ঢাকা ০২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে মৌমাছি নিয়ে কোরআনে সূরা অবতীর্ণ হয়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪৪:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০
  • ২৩৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহান আল্লাহ তায়ালা প্রায় সাড়ে ১৪ শ’ বছর আগে পবিত্র কোরআনে মৌমাছি ও মধু সম্পর্কে যা বলেছেন, আধুনিক বিজ্ঞান সেগুলো আজ আবিষ্কার করছে।

মৌমাছি ও মধু উৎপাদন বিষয়ে আল কোরআন যে ব্যাখ্যা দিয়েছে-

মৌমাছি মহান আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি। যাকে আরবিতে বলা হয় ‘নাহল’। পবিত্র কোরআনে ‘নাহল’ নামে একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটি পবিত্র কোরআনের ১৬তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৮টি। এই সূরার ৬৮ আয়াতের থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে।

আমরা আগে জানতাম মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে বিভিন্ন ফুল থেকে অতঃপর তা মৌচাকে মজুদ করে রাখে সরাসরি। আসলে তা নয়, বিজ্ঞান কিছুদিন আগে প্রমাণ করেছে মৌমাছির শরীর থেকে মধু বের হয়। অথচ পবিত্র কোরআন প্রায় সাড়ে ১৪ শ’ বছর আগেই বলে দিয়েছে মধু মৌমাছির শরীর থেকে বের হয়।

পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে,

وَأَوْحَى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ

অর্থ: ‘আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেন: পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরি কর। (সূরা: নাহল, আয়াত: ৬৮)।

ثُمَّ كُلِي مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلاً يَخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

অর্থ: এরপর সব প্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।’ (সূরা: নাহল, আয়াত: ৬৯)।

মৌমাছি আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট মধু আহরণ করে। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মধু খেতে খুব ভালোবাসতেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ১২১)।

মৌমাছিরা দেখতে খুব ছোট একটি প্রাণী। তবে এরা খুবই পরিশ্রমী হয়। পবিত্র কোরআনে এই প্রাণীকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এই প্রাণীটি ফুলের রস মুখে নিয়ে, সেটা থেকে জলীয় অংশ দূর করে শতভাগ ভেজালমুক্ত এক ফোঁটা মধু তৈরি করতে যে শ্রম ও সময় ব্যয় করে সেটা বিস্ময়কর! এক পাউন্ড মধু বানাতে ৫৫০ মৌমাছিকে প্রায় ২০ লাখ ফুলে ভ্রমণ করতে হয়! আবার এক পাউন্ড মধু সংগ্রহ করতে একটি কর্মী মৌমাছিকে প্রায় ১৪.৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। যা দিয়ে পৃথিবীকে তিনবার প্রদক্ষিণ করা সম্ভব।

সায়েন্স টাইমসের মতে, পৃথিবীতে যত রকমের চাষ মানুষ করে থাকে তার ৭০ শতাংশ নির্ভর করে মৌমাছির ওপর। যদি মৌমাছি ফুলে ফুলে উড়ে মধু আহরণ না করে, তাহলে তাদের গায়ে ফুলের পরাগরেণু লাগবে না। সেই রেণু অন্য ফুলের গায়ে না লাগলে হবে না পরাগায়ণ। খুব কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে আমাদের চেনাজানা কোনো গাছের অস্তিত্ব আর থাকবে না। আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন, ‘মৌমাছি যদি না থাকে, তাহলে মানুষ নিশ্চিহ্ন হতে সময় লাগবে চার বছর।’

কোরআন আরো বলেছে মধুর ওষুধিগুণের কথা। আজ আমরা জেনেছি মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর খাদ্যগুণ, আছে প্রচুর ভিটামিন কে আর ফ্রুক্টোজ। আরো আছে মাঝারি এন্টিসেপ্টিক গুণ। কেটে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া যায়গায় মধু লাগিয়ে রাখলে কোনো রকম ইফেকশান হয় না। বরং কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বালা পোড়া ভাব কমে যায়।

মধু হচ্ছে  ওষুধ এবং খাদ্য উভয়ই। মধুকে বলা হয়- বিররে এলাহি ও তিব্বে নব্বী। অর্থাৎ খোদায়ী চিকিৎসা ও নবী করিম (সা.) এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত। সূরা মুহাম্মদ এর ১৫ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার এরশাদ হচ্ছে- ‘জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে।’

খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোনো বিশেষ অঞ্চলে কোনো বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়।

