হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের হাওরের অপরূপ সৌন্দর্যের ছবি প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ পড়ে । এগুলো দেখে দার্জিলিং, আমেরিকা, কানাডা কিংবা অন্য কোনও দেশের মনে হলেও আদতে তা কিন্তু বাংলাদেশর এবং কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চল। এসব ছবি দেখে করোনাভাইরাস মহামারিতেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা এখানে বেড়াতে আসছেন।
কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চল যেন কূলহীন সাগর। দ্বীপের মতো ভেসে আছে চারপাশের গ্রাম। বিশাল জলরাশির মাঝ দিয়ে দিগন্তজোড়া সড়ক মেলে ধরেছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা চিত্রকর্ম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিতে রয়েছে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা।
বৈরাটি থেকে আসা আকাশ আহমেদ লাদেন ‘ফেসবুকে হাওরের বিভিন্ন ছবি দেখে বেড়ানোর জন্য মন ব্যাকুল ছিল। এখানে এসে মনে হচ্ছে, দেশের বাইরে কোথাও ভ্রমণে বেরিয়েছি বুঝি! হাওরের বুক চিরে থাকা এই রাস্তাগুলো আরও বেশি করে হাওরপ্রেমী করে তুলেছে মনটা।’
ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম উপজেলায় ১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ‘অল ওয়েদার রোড’। এর মাধ্যমে ৪৭ কিলোমিটার উঁচু পাকা সড়ক ও ৩৫ কিলোমিটার সাবমার্সেবল সড়ক এবং দৃষ্টিনন্দন সেতু ধরে সারাবছর যাতায়াত করে মানুষ। অল ওয়েদার সড়কের দু’পাশে থই থই পানি। বর্ষায় আকাশে সাদা মেঘের ভেলা মন কাড়ে। মেঘ আর জলের মিতালী এককথায় মনোরম। হাওরের এমন সৌন্দর্য আকৃষ্ট করছে পর্যটকদের।
ইতিহাস-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ কিশোরগঞ্জ জেলার কীর্তিমানদের তালিকায় আছেন উপমহাদেশের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতী, বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়, গুরুদয়াল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা কৈবর্তরাজ গুরুদয়াল সরকার, আনন্দ মোহন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আনন্দ মোহন বসু ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের মতো দেশবরেণ্য অনেক গুণীজন। তাদের কেউ কেউ জন্মেছেন হাওর পাড়েই।
কিশোরগঞ্জের হাওরে আহমেদ রাহেল বন্ধুদের নিয়ে বাইক দিয়ে ঘুরতে এসেছেন কিশোরগঞ্জের হাওরে। তার কথায়, এখানকার সৌন্দর্যের ফারাক অন্য জায়গার তুলনায় দিন-রাতের মতো। বালিখোলা দিয়ে ট্রলার দিয়ে হাওরে এসে এখন পিচ ঢালা পথে হেঁটে হাওর ঘুরছি। এ অভিজ্ঞতা অভূতপূর্ব। কিশোরগঞ্জের হাওরে এলে সব প্রকৃতিপ্রেমীরই দারুণ ভালো লাগবে।’
কিশোরগঞ্জ ৪ (ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তেীফিক হাওরে আগত পর্যটকদের উদ্দেশ্যে বলেন যারা হাওরে আসবেন তারা যেন সাতার না জানলে কোনক্রমেই হাওরের পানিতে না নামেন। সেই সাথে কেউ যেন হাওরের রাস্তায় মোটরবাইক না আনেন সে বিষয়েও তিনি কঠোর নিষেধাগ্গা আরোপ করেন। তিনি আরো বলেন অনাকাংখিত মৃত্যু কখনোই কারোরই কাম্য নয়, হাওর সবার জন্য উনমুক্ত। কিন্তু সর্তক থাকতে হবে। সর্বোপরি হাওরে আগত দর্শনার্থীদের স্বাধুবাদ এবং সকলের মংগল কামনা করেন তিনি।