হাওর বার্তা ডেস্কঃ অষ্টগ্রাম-মিঠামইন ও ইটনা হাওরাঞ্চলকে মূল সড়কে সংযুক্ত করার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাইয়ের অভিপ্রায়ে হাওর পরিদর্শন করেছেন অষ্টগ্রামের কৃতি সন্তান এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সিনিয়র কনসালট্যান্ট, বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. মহিউদ্দিন খাঁন।
শনিবার তিনিসহ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সমগ্র হাওরাঞ্চল পরিদর্শন করে এসেছেন।
এ সময় তাঁর সাথে ছিলেন মো. আবু সাঈদ শেখ, অতিরিক্ত সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, মো. জাবেদ আহমেদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব), বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বেসরকারী বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, এ.আর.এম নাজমুস সাকিব, অতিরিক্ত সচিব (অব:), অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং সুধাংশু শেখর বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব (অব:), অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়।
হাওর সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে রোববার সকালে মহিউদ্দিন খাঁন জানান অষ্টগ্রাম-মিঠামইন ও ইটনা হাওরাঞ্চলকে মূল সড়কে সংযুক্ত করার জন্য এবং পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে সেসব বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনায় এই সফর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “নবনির্মিত অষ্টগ্রাম-মিঠামইন ও ইটনা অলওয়েদার সড়কটি মূল সড়কের সাথে সংযুক্ত নয়। যেকারণে এখনো হাওরাঞ্চলের মানুষকে নৌকা, লঞ্চ ও অন্যান্য উপায়ে যাতায়াত করতে হয়। অলওয়েদার এই সড়কটিকে চাতলপাড় দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মূল সড়কের সাথে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বাঙ্গালপাড়া ও চাতলপাড়কে সংযুক্ত করার জন্য মেঘনা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। কিন্তু সেতুটি এলজিইডি কিংবা সেতু বিভাগ নির্মাণ করতে পারবে না। এটি নির্মাণ করবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সেকারণেই সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু সাঈদ শেখ এবং হাওরে সামগ্রিক পর্যটনের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাবেদ আহমেদ আমাদের সাথে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।”
মহিউদ্দিন খাঁন জানান তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব বিষয়ে সকল প্রস্তাবনা মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে জমা দিবেন।
এদিকে শনিবার সকালে এ প্রতিনিধি দল অষ্টগ্রাম সরকারি রোটারী ডিগ্রী কলেজের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোজতাবা আরিফ খানের সাথে মত-বিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
অধ্যক্ষ মো. মোজতাবা আরিফ খান ভাটির রানিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পরে বিকালে প্রতিনিধি দল মিঠামইনে অলওয়েদার সড়ক ও আইসিটি লার্নিং সেন্টারসহ (আইএলসি) বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিনিধি দল তমিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও হাজী তায়েব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইটি আইসিটি লার্নিং সেন্টার (আইএলসি) পরিদর্শন করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধানগণ অতিথিগণকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরে তারা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক সরকারি কলেজ পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রপতির স্বপ্নের ৩৫ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়ক পরিদর্শন করেন।
তারা হাওরের বুক চিরে অপরূপ এই অলওয়েদার সড়ক নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্যোগী ভূমিকা না থাকলে হাওরের বুকে এ রাস্তা নির্মাণ আদৌ সম্ভব হতোনা বলে তারা মন্তব্য করেন। পরে হেঁটে উপজেলার বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করে প্রতিনিধি দল।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সহোদর মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক নূরু, ইউএনও প্রভাংশু সোম মহান, প্রধান শিক্ষিকা আবেদা আক্তার জাহান, প্রধান শিক্ষক সুভাস চন্দ্র বৈষ্ণব, ওসি মো. জাকির রব্বানী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান মিয়া, জেলা পরিষদের সদস্য সমীর কুমার বৈষ্ণব, সদর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামাল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইব্রাহিম মিয়া, ভাইস প্রিন্সিপাল ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।