ঢাকা ১০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ইটনায় জাতীয় পরিচয়পত্র পরিষেবা স্থানান্তর ও কূট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ইটনায় এ প্লাস ক্যাম্পেইন অবহিত করন সভা অনুষ্ঠিত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে যেসব শর্ত দিলেন পুতিন রান্না শেখাচ্ছেন পড়শী, ঈদে দেখা যাবে অভিনয় আর গানে শিমের রাজ্য সীতাকুণ্ড ২১০ কোটি টাকার শিম উৎপাদন, কৃষকের হাসি জাতিসংঘ, মহাসচিব, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি অবশেষে মায়ের কোলে ফিরল সায়ান হরেদরে সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করতে হবে: মাহফুজ আলম পেঁয়াজের দাম না পেয়ে লোকসানের শঙ্কায় পাবনার চাষিরা পাচারকালে নারী শিশুসহ ১৮ রোহিঙ্গা উদ্ধার, দালাল আটক

পেটের তাগিদে স্কুলছাত্র এখন হোটেল বয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৩৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০
  • ২০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনায় কত কিছইু বদলে গেছে। সেই সাথে বদলে গেছে ষষ্ঠ শ্রেনী পড়ুয়া ছাত্র মুসলিম উদ্দিন (১২) এর জীবন। যে বয়সে তার হাতে থাকবে স্কুলের বই কিন্তু তার পরিবর্তে হাতে টেবিল পরিস্কার এর কাপড় আর পাঁচটি একত্র করা পানিভর্তি গ্লাস। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বৈড়াগিগছ গ্রামের দিনমুজুরের ছেলে মুসলিম উদ্দিন গিতালগছ দ্বী-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র মুসলিমউদ্দিন পেটের তাগিদে এখন হোটেল বয়। করোনার কারণে সংসারে অভাব কিছুটা দূর করার জন্য পড়ালেখা ছেড়ে গত একমাস ধরে হোটেল বয়ের কাজ করছেন স্কুল ছাত্র মুসলিমউদ্দিন। পরিবারের তৃতীয় সন্তান মুসলিম উদ্দিন। ভজনপুর বাজার হাইওয়ে রাস্তার পাশে অলি হোটেলে বাবা ছেলে একসাথে শ্রমিকের কাজ করছে।

জানা গেছে দুই মেয়ে সহ ষষ্ঠ শ্রেনী পড়ুয়া মুসলিম উদ্দিন এর বাবা সলিমউদ্দিন এর ছয় জনের সংসার। দুইবোন আর মুসলিমউদ্দিন গ্রামের কাছাকাছি গিতালগছ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে। বড় বোন সুমি আক্তার (১৬) ঐ স্কুলে দশম শ্রেনীর ছাত্রী, মেজো বোন শিউলি আক্তার (১৫) একই স্কুলে নবম শ্রেনীতে পড়ালেখা করছে। আর মুসলিমউদ্দিন ২০২০ সালের জানুয়ারীতে ঐ স্কুলে ভর্তি হয়েছেন ষষ্ঠ শ্রেনীতে।

সরেজমিনে ভজনপুরের সেই হোটেলে গিয়ে দেখা যায় মুসলিমউদ্দিন পানি ভর্তি কয়েকটি গ্লাস একসাথে করে টেবিলে পানি পরিবেশন করছে। টেবিলের উপর প্লেটগুলো একত্র করছে। মুসলিমউদ্দিন এর কাছে জানতে চাওয়া হল কেন হোটেল বয় এর কাজ করছ? বললো পেটের তাগিদেই হোটেলে কাজ করছি। আমি ক্লাস সিক্সে পড়ালেখা করি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে সংসারে অভাব চলছে। এজন্য বাবা ছেলে একসাথে হোটেলে কাজ করছি। বর্তমানে স্কুল বন্ধ বাবা একাই সংসারে কস্ট করছে তাই বাবার সাথে কাজ করতে এসেছি। বাড়িতে ভাল কিছু খেতে পারিনা। হোটেলের কাজ করতে আমার কস্ট হলেও দুইবেলা খেতে পারছি। কাদোঁ কাঁদো কন্ঠে মুসলিমউদ্দিন বললো বাবার ইচ্ছা আমি পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হবো। কিন্তু অভাবের কারনে বাবার সেই স্বপ্ন কি পূরন হবে? পড়াশুনা করে বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা আমার। কিন্তু আমার বাবা যেদিন হোটেলে কাজ করবেনা সেদিন আমাদের বাসায় কোন খাবার তৈরি হয়না। আর ঈদে নতুন জামাকাপড় কিনে দিতে চেয়েছে আমার হোটেলের মালিক আমার মামা অলি।

