হাওর বার্তা ডেস্কঃ দশম শ্রেণির পরীক্ষা শেষ হওয়ার ‘আনন্দে’ খানাপিনার পরে গ্রামের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক দল কিশোরের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে ছিল মেয়েটির প্রেমিকও! অভিযোগ, সে-ই পরে শ্বাসরোধ করে মেরেছে ওই কিশোরীকে। তার পর সকলে মিলে ওই কিশোরীকে খেতের মধ্যে গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করে।
তাদের মধ্যে দুজনকে ধরে ফেলেন গ্রামের মানুষ। গণপ্রহারের পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এক কিশোর আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ জানিয়েছে, পরে ধরা পড়েছে দলের বাকি পাঁচ অভিযুক্ত কিশোরও। আগামিকাল মঙ্গলবার অভিযুক্তদের জুভেনাইল আদালতে তোলা হবে।
দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডে দণ্ডিতদের ফাঁসি নিয়ে আইনি চাপানউতোর চলাকালীনই ভারতের আসামে এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানকার বিশ্বনাথ জেলার গোহপুরের রজাবাড়ি এলাকায় ১ নম্বর চকলা গ্রামের বাসিন্দা সাত কিশোর পরীক্ষা শেষের আনন্দে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে খানাপিনার আয়োজন করে। প্রতিবেশী ১২ বছরের কিশোরীকেও তাদের সঙ্গে যোগ দিতে নিয়ে আসে। সে রাতে বাড়ি না-ফেরায় পরিবারের মানুষ খোঁজ শুরু করেন। শনিবার খেতের পাশে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মেয়েটির দেহ পাওয়া যায়। প্রথমে এটি আত্মহত্যার ঘটনা মনে হলেও, ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা যায়, মেয়েটিকে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
মেয়েটির পরিবার সাত কিশোরের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে। তাদের মধ্যে পাঁচ জন পালিয়ে গেলেও দুই কিশোরকে পরে গ্রামবাসীরাই খুঁজে বার করেন। তাদের মধ্যে এক জন মেয়েটির প্রেমিক বলে জানা গিয়েছে। অন্য জন মেয়েটিকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিল। দুজনকেই বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। মেয়েটির ধর্ষক প্রেমিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রবিবার তেজপুরের হাসপাতালে আনা হয়েছে।
অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেয়েটির প্রেমিক দুই বন্ধুর উপরে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসার ভার দিয়েছিল। তারাই প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটি সে কথা প্রেমিককে জানালে প্রেমিক রেগে মেয়েটিকে ফের ধর্ষণ করে ও শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। দলের অন্য দুই কিশোর ধর্ষণ করেছে কি না, নিশ্চিত নয় পুলিশ। কিন্তু তারা মৃতদেহ গাছে ঝোলাতে সাহায্য করেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ময়না-তদন্তের পরে দেহটি সমাধিস্থ করেছেন গ্রামবাসীরা। অভিযুক্ত কিশোরদের চরম শাস্তির দাবিতে সোমবার গোহপুর থানা ঘেরাও করেন গ্রামের মানুষ। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে এলাকার ছাত্রীরা মিছিল বার করে সেখানকার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা।