শিক্ষা কার্যক্রম পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য প্রয়োজন: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পেশাভিত্তিক প্রচলিত ও অপ্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা কার্যক্রমের পরিকল্পনা করতে হবে।
চাহিদাভিত্তিক ও কর্মনির্ভর শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। খুব শিগগিরই মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে। দেশে দ্রুত প্রবৃদ্ধির জন্য কঠোর পরিশ্রমী বিশাল কর্মীবাহিনী, রফতানিভিত্তিক প্রবৃদ্ধির উপযোগী বন্দর সুবিধা, নিজস্ব সৃজনশীলতা এবং নতুন প্রযুক্তি আত্নস্থ করতে সমর্থ অভ্যন্তরীণ বিশাল বাজার রয়েছে।
শিক্ষা কার্যক্রম পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য প্রয়োজন: রাষ্ট্রপতিবৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশানলস্রে (বিইউপি) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, সার্টিফিকেটসর্বস্ব শিক্ষা নয়, আলোকিত মানুষ হওয়ার শিক্ষা চাই, সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব গড়ার শিক্ষা চাই। শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, বুদ্ধিবৃত্তির উন্নয়ন, অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধ, সর্বোপরি গভীর দেশপ্রেম জাগ্রত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ বিষয়টি মাথায় রেখে শিক্ষাদানের কাজে আত্ননিয়োগ করতে হবে।
একবিংশ শতাব্দীকে ‘এশিয়ার শতাব্দী’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের পটভূমিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে সেগুলো চিহ্নিত করে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে উন্নয়ন মহাসড়কের অগ্রগামী যাত্রী হিসেবে থাকতে পারব। এজন্য প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ দরকার। নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী করে গড়ে তুলতে সবাইকে সম্মিলিত প্রয়াস চালাতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আপনারা অত্যন্ত ভাগ্যবান যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পেয়েছেন। আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও জাতির উন্নয়নের জন্য আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে আপনাদের অর্জিত জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাবেন।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ ভাইস চ্যান্সেলর মেজর জেনারেল শেখ মামুন খালেদ বলেন, জ্ঞানের মাধ্যমে উৎকর্ষ সাধনের ব্রত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বিইউপির সব সদস্যের পক্ষ থেকে সমাবর্তন গ্র্যাজুয়েটদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মুহাম্মদ ফরিদ হাবিব, বিমানবাহিনী প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) এয়ার ভাইস মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিইউপির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, আশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া। এছাড়া সংসদ সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, বিইউপির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবর্তনে অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য তিন জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডাল দেয়া হয়। তারা হলেন মেজর জেনারেল শেখ মামুন খালেদ, মেজর মো. সোলায়মান ও এয়ার কমোডর সুরাট সিং। ভারতীয় নাগরিক এয়ার কমোডর সুরাট সিং মিরপুরের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ থেকে ‘মাস্টার অব সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’ বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করেন। এছাড়া ১১ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডাল প্রদান করা হয়। এই সমাবর্তন থেকে ৮৩৫ গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রি দেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর