ঢাকা ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩২:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০
  • ১৮৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রয়লার মুরগির দাম নিয়ে দেশের বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। চাহিদা বাড়লে হুটহাট দাম বেড়ে যাচ্ছে। আবার চাহিদা কমলে দাম কমে যাচ্ছে। গত মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই পোল্ট্রি মুরগির দামে এই অস্থিরতা বিরাজ করছে।

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এখন চাহিদা কিছুটা কমায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকায় নেমে এসেছে। অথচ কিছুদিন আগেও বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকাই ছিল।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে। করোনার প্রকোপের শুরুতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি বেশ কমে যায়। ফলে কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকায় নেমে আসে।

মাংসের মুরগির পাশাপাশি বড় দরপতন হয় বাচ্চা মুরগির। এ পরিস্থিতিতে অনেক খামারি বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এতে বাজারে ব্রয়লার মুরগির একধরনের সংকট দেখা দেয়। যার প্রভাবে হু হু করে বাড়তে থাকে দাম। দফায় দফায় দাম বেড়ে রোজার ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি রেকর্ড ২০০ টাকা স্পর্শ করে।

ঈদের পর চাহিদা কমায় আবার দাম কমতে থাকে। ফলে জুনের শুরুর দিকে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকায় নেমে আসে। অবশ্য এ দাম খুব বেশি দিন স্থির হয়নি। ঢাকায় মানুষের যাতায়াত বাড়ায় আবার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। তবে এখন আবার দাম কমতে শুরু করেছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবির) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর খুচরা বাজারে এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কমে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির দাম কমার তথ্য দিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনজুর মোরশেদ খান জানান, বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ বেড়েছে। বিপরীতে চাহিদা কিছুটা কমেছে। এ কারণে দামও কমেছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে মুরগির বাচ্চার দাম কমে ১-২টাকা পিস বিক্রি হয়েছে। এ কারণে অনেক খামারি বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। যার প্রভাবে রোজার ঈদের আগে চাহিদা বাড়লে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যায়।

‘দাম বাড়ায় অনেকে আবার বাচ্চা উৎপাদন শুরু করে। সেই বাচ্চা এখন বড় হয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ফলে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু কোরবানির ঈদ কাছাকাছি চলে আসায় চাহিদা কিছুটা কমেছে। এ কারণে দাম কমেছে।’

রামপুরার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। কয়েকদিন ধরে পাইকারিতে দাম কমেছে। এ কারণে এখন ১৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে পারছি।

তিনি বলেন, রোজার ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বাড়ে। কিন্তু কোরবানির ঈদের আগে চিত্র থাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোরবানির ঈদের আগে বাজারের মাংসের চাহিদা কমে যায়। কারণ, যারা কোরবানি দেয় না তাদের ঘরেও কোরবানির প্রচুর মাংস যায়। আবার যারা কোরবানি দেয় তারা ফ্রিজে থাকা মাংস খেয়ে ফ্রিজ খালি করেন। যে কারণে কোরবানির ঈদের সময় বাজারের মাংসের দাম কমে যায়।

রামপুরার বাসিন্দা মামুন বলেন, কিছুদিন আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) তা ১৩৫ টাকা নিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম আর বাড়বে না।

যাত্রাবাড়ীর ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুব কম। বরং সামনে দাম আরও কমতে পারে। এখন তো কিছু ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। দাম না কমলে এক সপ্তাহ পরে বিক্রি আরও কমে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকা

আপডেট টাইম : ১০:৩২:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রয়লার মুরগির দাম নিয়ে দেশের বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। চাহিদা বাড়লে হুটহাট দাম বেড়ে যাচ্ছে। আবার চাহিদা কমলে দাম কমে যাচ্ছে। গত মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই পোল্ট্রি মুরগির দামে এই অস্থিরতা বিরাজ করছে।

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এখন চাহিদা কিছুটা কমায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকায় নেমে এসেছে। অথচ কিছুদিন আগেও বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকাই ছিল।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে। করোনার প্রকোপের শুরুতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি বেশ কমে যায়। ফলে কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকায় নেমে আসে।

মাংসের মুরগির পাশাপাশি বড় দরপতন হয় বাচ্চা মুরগির। এ পরিস্থিতিতে অনেক খামারি বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এতে বাজারে ব্রয়লার মুরগির একধরনের সংকট দেখা দেয়। যার প্রভাবে হু হু করে বাড়তে থাকে দাম। দফায় দফায় দাম বেড়ে রোজার ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি রেকর্ড ২০০ টাকা স্পর্শ করে।

ঈদের পর চাহিদা কমায় আবার দাম কমতে থাকে। ফলে জুনের শুরুর দিকে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকায় নেমে আসে। অবশ্য এ দাম খুব বেশি দিন স্থির হয়নি। ঢাকায় মানুষের যাতায়াত বাড়ায় আবার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। তবে এখন আবার দাম কমতে শুরু করেছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবির) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর খুচরা বাজারে এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কমে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির দাম কমার তথ্য দিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনজুর মোরশেদ খান জানান, বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ বেড়েছে। বিপরীতে চাহিদা কিছুটা কমেছে। এ কারণে দামও কমেছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে মুরগির বাচ্চার দাম কমে ১-২টাকা পিস বিক্রি হয়েছে। এ কারণে অনেক খামারি বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। যার প্রভাবে রোজার ঈদের আগে চাহিদা বাড়লে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যায়।

‘দাম বাড়ায় অনেকে আবার বাচ্চা উৎপাদন শুরু করে। সেই বাচ্চা এখন বড় হয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ফলে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু কোরবানির ঈদ কাছাকাছি চলে আসায় চাহিদা কিছুটা কমেছে। এ কারণে দাম কমেছে।’

রামপুরার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। কয়েকদিন ধরে পাইকারিতে দাম কমেছে। এ কারণে এখন ১৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে পারছি।

তিনি বলেন, রোজার ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বাড়ে। কিন্তু কোরবানির ঈদের আগে চিত্র থাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোরবানির ঈদের আগে বাজারের মাংসের চাহিদা কমে যায়। কারণ, যারা কোরবানি দেয় না তাদের ঘরেও কোরবানির প্রচুর মাংস যায়। আবার যারা কোরবানি দেয় তারা ফ্রিজে থাকা মাংস খেয়ে ফ্রিজ খালি করেন। যে কারণে কোরবানির ঈদের সময় বাজারের মাংসের দাম কমে যায়।

রামপুরার বাসিন্দা মামুন বলেন, কিছুদিন আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) তা ১৩৫ টাকা নিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম আর বাড়বে না।

যাত্রাবাড়ীর ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুব কম। বরং সামনে দাম আরও কমতে পারে। এখন তো কিছু ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। দাম না কমলে এক সপ্তাহ পরে বিক্রি আরও কমে যাবে।