ঢাকা ০৩:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেবা নিশ্চিতে বীমাকে প্রযুক্তিনির্ভর করুন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫০:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০
  • ১৯৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বীমাকে প্রযুক্তিনির্ভর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দুঃসময়ে বীমার বিভিন্ন সুবিধা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এ ছাড়া আধুনিক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বীমা সংস্থাগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত ও এর পরিষেবা উন্নত করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বীমার যে কোনো কিছু অর্থাৎ বীমার দাবি নিষ্পত্তি থেকে শুরু করে বীমা সেবাকে আরও সহজীকরণে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। এটা করলে দুর্নীতি দূর হবে। মানুষও উপকৃত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকেরই ইন্স্যুরেন্স থাকলে পরে তাদের যে সুবিধা হয় সেটা দেখা দরকার এবং এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি কার্যকর করা দরকার।

সরকারপ্রধান বলেন, পৃথিবীর সব দেশে এটা হয়ে গেছে, সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আমাদের দেশেও পুরো বীমা পদ্ধতিটাকে আপনারা ডিজিটাল সিস্টেমে দাঁড় করাবেন। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উৎক্ষেপণ করেছি, সারা দেশে ব্রডব্র্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করেছি, মোবাইল ফোন হাতে হাতে, ফোরজি আমরা চালু করেছি। শেখ হাসিনা বলেন : আমি বলব, বীমাকে আপনারা মানুষের আরও কাছে নিয়ে যান। এখন গ্রাম পর্যায়ের মানুষও অনেক বেশি সচেতন। সেদিক থেকে মনে করি মানুষের আরও আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, দেশের সব বীমা প্রতিষ্ঠানকে অটোমেশন পদ্ধতির আওতায় নিয়ে এলে এ খাতের উন্নয়নের সঙ্গে অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হবে এবং কেউ ফাঁকি দিতে পারবে না। ফলে বীমার গ্রাহকদেরও আস্থা এবং বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। বীমা খাতের প্রিমিয়ামসহ রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

এ ছাড়া বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে ‘স্টেট-অব-দি-আর্ট টেকনোলজি’ সম্পন্ন ‘ইউনিফাইড মেসেজিং প্লাটফর্ম’ (ইউএমপি) পদ্ধতি চালু করেছে। যা গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে বলে আমি বিশ্বাস করি- এ কথা উল্লেখ করে সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বীমা খাতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ ব্যক্তির মাঝে ‘বীমা পদক’ বিতরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির (আইডিআরএ) ‘বীমা ম্যানুয়েল’ এবং ‘বীমা নির্দেশিকা’ নামক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। দেশের বীমা খাতের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে একটি ভিডিওচিত্র পরিবেশিত হয়।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আশরাফুল ইসলাম এবং আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন, বিশিষ্ট বীমা ব্যক্তিত্ব বেগম ফরিদুর নাহার লাইলি এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম (বিআইএফ) প্রেসিডেন্ট বিএম ইউসুফ আলী বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় গাড়ির ইন্স্যুরেন্স সঠিকভাবে করে নাই। থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্স, সামান্য কিছু টাকা দিলেই সার্টিফিকেটটা পেয়ে যায় এবং গাড়ি চালাতে পারে। কিন্তু যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন কিন্তু আর কিছুই পায় না। গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সে যে টাকা পেতে পারে বা ইন্স্যুরেন্সের টাকায় গাড়ি মেরামত করাতে পারে, সে বিষয়টা মানুষকে আরও ব্যাপকভাবে জানানো দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি আপনাকে পেছন থেকে ধাক্কা মারে তাহলে তার ইন্স্যুরেন্স থেকেই আপনার জরিমানার টাকা পাওয়া দরকার। যদিও এই সিস্টেমটা আমাদের দেশে এখনও শক্তিশালীভাবে গড়ে উঠে নাই। আমি মনে করি, এটা গড়ে ওঠা দরকার।

তিনি বীমা কোম্পানির উদ্দেশে বলেন, সরকার কৃষকদের জন্য কৃষি বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, রেল যাত্রীদের জন্য বীমা এমনকি ভবনের জন্য বীমা করার উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের লেখাপড়া এবং তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য শিশুর

জন্মের পরপরই তাদের নামে একটি করে বীমা এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্যও বীমার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীমা মালিকদের প্রস্তাবিত ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’ চালুর বিষয়ে তার সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে।