মধু সাধারণত তরল আকারে থাকে তাই একে পানীয় বলা হয়। মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ও তৃপ্তিদায়ক, তেমনি রোগ ব্যাধির জন্যও ফলদায়ক ব্যবস্থাপত্র। কেন হবে না, স্রষ্টার ভ্রাম্যমাণ মেশিন সর্বপ্রকার ফল-ফুল থেকে বলকারক রস ও পবিত্র নির্যাস বের করে সুরক্ষিত গৃহে সঞ্চিত রাখে।

মধুর আরো একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য এই যে, নিজেও নষ্ট হয় না এবং অন্যান্য বস্তুকে দীর্ঘকাল পর্যন্ত নষ্ট হতে দেয় না। এ কারণেই হাজারো বছর ধরে চিকিৎসকরা একে অ্যালকোহল এর স্থলে ব্যবহার করে আসছেন। মধু বিরেচক এবং পেট থেকে দূষিত পদার্থ অপসারক।

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে কোনো এক সাহাবি তার ভাইয়ের অসুখের বিবরণ দিলে তিনি তাকে মধু পান করানোর পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় দিনও এসে আবার সাহাবি বললেন- অসুখ বহাল রয়েছে। তিনি আবারো একই পরামর্শ দিলেন। তৃতীয় দিনও যখন সংবাদ এল যে, অসুখের কোনো পার্থক্য হয়নি, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহর উক্তি নিঃসন্দেহে সত্য, তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যাবাদী। উদ্দেশ্য এই যে, ওষুধের কোনো দোষ নেই। রোগীর বিশেষ মেজাজের কারণে ওষুধ দ্রুত কাজ করেনি। এরপর রোগীকে আবার মধু পান করানো হয় এবং সে সুস্থ হয়ে উঠে।

মধুর নিরাময় শক্তি বিরাট ও সতন্ত্র ধরনের। কিছু সংখ্যক আল্লাহ ওয়ালা বুজর্গ ব্যক্তি এমনো রয়েছেন, যারা মধু সব রোগের প্রতিষেধক হওয়ার ব্যাপারে নিঃসন্দেহ। তারা ফোঁড়া ও চোখের চিকিৎসাও মধুর মাধ্যমে করেন। দেহের অন্যান্য রোগেরও চিকিৎসা মধুর দ্বারা করেন।

হজরত ইবনে ওমর (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তার শরীরে ফোঁড়া বের হলেও তিনি তাতে মধুর প্রলেপ দিয়ে চিকিৎসা করতেন। এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কি বলেননি যে, তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। (কুরতুবী)।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যে কারণে মৌমাছি নিয়ে কোরআনে সূরা অবতীর্ণ হয়েছে

আপডেট টাইম : ০৬:৪৪:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহান আল্লাহ তায়ালা প্রায় সাড়ে ১৪ শ’ বছর আগে পবিত্র কোরআনে মৌমাছি ও মধু সম্পর্কে যা বলেছেন, আধুনিক বিজ্ঞান সেগুলো আজ আবিষ্কার করছে।

মৌমাছি ও মধু উৎপাদন বিষয়ে আল কোরআন যে ব্যাখ্যা দিয়েছে-

মৌমাছি মহান আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি। যাকে আরবিতে বলা হয় ‘নাহল’। পবিত্র কোরআনে ‘নাহল’ নামে একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটি পবিত্র কোরআনের ১৬তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৮টি। এই সূরার ৬৮ আয়াতের থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে।

আমরা আগে জানতাম মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে বিভিন্ন ফুল থেকে অতঃপর তা মৌচাকে মজুদ করে রাখে সরাসরি। আসলে তা নয়, বিজ্ঞান কিছুদিন আগে প্রমাণ করেছে মৌমাছির শরীর থেকে মধু বের হয়। অথচ পবিত্র কোরআন প্রায় সাড়ে ১৪ শ’ বছর আগেই বলে দিয়েছে মধু মৌমাছির শরীর থেকে বের হয়।

পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে,

وَأَوْحَى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ

অর্থ: ‘আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেন: পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরি কর। (সূরা: নাহল, আয়াত: ৬৮)।

ثُمَّ كُلِي مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلاً يَخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

অর্থ: এরপর সব প্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।’ (সূরা: নাহল, আয়াত: ৬৯)।

মৌমাছি আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট মধু আহরণ করে। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মধু খেতে খুব ভালোবাসতেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ১২১)।

মৌমাছিরা দেখতে খুব ছোট একটি প্রাণী। তবে এরা খুবই পরিশ্রমী হয়। পবিত্র কোরআনে এই প্রাণীকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এই প্রাণীটি ফুলের রস মুখে নিয়ে, সেটা থেকে জলীয় অংশ দূর করে শতভাগ ভেজালমুক্ত এক ফোঁটা মধু তৈরি করতে যে শ্রম ও সময় ব্যয় করে সেটা বিস্ময়কর! এক পাউন্ড মধু বানাতে ৫৫০ মৌমাছিকে প্রায় ২০ লাখ ফুলে ভ্রমণ করতে হয়! আবার এক পাউন্ড মধু সংগ্রহ করতে একটি কর্মী মৌমাছিকে প্রায় ১৪.৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। যা দিয়ে পৃথিবীকে তিনবার প্রদক্ষিণ করা সম্ভব।