মুসলিমউদ্দিন এর বাবা সলিমউদ্দিন (৪২) এর সাথে কথা হলো সেই হোটেলে তিনি জানালো অভাবের সংসার আমার শতবর্ষী মা সলিমা খাতুন ওরফে কালো বেওয়া এখন বয়সের ভাড়ে শয্যাশায়ী। প্রতিনিয়তই তাকে ঔষুধ খাওয়াতে হয় । কোন রকমে আড়াইশতক জমিতে ভিটা বাড়ি করে বসবাস করছি। তবে অভাব অনটন আমার নিত্য সঙ্গী। একদিকে মায়ের ঔষুধের খরচ যোগানো অপরদিকে তিন ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগান দেওয়া এখন রীতিমত আমি দিশেহারা। হার না মেনে আমি সংসার যুদ্ধ করছি, ষষ্ট শ্রেনী পড়ুয়া মুসলিমউদ্দিন আমার একমাত্র ছেলে। তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। তবুও সংসারের খরচ যোগাতে এখন ছেলেকে নিয়ে একই হোটেলে কাজ করছি। করোনাকালে কাজের সন্ধানে ঘুরে বেরিয়েছি কিন্তু করোনায় সবকিছু বন্ধ ছিল শেষ পর্যন্ত শ্যালকের হোটেলে একটা কাজ পেয়েছি। এর আগে জীবনের বেশির ভাগ সময় পাথর শ্রমিকের কাজ করেছিলম, কখনো দিনমুজুরেরও কাজ করেছি হঠাৎ করে করোনা ভাইরাস কারণে কোন কাজ না পেয়ে সংসারে অভাব আরও বেড়ে যায়। তাই ছোট শ্যালক অলির হোটেলে শ্রমিকে কাজ নেই। বাবা ও ছেলে এখন হোটেল শ্রমিকের কাজ করছি। অভাবের সংসার আমার ত্রিমুখি চাপে পড়েছি মেয়েদের পড়ালেখার খরচ, মায়ের বয়স শত বছর পার হয়েছে প্রতিনিয়ত ঔষধ খাওয়াতে হয় এদিকে আবার আশা এনজিও হতে ঋন করেছি। করোনার কারনে বাইরের কাজ বন্ধ হয়েছে এজন্যই আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি হোটেলের কাজে। সামনে কুরবানী ঈদ নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য আমার নেই তাই বাবা ছেলে একসাথে হোটেলে কাজ করছি। সংসারের বোঝা সইতে না পেরে প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা এনজিও হতে ঋন গ্রহন করি যদিও আমার হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয় ঋন পরিশোধ করতে। সরকার যদি আমার ছেলেমেয়েদের আর্থীক সহযোগীতা করে তাহলে হয়তো তাদের পড়ালেখা চলবে। তা না হলে ভবিষৎ এ হয়তো আমার পক্ষে আর তাদের পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব হবে না।

স্কুল ছাত্র মুসলিমউদ্দিন এর বড় বোন দশম শ্রেনী পড়ুয়া ছাত্রী সুমি আক্তার বলেন আসলে আমার বাবা যুদ্ধ করে সংসারটাকে টিকিয়ে রেখেছে। বাবার কস্ট দেখে আমরা দামি কোন কিছু বাবার কাছে চাই না। শেষ পর্যন্ত বাবা আমার একমাত্র ছোট ভাই মুসলিমউদ্দিন কে সাথে নিয়ে বাবা হোটেলের কাজ করছে। আমার মা মহসিনা বেগম (৩৮) পাথর শ্রমিকের কাজ করেছিল গত তিন বছর আগে। কিন্তু দুই বছর পূর্বে পাথর ভাঙ্গা মেশিনের হেন্ডেল রডের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পায়। তারপর চিকিৎসা নিতে গিয়ে ডাক্তার বলেছে আগামি পাঁচ বছর মাথায় কোন প্রকার ওজন বহন করা যাবেনা। সেই থেকে মা আর পাথর ভাঙ্গার কাজে যেতে পারেনা। তারপর থেকে সংসারে আমাদের অভাব আরও বেড়ে যায়। এখনো মাঝে মাঝে মায়ের মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা হয়। তখন মায়ের ঔষধ কিনে দেয় বাবা।

