ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুর সাজা অবৈধ ঘোষণার রায় প্রকাশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০
  • ২৩২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভ্রাম্যমাণ আদালতে (মোবাইল কোর্টে) শিশুদের সাজা দেয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের বিচারকরা রায়ের কপিতে স্বাক্ষর করার পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩১ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করা হয়। বৃহস্পতিবার ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান রায় প্রকাশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

রায়ে ১২১ শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্টে) দেয়া সাজা বাতিল করা হয়েছে।

রায়ে বলা হয়েছে, ‘শিশুর বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগের বিচার শুধু শিশু আদালতেই করতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত দূরের কথা, অধস্তন আদালতের কোনো বিচারক যদি শিশুদের বিচার করেন সেটিও হবে বে-আইনি।’

‘কোনো অপরাধ সংঘটনে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু একত্রে জড়িত থাকলেও শিশুর বিচার শুধু শিশু আদালতই করবে। অন্য কোনো আদালত দণ্ড দিলে তা অবৈধ হবে। শিশুদের মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) কোনো দণ্ড দিতে পারবে না। কারণ, মোবাইল কোর্ট কোনো শিশুকে দণ্ড দিলে সেই দণ্ড সংবিধানের ৩০ এবং ৩৫ অনুচ্ছেদে মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে। ১২১ শিশুকে দণ্ডদানের ক্ষেত্রেও মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।’

এর আগে গত ১১ মার্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালত তার রায়ে বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে একইসময়ে ওই ১২১ শিশুকে যে প্রক্রিয়ায় সাজা দেয়া হয়েছে তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং অমানবিক। একইসঙ্গে এই ধরনের সাজাপ্রদান আমাদের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বহির্বিশ্বে দেশের সুনামকে ব্যাহত করেছে। তাই এখনই তা বন্ধ করতে হবে।’

শিশুদের সাজা বাতিল করে আদালত বলেন, ‘১২১ শিশুর সাজা বাতিলের ফলে তারা যে পুরোপুরি নিষ্পাপ এটা প্রতিষ্ঠিত হলো। ভবিষ্যতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজার ছায়াও যেন তাদের জীবনে না পড়ে।’

২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া দণ্ডে যশোর ও টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২১ শিশুকে মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দেয়া দণ্ড ও আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আদালতের আদেশে পরে এসব শিশুকে মুক্তি দেয়া হয়।

এর আগে “আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দণ্ড’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে হাইকোর্ট শিশুদের মুক্তির নির্দেশ ও রুল জারি করেন। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুর সাজা অবৈধ ঘোষণার রায় প্রকাশ

আপডেট টাইম : ১১:৫৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভ্রাম্যমাণ আদালতে (মোবাইল কোর্টে) শিশুদের সাজা দেয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের বিচারকরা রায়ের কপিতে স্বাক্ষর করার পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩১ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করা হয়। বৃহস্পতিবার ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান রায় প্রকাশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

রায়ে ১২১ শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্টে) দেয়া সাজা বাতিল করা হয়েছে।

রায়ে বলা হয়েছে, ‘শিশুর বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগের বিচার শুধু শিশু আদালতেই করতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত দূরের কথা, অধস্তন আদালতের কোনো বিচারক যদি শিশুদের বিচার করেন সেটিও হবে বে-আইনি।’

‘কোনো অপরাধ সংঘটনে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু একত্রে জড়িত থাকলেও শিশুর বিচার শুধু শিশু আদালতই করবে। অন্য কোনো আদালত দণ্ড দিলে তা অবৈধ হবে। শিশুদের মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) কোনো দণ্ড দিতে পারবে না। কারণ, মোবাইল কোর্ট কোনো শিশুকে দণ্ড দিলে সেই দণ্ড সংবিধানের ৩০ এবং ৩৫ অনুচ্ছেদে মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে। ১২১ শিশুকে দণ্ডদানের ক্ষেত্রেও মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।’

এর আগে গত ১১ মার্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালত তার রায়ে বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে একইসময়ে ওই ১২১ শিশুকে যে প্রক্রিয়ায় সাজা দেয়া হয়েছে তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং অমানবিক। একইসঙ্গে এই ধরনের সাজাপ্রদান আমাদের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বহির্বিশ্বে দেশের সুনামকে ব্যাহত করেছে। তাই এখনই তা বন্ধ করতে হবে।’

শিশুদের সাজা বাতিল করে আদালত বলেন, ‘১২১ শিশুর সাজা বাতিলের ফলে তারা যে পুরোপুরি নিষ্পাপ এটা প্রতিষ্ঠিত হলো। ভবিষ্যতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজার ছায়াও যেন তাদের জীবনে না পড়ে।’

২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া দণ্ডে যশোর ও টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২১ শিশুকে মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দেয়া দণ্ড ও আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আদালতের আদেশে পরে এসব শিশুকে মুক্তি দেয়া হয়।

এর আগে “আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দণ্ড’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে হাইকোর্ট শিশুদের মুক্তির নির্দেশ ও রুল জারি করেন। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।