তিনি এ সময় স্বাধীনতার পর পাটের গুদামে ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের উদাহরণ টেনে বীমার টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য ‘একধরনের ষড়যন্ত্র’ ছিল মর্র্মে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তার সরকার গঠনের পর গার্মেন্টস কারখানায় ঘন ঘন আগুন লাগার বিষয়টিকেও ‘ক্ষেত্রবিশেষে এই একই কারণে সৃষ্ট’ বলেও উল্লেখ করেন। ‘আমি তদন্ত শুরু করলাম এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে লাগালাম যে কেন, কীভাবে কিসের জন্য অগ্নিকাণ্ড ঘটছে বা ফেক কি না, সে সময় কিছু কিছু ঘটনা ধরাও পড়ল। আর কিছু কিছু লোককে আমি নিজেই ধরে ফেললাম, বলেন তিনি। তিনি বলেন, আমি নাম বলতে চাই না। কিন্তু আমার যেহেতু বলার অধিকার আছে তাই বললাম।

বীমা করে অর্থ উপার্জনটা এক সময় মধ্যবিত্ত এবং চাকরিপ্রত্যাশীদের ভালো উপার্জনের একটি পথ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এখন আর সেভাবে নেই। এটা আবার ফিরে আসা উচিত। শেখ হাসিনা বলেন, বীমা কোম্পানির মালিক যারা রয়েছেন তারা যদি এজেন্ট হিসেবে কাজ দেন তাহলে অনেক যুবক এবং বিশেষ করে মেয়েরা কাজ করতে পারে ফলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির পিতা দেশের বীমা শিল্পের উন্নয়নে যেসব যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তার উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বীমা শিল্পকে অধিকতর অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে ‘বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স (জাতীয়করণ) আদেশ-১৯৭২’ জারি করে ৪৯টি দেশি-বিদেশি বীমা কোম্পানিকে জাতীয়করণের মাধ্যমে সুরমা, রূপসা, তিস্তা এবং কর্ণফুলী নামক ৪টি বীমা কর্পোরেশন গঠন করেছিলেন এবং একই সঙ্গে এই চারটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় বীমা কর্পোরেশন’ গঠন করেন।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে দেশের বীমা শিল্পের উন্নয়নে ‘ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন আইন-১৯৭৩’ প্রণয়ন করে এই ৪টি কর্পোরেশনকে ভেঙে লাইফ বীমা সেবা প্রদানের জন্য ‘জীবন বীমা কর্পোরেশন’ নামে এবং নন-লাইফ বীমার ‘সাধারণ বীমা কর্পোরেশন’ নামে দুটি পৃথক বীমা কর্পোরেশন গঠন করা হয়।

মুজিববর্ষ উদ্যাপনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আজ পহেলা মার্চ, কাজেই মুজিববর্ষে আমি সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এটুকু বলব, আসুন সবাই মিলে সে প্রত্যয় ব্যক্ত করি যে, বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সেবা নিশ্চিতে বীমাকে প্রযুক্তিনির্ভর করুন

আপডেট টাইম : ১১:৫০:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বীমাকে প্রযুক্তিনির্ভর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দুঃসময়ে বীমার বিভিন্ন সুবিধা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এ ছাড়া আধুনিক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বীমা সংস্থাগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত ও এর পরিষেবা উন্নত করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বীমার যে কোনো কিছু অর্থাৎ বীমার দাবি নিষ্পত্তি থেকে শুরু করে বীমা সেবাকে আরও সহজীকরণে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। এটা করলে দুর্নীতি দূর হবে। মানুষও উপকৃত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকেরই ইন্স্যুরেন্স থাকলে পরে তাদের যে সুবিধা হয় সেটা দেখা দরকার এবং এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি কার্যকর করা দরকার।

