যা বার্ড সেফটি হাউজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস বলেন, এই মুহূর্তে জরুরি কাজ হচ্ছে অতিথি পাখিদের কোনোভাবে বিরক্ত না করা। এ ছাড়াও এই এলাকায় জনসচেতনতা বাড়াতে বিলবোর্ড, লিফলেট বিতরণ করা দরকার। আমরা এরই মধ্যে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণের স্বার্থে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও চলনবিল এলাকার পাখি রক্ষায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তাড়াশের ইউএনও মো. মেজবাউল করিম বলেন, পাখি প্রকৃতির অলংকার। এ অলংকার ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। আমি নিজে পাখির অভায়শ্রম দেখতে যাবো। সেখানে জনগণকে সচেতন করা হবে। যেন কেউ পাখিদেরকে বিরক্ত ও শিকার না করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইটনায় জাতীয় পরিচয়পত্র পরিষেবা স্থানান্তর ও কূট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

অতিথি পাখির কিচির মিচির শব্দে মুখর করতোয়া

আপডেট টাইম : ০৬:৩৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতের হিমেল হাওয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গে জীবন বাঁচাতে হাজার মাইল দূর থেকে উড়ে আসা অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে করতোয়া নদীর বুক।

বর্তমানে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রাম ঘেষাঁ করতোয়া নদীতে অতিথি পাখির সংখ্যা প্রায় ১০-১২ হাজার হবে বলে স্থানীয় পাখিপ্রেমীদের ধারণা। নদীতে পাখি দেখতে প্রতিদিনই সকাল-বিকেল দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। অতিথি পাখির কলতান, নীলাকাশে ডানা মেলে উড়ে চলার কল-কাকলিতে মুখর করতোয়ার তীর। আর অনেকেই এ সুন্দর মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে রাখছেন।

এ দিকে ঝাঁক বেঁধে বেশি পরিমাণ অতিথি পাখির আগমনকে আনন্দের সঙ্গে নিয়েছে স্থানীয়রা। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোনো শিকারিকে এই এলাকায় প্রবেশ করতে দেবে না। একই সঙ্গে স্থানীয়রাও পাখি শিকার না করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। সবাই মিলে অতিথি পাখি ও দেশীয় পাখির একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়েছেন স্থানীয়রা।

শাহজাদপুর থেকে অতিথি পাখি দেখতে আসা মাতুয়ারা ইসলাম স্বপ্না বলেন, এ বছর করতোয়া নদীতে অনেক পাখি এসেছে। পাখিগুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। প্রতি বছরই এই অতিথি পাখি দেখতে আসি।

নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, এ বছর খাবারের আশায় ঝাঁকে ঝাঁকে আসা অতিথি পাখি চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় এসেছে। তবে নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে তারা জড়ো হচ্ছে করতোয়া নদীতে। এখানে গাছপালা বেশি। এ ছাড়া বিস্তীর্ণ জলাশয় থাকায় পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় মনে করছে।

তাড়াশ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মর্জিনা ইসলাম বলেন, অতিথি পাখি শীতকালের সৌন্দর্য। যার উপস্থিতিতে প্রকৃতিতে আসে নতুন রূপ। নির্দিষ্ট সময়ের পর এই পাখিগুলো চলে যায়। অতিথি পাখি আমাদের ক্ষতি করে না। অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পাখি শিকার করা হয়। জীবন বাঁচাতে এসে জীবন দিতে হয় ভিনদেশি পাখিদের।

জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা সিরাজগঞ্জের দ্যা বার্ড সেফটি হাউজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস বলেন, এই মুহূর্তে জরুরি কাজ হচ্ছে অতিথি পাখিদের কোনোভাবে বিরক্ত না করা। এ ছাড়াও এই এলাকায় জনসচেতনতা বাড়াতে বিলবোর্ড, লিফলেট বিতরণ করা দরকার। আমরা এরই মধ্যে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণের স্বার্থে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও চলনবিল এলাকার পাখি রক্ষায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তাড়াশের ইউএনও মো. মেজবাউল করিম বলেন, পাখি প্রকৃতির অলংকার। এ অলংকার ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। আমি নিজে পাখির অভায়শ্রম দেখতে যাবো। সেখানে জনগণকে সচেতন করা হবে। যেন কেউ পাখিদেরকে বিরক্ত ও শিকার না করে।