ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে দেশে ঢুকল সাত ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৯৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকেছে দেশে। তবে এর পরিমাণ মাত্র সাত ট্রাক। এর বাইরে আপাতত কোনো ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসছে না বলে জানা গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আজ শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় শুরু হয় দেশের অভ্যন্তরে এসব পেঁয়াজ ঢোকা। গত ১৪ সেপ্টেম্বরের টেন্ডার অনুযায়ী এই সাত ট্রাক পেঁয়াজ ঢুকেছে বলে জানা গেছে।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের উপব্যবস্থাপক মাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এই সাত ট্রাক ছাড়া আপাতত আর কোনো ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

এদিকে ভারতের মহাদিপুর স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি অভিজিৎ সিং জানিয়েছেন, ওই স্থলবন্দরে দুই শতাধিক ট্রাক পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। তবে তা বাংলাদেশে পাঠানো হবে কি না তা নিশ্চিত নন তিনি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সোনামসজিদ দিয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাতটি ট্রাকে ১৯৯ টন পেঁয়াজ দেশে ঢুকেছে। এসব ট্রাকের কয়েকজন চালক জানিয়েছেন, এখনো ভারতের বন্দরে তিন শর বেশি ট্রাকে পেঁয়াজ আটকে আছে। কয়েক দিন ধরে এভাবে আটকে থাকায় গরমে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পাইকাররা।

এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির একটি সূত্র নিশ্চিত করে যে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বাংলাদেশে জরুরি ভিত্তিতে ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে ভারত। জানা যায়, ভারতের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে শুধু বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে জোরালো বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও এই পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

গত সপ্তাহে ভারত তাঁর অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতি ঠিক রাখতে হঠাৎ করেই বিদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। আগেভাগে না জানিয়ে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ায় বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুনেছি যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এতে (পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ) খুব অনুতপ্ত। কারণ তারাও জানত না যে হঠাৎ করে এটা বন্ধ হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের একটি বোঝাপড়াও আছে যে এ ধরনের হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের জানানো প্রয়োজন। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নাকি এটা (রপ্তানি বন্ধ) সম্পর্কে কিছুই জানত না।’

এর আগে গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলমও দুই দেশের অলিখিত সমঝোতার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশ ভারতকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভারতীয় হাইকমিশনে এবং নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্পষ্ট বলেছে, ভারতের হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

গত ১৫-১৬ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ করেছিল। আর যদি নিষেধাজ্ঞা দিতেই হয়, তাহলে বাংলাদেশকে যেন আগাম জানানো হয়- সে কথাও হয়েছিল ওই বৈঠকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অবশেষে দেশে ঢুকল সাত ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ

আপডেট টাইম : ০২:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকেছে দেশে। তবে এর পরিমাণ মাত্র সাত ট্রাক। এর বাইরে আপাতত কোনো ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসছে না বলে জানা গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আজ শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় শুরু হয় দেশের অভ্যন্তরে এসব পেঁয়াজ ঢোকা। গত ১৪ সেপ্টেম্বরের টেন্ডার অনুযায়ী এই সাত ট্রাক পেঁয়াজ ঢুকেছে বলে জানা গেছে।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের উপব্যবস্থাপক মাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এই সাত ট্রাক ছাড়া আপাতত আর কোনো ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

এদিকে ভারতের মহাদিপুর স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি অভিজিৎ সিং জানিয়েছেন, ওই স্থলবন্দরে দুই শতাধিক ট্রাক পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। তবে তা বাংলাদেশে পাঠানো হবে কি না তা নিশ্চিত নন তিনি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সোনামসজিদ দিয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাতটি ট্রাকে ১৯৯ টন পেঁয়াজ দেশে ঢুকেছে। এসব ট্রাকের কয়েকজন চালক জানিয়েছেন, এখনো ভারতের বন্দরে তিন শর বেশি ট্রাকে পেঁয়াজ আটকে আছে। কয়েক দিন ধরে এভাবে আটকে থাকায় গরমে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পাইকাররা।

এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির একটি সূত্র নিশ্চিত করে যে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বাংলাদেশে জরুরি ভিত্তিতে ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে ভারত। জানা যায়, ভারতের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে শুধু বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে জোরালো বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও এই পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

গত সপ্তাহে ভারত তাঁর অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতি ঠিক রাখতে হঠাৎ করেই বিদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। আগেভাগে না জানিয়ে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ায় বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুনেছি যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এতে (পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ) খুব অনুতপ্ত। কারণ তারাও জানত না যে হঠাৎ করে এটা বন্ধ হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের একটি বোঝাপড়াও আছে যে এ ধরনের হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের জানানো প্রয়োজন। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নাকি এটা (রপ্তানি বন্ধ) সম্পর্কে কিছুই জানত না।’

এর আগে গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলমও দুই দেশের অলিখিত সমঝোতার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশ ভারতকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভারতীয় হাইকমিশনে এবং নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্পষ্ট বলেছে, ভারতের হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

গত ১৫-১৬ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ করেছিল। আর যদি নিষেধাজ্ঞা দিতেই হয়, তাহলে বাংলাদেশকে যেন আগাম জানানো হয়- সে কথাও হয়েছিল ওই বৈঠকে।