ড. নিয়াজ পাশা, বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গো-খামারিদের মাঝে ৫% সুদে ২০০ কোটি টাকার ঋণ প্রদান কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেছেন । এতে দেশে গবাদিপশু প্রতিপালন ব্যাপকহারে বিস্তার লাভ করবে। আত্নকর্মসংস্থান ঘটবে বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর। বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী অষ্টগ্রামের পনিরের স্বাদ আবারও পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশের আয়তনের ১২% এলাকা নিয়ে গঠিত হাওরাঞ্চলে দেশের মোট গবাদি পশুর ২২% প্রতিপালন হয়। অপরদিকে, হাঁস পালনে এই পরিমাণ ২৪% । কিশোরগঞ্জ জেলার ‘অষ্টগ্রামের পনির’ জগত বিখ্যাত ছিল । কিন্ত বিভিন্ন কারণে তা এখন ক্রমহ্রাসমান । দিগন্ত বিস্তৃত ‘গো চারণ ভূমি’, ‘গো-পাট’ ও পতিত জায়গা সবই চলে এসেছে ধান চাষের আওতায়।
হাওরাঞ্চলে আগে গরু পালন ছিল মাঠে চরানো মাত্র । এখন লালন পালন করতে হয় । সে সুযোগ হাওরাঞ্চলে আছে। হাওরাঞ্চলে বর্তমানে ‘গোলা ভরা ধান’ আছে সত্য কিন্ত ‘গোয়াল ভরা গরু’ আর ‘পুকুর ভরা মাছ’ হয়ত আর তেমনভাবে পাবেন না ।
বিশাল জমিগুলোর বড় বড় আইল, ফাঁকা জায়গায় প্রচুর ‘চাইল্লা’ ঘাস জন্মে । হাওরের বিখ্যাত ‘চাইল্লা’ ঘাস খেলে গাভী অধিক দুধ দেয় বলে প্রচলিত রয়েছে । উন্নত জাতের ঘাস চাষের সুযোগও আছে এবং এটি লাভজনক চাষ হবে । ধানের খড় ইউরিয়া ট্রিটম্যান্টের মাধ্যমে বর্ষায় গরুকে খাদ্য হিসাবে দেয়া যাবে ।
পাবনার শাহজাদপুর আর হাওরাঞ্চল ভৌগলিকভাবে ভূমির গঠন প্রায় একই রকম। বছরের একটা সময় এখানকার সিংহভাগ ভূমি পানির নীচে থাকে। শাহজাদপুরে গো সম্পদ সম্প্রসারণের মূল কারণ বলতে গিয়ে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, হাওরাঞ্চলে প্রয়োজন উন্নত জাতের গরুর কৃত্তিম প্রজননের মাধ্যমে জাত সম্প্রসারণ, ঋণ দান এবং প্রশিক্ষণ প্রদান।
ড. সাইফুল ইসলাম দীর্ঘদিন হাওরাঞ্চলের কিশোরগঞ্জের ইটনায় ভেটেরিনারি সার্জন হিসাবে কর্মরত থেকে তাঁর অভিজ্ঞতায় এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন ।
এসব সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে গো-খামারীদের মাঝে ২০০ কোটি টাকা ৫% সুদের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম হাওরাঞ্চলেও সম্প্রসারণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
ড. নিয়াজ পাশা: কৃষি প্রকৌশলী ও একজন হাওর ভূমিপুত্র