সায়েন্স টাইমসের মতে, পৃথিবীতে যত রকমের চাষ মানুষ করে থাকে তার ৭০ শতাংশ নির্ভর করে মৌমাছির ওপর। যদি মৌমাছি ফুলে ফুলে উড়ে মধু আহরণ না করে, তাহলে তাদের গায়ে ফুলের পরাগরেণু লাগবে না। সেই রেণু অন্য ফুলের গায়ে না লাগলে হবে না পরাগায়ণ। খুব কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে আমাদের চেনাজানা কোনো গাছের অস্তিত্ব আর থাকবে না। আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন, ‘মৌমাছি যদি না থাকে, তাহলে মানুষ নিশ্চিহ্ন হতে সময় লাগবে চার বছর।’

কোরআন আরো বলেছে মধুর ওষুধিগুণের কথা। আজ আমরা জেনেছি মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর খাদ্যগুণ, আছে প্রচুর ভিটামিন কে আর ফ্রুক্টোজ। আরো আছে মাঝারি এন্টিসেপ্টিক গুণ। কেটে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া যায়গায় মধু লাগিয়ে রাখলে কোনো রকম ইফেকশান হয় না। বরং কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বালা পোড়া ভাব কমে যায়।

মধু হচ্ছে  ওষুধ এবং খাদ্য উভয়ই। মধুকে বলা হয়- বিররে এলাহি ও তিব্বে নব্বী। অর্থাৎ খোদায়ী চিকিৎসা ও নবী করিম (সা.) এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত। সূরা মুহাম্মদ এর ১৫ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার এরশাদ হচ্ছে- ‘জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে।’

খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোনো বিশেষ অঞ্চলে কোনো বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়।

মধু সাধারণত তরল আকারে থাকে তাই একে পানীয় বলা হয়। মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ও তৃপ্তিদায়ক, তেমনি রোগ ব্যাধির জন্যও ফলদায়ক ব্যবস্থাপত্র। কেন হবে না, স্রষ্টার ভ্রাম্যমাণ মেশিন সর্বপ্রকার ফল-ফুল থেকে বলকারক রস ও পবিত্র নির্যাস বের করে সুরক্ষিত গৃহে সঞ্চিত রাখে।

মধুর আরো একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য এই যে, নিজেও নষ্ট হয় না এবং অন্যান্য বস্তুকে দীর্ঘকাল পর্যন্ত নষ্ট হতে দেয় না। এ কারণেই হাজারো বছর ধরে চিকিৎসকরা একে অ্যালকোহল এর স্থলে ব্যবহার করে আসছেন। মধু বিরেচক এবং পেট থেকে দূষিত পদার্থ অপসারক।

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে কোনো এক সাহাবি তার ভাইয়ের অসুখের বিবরণ দিলে তিনি তাকে মধু পান করানোর পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় দিনও এসে আবার সাহাবি বললেন- অসুখ বহাল রয়েছে। তিনি আবারো একই পরামর্শ দিলেন। তৃতীয় দিনও যখন সংবাদ এল যে, অসুখের কোনো পার্থক্য হয়নি, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহর উক্তি নিঃসন্দেহে সত্য, তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যাবাদী। উদ্দেশ্য এই যে, ওষুধের কোনো দোষ নেই। রোগীর বিশেষ মেজাজের কারণে ওষুধ দ্রুত কাজ করেনি। এরপর রোগীকে আবার মধু পান করানো হয় এবং সে সুস্থ হয়ে উঠে।

মধুর নিরাময় শক্তি বিরাট ও সতন্ত্র ধরনের। কিছু সংখ্যক আল্লাহ ওয়ালা বুজর্গ ব্যক্তি এমনো রয়েছেন, যারা মধু সব রোগের প্রতিষেধক হওয়ার ব্যাপারে নিঃসন্দেহ। তারা ফোঁড়া ও চোখের চিকিৎসাও মধুর মাধ্যমে করেন। দেহের অন্যান্য রোগেরও চিকিৎসা মধুর দ্বারা করেন।

হজরত ইবনে ওমর (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তার শরীরে ফোঁড়া বের হলেও তিনি তাতে মধুর প্রলেপ দিয়ে চিকিৎসা করতেন। এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কি বলেননি যে, তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। (কুরতুবী)।