সম্প্রতি ক্রিকেটে ভারতের সমর্থকরা ধোনি বাহিনীকে ‘দেশের মাটিতে বাঘ, বিদেশে বিড়াল’ বলে অ্যাখ্যা দিচ্ছে। কারণ, দেশের মাটিতে ক’দিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে নাস্তানাবুধ করেছে ধোনিরা। আর সেই ক্রিকেট দলই কিনা অস্ট্রেলিয়ায় একের পর এক ম্যাচ হারছে।
তবে এতে বাংলাদেশী অনেক ক্রিকেট ভক্ত মনে করছেন ধোনি হয়তো বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক মাশরাফির সেই কথাটি ভুলে গেছে। আর সে কারণেই প্রতিটি ম্যাচ হারছে।
নিশ্চয় ভাবছেন মাশরাফি কি এমন কথা বলেছিলেন, যেটা ভুলে যাওয়া ধোনি বাহিনী একের পর এক ম্যাচ হারছেন?
২০১২ এশিয়া কাপে ভারত ম্যাচের আগে মাশরাফি মুর্তজা বলেছিনে, ‘টেন্ডুলকার করুক না শততম সেঞ্চুরি, ম্যাচ জিতলেই তো হলো।’ কে জানে স্টিভেন স্মিথও সেই পথেই এগোচ্ছেন কি না। সিরিজের প্রথম ম্যাচের পরই বোধ হয় দলকে বলে দিয়েছেন, ‘আহা করুক না এ রকম দু-চারটা সেঞ্চুরি, আমরা জিতলেই হলো!’
অস্ট্রেলিয়ায় হেরেই চলেছে ভারত। টানা তিন ম্যাচ হেরে সিরিজও খুইয়ে বসেছে ইতিমধ্যে। সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই রানের পাহাড় গড়েও হারতে হয়েছে ভারতকে। এ জন্য অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি তাঁর বোলারদেরই দুষছেন। কিন্তু ভারতেই অনেকে বলছেন, দোষ ব্যাটসম্যানদের। নিজেদের মাইলফলকের কথা ভাবতে গিয়ে নাকি দলকে ডোবাচ্ছেন তাঁরা।
প্রথমে শুনে হেসেই উড়িয়ে দেওয়ার কথা, আরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তো যা খেলার ভারতের ব্যাটসম্যানরাই খেলছেন। তিন ম্যাচে তিনটি সেঞ্চুরি, পাঁচটি ফিফটিও। দুই ম্যাচেই তিন শ পার করা স্কোর। তৃতীয় ম্যাচেও তিন শ ছুঁই ছুঁই রান। কিন্তু তিনটি ম্যাচই বেশ আয়েশ করে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের কোনো ম্যাচেই মনে হয়নি অস্ট্রেলিয়া হারতে পারে। দোষ তো বোলারদেরই দেবেন ধোনি।
কিন্তু প্রতিটি ম্যাচের স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে, দোষ ব্যাটসম্যানদেরও কম নয়।
প্রথম ম্যাচে রোহিত শর্মা ১৭১ রান করে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অতিথি ব্যাটসম্যানদের রেকর্ড ভেঙেছেন। বিরাট কোহলিও করেছেন ৯১। কিন্তু দুজন মিলে রান তুলেছেন বেশ শ্লথ গতিতে। সেদিন ভারত ২০০ রান করেছিল ৩৯তম ওভারে। শেষ ১০ ওভারে ঝড় তুলেও তাই রানটি ৩০৯ এর বেশি করা যায়নি। আর অস্ট্রেলিয়ায় ২০০ ছুঁয়েছে মাত্র ৩৩ ওভারে। ফলে শেষ দিকে বেশ কয়েকটি উইকেট পরলেও ধীরে সুস্থেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে তারা।
দ্বিতীয় ম্যাচেও সেঞ্চুরি পেয়েছেন রোহিত। ফিফটি পেয়েছেন কোহলি ও রাহানে। কিন্তু এই তিনজনের বীরত্বে ৪২.১ ওভারে ২৫০ করে ফেলেছিল ভারত। কিন্তু আসল সময়ে আর রান বাড়াতে পারেননি তারা। ভারত আটকে যায় ৩০৮-এ। অস্ট্রেলিয়া এই রান ধীরে সুস্থেই পার করে ফেলে ৭ উইকেট হাতে রেখেই।
তৃতীয় ম্যাচেও একই দৃশ্য। কোহলির সেঞ্চুরি ও রাহানে-ধাওয়ানের ফিফটিতে ২৯৫ রান করে ভারত। কিন্তু দুই শ করতেই ৩৯.২ ওভার লেগে গেল তাদের। ওখানেই তো ম্যাচ হেরে গেল ভারত। কারণ, অস্ট্রেলিয়া কিন্তু তাদের ইনিংসে ২০০ করে ফেলেছে ৩৫ ওভারের মধ্যেই।