হাওর বার্তা ডেস্কঃ অটিজম বা অটিজম স্পেক্ট্রাম ডিসঅর্ডার! এটি আসলে কী! এটি এক ধরনের মানসিক বিকাশগত সমস্যা। যা সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে সামাজিক কার্যকলাপ, আচরণ, যোগাযোগ ও পারস্পারিক মিথিষ্ক্রিয়া বা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে।
জন্মের প্রথম ৩ বছরের মধ্যেই সাধারণত এ সমস্যা ধরা পড়ে। আমাদের দেশে প্রতি ১০ হাজার শিশুর মাঝে কমপক্ষে ১৭ জন শিশু অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে এবং প্রতি ১০ হাজার ছেলে শিশুর মাঝে ২৪ জন ছেলে শিশু ও প্রতি ১০ হাজার মেয়ে শিশুর মাঝে প্রায় ১০ জন মেয়ে শিশু অটিজমে আক্রান্ত।
কারণ: অটিজম কেন হয়, তা আসলে এখনো পরিষ্কারভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তবে ধারণা করা হয় যে, কিছু জেনেটিক এবং পরিবেশগত কারণে অটিজম দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল বা কিছু মৃগী রোগের ওষুধ সেবন করলে, গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত স্থূলতা বা ডায়বেটিস রোগে বা রুবেলায় আক্রান্ত হলে শিশুর অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। মেয়ে শিশুর চেয়ে ছেলে শিশুর অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার হার প্রায় ৪ গুণ বেশি। বেশি বয়সে সন্তান নিলে শিশুর অটিজমের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। শহুরে, শিক্ষিত, ধনী পরিবারে অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
চিকিৎসা ও প্রতিকার: শিশুর মাঝে অটিজমের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করলে অটিজমের অনেক জটিলতাই এড়ানো সম্ভব। যোগাযোগ ও আচরণগত থেরাপি, অ্যাপ্লায়েড বিহেভিয়ারেল এনালাইসিস, অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ থেরাপি, সেনসরি ইন্টিগ্রেশন থেরাপি প্রভৃতির মাধ্যমে অটিজম ও এর জটিলতার চিকিৎসা সম্ভব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির Institute for Paediatric Neurodisorder & Autism এ এখন অটিজম আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সর্বোপরি সচেতনতা ও শুরুতেই রোগ নির্ণয় সম্ভব হলে অটিজম জটিলতা অনেকাংশে পরিহার করা সম্ভব। সবশেষে সবার সুস্থতা কামনা করছি।
লেখক: এমবিবিএস (ঢামেক), বিসিএস (স্বাস্থ্য), মেডিকেল অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডুমুরিয়া, খুলনা।