হোটেল মালিক অলি জানান, আসলে করোনার কারণে তাদের বাড়িতে অভাব অনটন চলছে এজন্য পরিবারটিকে বাঁচাতে আমি বাবা ও ছেলেকে কাজে লাগিয়েছি। মুসলিম উদ্দিন আমার ভাগিনা তার সাথে বেতনের কোন চুক্তি হয়নি। বাবা ছেলে একসাথে আমার হোটেলে কাজ করছে। স্কুল খুললে আমি মুসলিম উদ্দিনকে বাড়ি পাঠিয়ে দিবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইটনায় জাতীয় পরিচয়পত্র পরিষেবা স্থানান্তর ও কূট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

পেটের তাগিদে স্কুলছাত্র এখন হোটেল বয়

আপডেট টাইম : ০২:৩৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনায় কত কিছইু বদলে গেছে। সেই সাথে বদলে গেছে ষষ্ঠ শ্রেনী পড়ুয়া ছাত্র মুসলিম উদ্দিন (১২) এর জীবন। যে বয়সে তার হাতে থাকবে স্কুলের বই কিন্তু তার পরিবর্তে হাতে টেবিল পরিস্কার এর কাপড় আর পাঁচটি একত্র করা পানিভর্তি গ্লাস। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বৈড়াগিগছ গ্রামের দিনমুজুরের ছেলে মুসলিম উদ্দিন গিতালগছ দ্বী-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র মুসলিমউদ্দিন পেটের তাগিদে এখন হোটেল বয়। করোনার কারণে সংসারে অভাব কিছুটা দূর করার জন্য পড়ালেখা ছেড়ে গত একমাস ধরে হোটেল বয়ের কাজ করছেন স্কুল ছাত্র মুসলিমউদ্দিন। পরিবারের তৃতীয় সন্তান মুসলিম উদ্দিন। ভজনপুর বাজার হাইওয়ে রাস্তার পাশে অলি হোটেলে বাবা ছেলে একসাথে শ্রমিকের কাজ করছে।

জানা গেছে দুই মেয়ে সহ ষষ্ঠ শ্রেনী পড়ুয়া মুসলিম উদ্দিন এর বাবা সলিমউদ্দিন এর ছয় জনের সংসার। দুইবোন আর মুসলিমউদ্দিন গ্রামের কাছাকাছি গিতালগছ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে। বড় বোন সুমি আক্তার (১৬) ঐ স্কুলে দশম শ্রেনীর ছাত্রী, মেজো বোন শিউলি আক্তার (১৫) একই স্কুলে নবম শ্রেনীতে পড়ালেখা করছে। আর মুসলিমউদ্দিন ২০২০ সালের জানুয়ারীতে ঐ স্কুলে ভর্তি হয়েছেন ষষ্ঠ শ্রেনীতে।

সরেজমিনে ভজনপুরের সেই হোটেলে গিয়ে দেখা যায় মুসলিমউদ্দিন পানি ভর্তি কয়েকটি গ্লাস একসাথে করে টেবিলে পানি পরিবেশন করছে। টেবিলের উপর প্লেটগুলো একত্র করছে। মুসলিমউদ্দিন এর কাছে জানতে চাওয়া হল কেন হোটেল বয় এর কাজ করছ? বললো পেটের তাগিদেই হোটেলে কাজ করছি। আমি ক্লাস সিক্সে পড়ালেখা করি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে সংসারে অভাব চলছে। এজন্য বাবা ছেলে একসাথে হোটেলে কাজ করছি। বর্তমানে স্কুল বন্ধ বাবা একাই সংসারে কস্ট করছে তাই বাবার সাথে কাজ করতে এসেছি। বাড়িতে ভাল কিছু খেতে পারিনা। হোটেলের কাজ করতে আমার কস্ট হলেও দুইবেলা খেতে পারছি। কাদোঁ কাঁদো কন্ঠে মুসলিমউদ্দিন বললো বাবার ইচ্ছা আমি পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হবো। কিন্তু অভাবের কারনে বাবার সেই স্বপ্ন কি পূরন হবে? পড়াশুনা করে বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা আমার। কিন্তু আমার বাবা যেদিন হোটেলে কাজ করবেনা সেদিন আমাদের বাসায় কোন খাবার তৈরি হয়না। আর ঈদে নতুন জামাকাপড় কিনে দিতে চেয়েছে আমার হোটেলের মালিক আমার মামা অলি।

