মৌলভীবাজার জেলার পাহাড়ী জনপদে ব্যাপক কমলার চাষ হতো। ২০০১ সালে থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ‘বৃহত্তর সিলেট জেলা সমন্বিত কমলা ও আনারস চাষ উন্নয়ন প্রকল্প’ চালু ছিলো। এরপর থমকে যায় প্রকল্পটি। কমলা চাষিদের পৃষ্টপোষকতায় নেয়া হয়নি আর কোন সরকারি উদ্যোগ। নিভে যায় কমলা চাষিদের আশার প্রদীপ। দীর্ঘ ৭ বছর পর ফের কমলা চাষিদের আশার আলো দেখাচ্ছে ‘আশা (অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশাল এডভান্সমেন্ট)’ নামক বেসরকারি সংস্থা। এগিয়ে এসেছে কমলা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানান পৃষ্টপোষকতায়। আশায় ফের সপ্ন দেখতে শুরু করছেন প্রান্তিক উপজেলার কমলা চাষিরা।
মৌলভীবাজার জেলার পাহাড়ী জনপদে কমলার চাষ হতো অনেক আগে থেকেই। সেই কমলা চাষকে আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ‘বৃহত্তর সিলেট জেলা সমন্বিত কমলা ও আনারস চাষ উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০০১ সাল থেকে এই প্রকল্প চলে জুন ২০০৮ সাল পর্যন্ত। কমলা চাষে আসে নতুন বিপ্লব। কিন্তু গত ৭ বছর থেকে প্রকল্পটি বন্ধ থাকায় কমলা চাষীরা হতাশ। কমলা চাষে রোগবালাই কিংবা কমলা চাষ সংক্রান্ত কোন রকম পরামর্শ পান না চাষীরা। কৃষি বিভাগ সুত্র জানায়, ২০০১ সালে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতরের উদ্যোগে ‘বৃহত্তর সিলেট জেলা সমন্বিত কমলা ও আনারস চাষ উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প নেয়া হয়। এই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর কৃষকদের চাষ পদ্ধতি ও উন্নত জাতের চারা সরবরাহসহ সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকতারা দেন সার্বক্ষণিক পরামর্শ। আর এতেই আড়মোড়া ভেঙ্গে জেগে উঠে মৃত প্রায় কমলা বাগানগুলো। শুধু পুরাতন বাগান নয়, নতুন নতুন কমলার বাগান সৃজিত হয়। নাম ‘বৃহত্তর সিলেট জেলা সমন্বিত কমলা ও আনারস চাষ প্রকল্প’ হলেও মূলত এই প্রকল্পের কাজ হয় মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পাহাড়ী জনপদে। এই ইউনিয়নের লালছড়া, কচুরগুল, হাওয়াছড়া, রূপাছড়া, বেলাবাড়ী, লাটিঠিলা, লাটিছড়া, কালাছড়া, শুকনাছড়া, ডোমাবাড়ি, জামকান্দি এলাকায়। জুড়ী ছাড়া কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর পরিত্যক্ত পাহাড়ি জমিতে ৫ শতাধিক কমলা বাগান রয়েছে এমন তথ্য সংশ্লিষ্টদের। গত ৭ বছর বন্ধ থাকার পর বেসরকারি সংস্থা ‘আশা (অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশাল এডভান্সমেন্ট)’ কমলা চাষিদের পৃষ্টপোষকতায় এগিয়ে এসেছে। তারা ইতোমধ্যে ৫০ জন কমলাচাষিকে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা দিয়েছে। সংস্থার কর্মকর্তা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ ডিসেম্বর জুড়ী উপজেলার পশ্চিম কচুরগুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৫ জন কমলাচাষিকে রাসায়নিক সারের বড়ি, জৈব বালাইনাশক ও সেচের উপকরণ প্রদান করা হয়। পরে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন। এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর বড়লেখা উপজেলার পূর্ব মাইজগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৫ জন চাষিকে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়। আশা’র মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক কামরুল হাসান জানান, জুড়ী ও বড়েলখা উপজেলায় কমলাচাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।