মুসলিমউদ্দিন এর বাবা সলিমউদ্দিন (৪২) এর সাথে কথা হলো সেই হোটেলে তিনি জানালো অভাবের সংসার আমার শতবর্ষী মা সলিমা খাতুন ওরফে কালো বেওয়া এখন বয়সের ভাড়ে শয্যাশায়ী। প্রতিনিয়তই তাকে ঔষুধ খাওয়াতে হয় । কোন রকমে আড়াইশতক জমিতে ভিটা বাড়ি করে বসবাস করছি। তবে অভাব অনটন আমার নিত্য সঙ্গী। একদিকে মায়ের ঔষুধের খরচ যোগানো অপরদিকে তিন ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগান দেওয়া এখন রীতিমত আমি দিশেহারা। হার না মেনে আমি সংসার যুদ্ধ করছি, ষষ্ট শ্রেনী পড়ুয়া মুসলিমউদ্দিন আমার একমাত্র ছেলে। তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। তবুও সংসারের খরচ যোগাতে এখন ছেলেকে নিয়ে একই হোটেলে কাজ করছি। করোনাকালে কাজের সন্ধানে ঘুরে বেরিয়েছি কিন্তু করোনায় সবকিছু বন্ধ ছিল শেষ পর্যন্ত শ্যালকের হোটেলে একটা কাজ পেয়েছি। এর আগে জীবনের বেশির ভাগ সময় পাথর শ্রমিকের কাজ করেছিলম, কখনো দিনমুজুরেরও কাজ করেছি হঠাৎ করে করোনা ভাইরাস কারণে কোন কাজ না পেয়ে সংসারে অভাব আরও বেড়ে যায়। তাই ছোট শ্যালক অলির হোটেলে শ্রমিকে কাজ নেই। বাবা ও ছেলে এখন হোটেল শ্রমিকের কাজ করছি। অভাবের সংসার আমার ত্রিমুখি চাপে পড়েছি মেয়েদের পড়ালেখার খরচ, মায়ের বয়স শত বছর পার হয়েছে প্রতিনিয়ত ঔষধ খাওয়াতে হয় এদিকে আবার আশা এনজিও হতে ঋন করেছি। করোনার কারনে বাইরের কাজ বন্ধ হয়েছে এজন্যই আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি হোটেলের কাজে। সামনে কুরবানী ঈদ নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য আমার নেই তাই বাবা ছেলে একসাথে হোটেলে কাজ করছি। সংসারের বোঝা সইতে না পেরে প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা এনজিও হতে ঋন গ্রহন করি যদিও আমার হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয় ঋন পরিশোধ করতে। সরকার যদি আমার ছেলেমেয়েদের আর্থীক সহযোগীতা করে তাহলে হয়তো তাদের পড়ালেখা চলবে। তা না হলে ভবিষৎ এ হয়তো আমার পক্ষে আর তাদের পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব হবে না।

স্কুল ছাত্র মুসলিমউদ্দিন এর বড় বোন দশম শ্রেনী পড়ুয়া ছাত্রী সুমি আক্তার বলেন আসলে আমার বাবা যুদ্ধ করে সংসারটাকে টিকিয়ে রেখেছে। বাবার কস্ট দেখে আমরা দামি কোন কিছু বাবার কাছে চাই না। শেষ পর্যন্ত বাবা আমার একমাত্র ছোট ভাই মুসলিমউদ্দিন কে সাথে নিয়ে বাবা হোটেলের কাজ করছে। আমার মা মহসিনা বেগম (৩৮) পাথর শ্রমিকের কাজ করেছিল গত তিন বছর আগে। কিন্তু দুই বছর পূর্বে পাথর ভাঙ্গা মেশিনের হেন্ডেল রডের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পায়। তারপর চিকিৎসা নিতে গিয়ে ডাক্তার বলেছে আগামি পাঁচ বছর মাথায় কোন প্রকার ওজন বহন করা যাবেনা। সেই থেকে মা আর পাথর ভাঙ্গার কাজে যেতে পারেনা। তারপর থেকে সংসারে আমাদের অভাব আরও বেড়ে যায়। এখনো মাঝে মাঝে মায়ের মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা হয়। তখন মায়ের ঔষধ কিনে দেয় বাবা।

হোটেল মালিক অলি জানান, আসলে করোনার কারণে তাদের বাড়িতে অভাব অনটন চলছে এজন্য পরিবারটিকে বাঁচাতে আমি বাবা ও ছেলেকে কাজে লাগিয়েছি। মুসলিম উদ্দিন আমার ভাগিনা তার সাথে বেতনের কোন চুক্তি হয়নি। বাবা ছেলে একসাথে আমার হোটেলে কাজ করছে। স্কুল খুললে আমি মুসলিম উদ্দিনকে বাড়ি পাঠিয়ে দিবো।