সরকারপ্রধান বলেন, পৃথিবীর সব দেশে এটা হয়ে গেছে, সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আমাদের দেশেও পুরো বীমা পদ্ধতিটাকে আপনারা ডিজিটাল সিস্টেমে দাঁড় করাবেন। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উৎক্ষেপণ করেছি, সারা দেশে ব্রডব্র্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করেছি, মোবাইল ফোন হাতে হাতে, ফোরজি আমরা চালু করেছি। শেখ হাসিনা বলেন : আমি বলব, বীমাকে আপনারা মানুষের আরও কাছে নিয়ে যান। এখন গ্রাম পর্যায়ের মানুষও অনেক বেশি সচেতন। সেদিক থেকে মনে করি মানুষের আরও আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, দেশের সব বীমা প্রতিষ্ঠানকে অটোমেশন পদ্ধতির আওতায় নিয়ে এলে এ খাতের উন্নয়নের সঙ্গে অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হবে এবং কেউ ফাঁকি দিতে পারবে না। ফলে বীমার গ্রাহকদেরও আস্থা এবং বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। বীমা খাতের প্রিমিয়ামসহ রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

এ ছাড়া বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে ‘স্টেট-অব-দি-আর্ট টেকনোলজি’ সম্পন্ন ‘ইউনিফাইড মেসেজিং প্লাটফর্ম’ (ইউএমপি) পদ্ধতি চালু করেছে। যা গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে বলে আমি বিশ্বাস করি- এ কথা উল্লেখ করে সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বীমা খাতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ ব্যক্তির মাঝে ‘বীমা পদক’ বিতরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির (আইডিআরএ) ‘বীমা ম্যানুয়েল’ এবং ‘বীমা নির্দেশিকা’ নামক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। দেশের বীমা খাতের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে একটি ভিডিওচিত্র পরিবেশিত হয়।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আশরাফুল ইসলাম এবং আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন, বিশিষ্ট বীমা ব্যক্তিত্ব বেগম ফরিদুর নাহার লাইলি এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম (বিআইএফ) প্রেসিডেন্ট বিএম ইউসুফ আলী বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় গাড়ির ইন্স্যুরেন্স সঠিকভাবে করে নাই। থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্স, সামান্য কিছু টাকা দিলেই সার্টিফিকেটটা পেয়ে যায় এবং গাড়ি চালাতে পারে। কিন্তু যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন কিন্তু আর কিছুই পায় না। গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সে যে টাকা পেতে পারে বা ইন্স্যুরেন্সের টাকায় গাড়ি মেরামত করাতে পারে, সে বিষয়টা মানুষকে আরও ব্যাপকভাবে জানানো দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি আপনাকে পেছন থেকে ধাক্কা মারে তাহলে তার ইন্স্যুরেন্স থেকেই আপনার জরিমানার টাকা পাওয়া দরকার। যদিও এই সিস্টেমটা আমাদের দেশে এখনও শক্তিশালীভাবে গড়ে উঠে নাই। আমি মনে করি, এটা গড়ে ওঠা দরকার।

তিনি বীমা কোম্পানির উদ্দেশে বলেন, সরকার কৃষকদের জন্য কৃষি বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, রেল যাত্রীদের জন্য বীমা এমনকি ভবনের জন্য বীমা করার উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের লেখাপড়া এবং তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য শিশুর

জন্মের পরপরই তাদের নামে একটি করে বীমা এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্যও বীমার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীমা মালিকদের প্রস্তাবিত ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’ চালুর বিষয়ে তার সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে।

তিনি এ সময় স্বাধীনতার পর পাটের গুদামে ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের উদাহরণ টেনে বীমার টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য ‘একধরনের ষড়যন্ত্র’ ছিল মর্র্মে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তার সরকার গঠনের পর গার্মেন্টস কারখানায় ঘন ঘন আগুন লাগার বিষয়টিকেও ‘ক্ষেত্রবিশেষে এই একই কারণে সৃষ্ট’ বলেও উল্লেখ করেন। ‘আমি তদন্ত শুরু করলাম এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে লাগালাম যে কেন, কীভাবে কিসের জন্য অগ্নিকাণ্ড ঘটছে বা ফেক কি না, সে সময় কিছু কিছু ঘটনা ধরাও পড়ল। আর কিছু কিছু লোককে আমি নিজেই ধরে ফেললাম, বলেন তিনি। তিনি বলেন, আমি নাম বলতে চাই না। কিন্তু আমার যেহেতু বলার অধিকার আছে তাই বললাম।

বীমা করে অর্থ উপার্জনটা এক সময় মধ্যবিত্ত এবং চাকরিপ্রত্যাশীদের ভালো উপার্জনের একটি পথ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এখন আর সেভাবে নেই। এটা আবার ফিরে আসা উচিত। শেখ হাসিনা বলেন, বীমা কোম্পানির মালিক যারা রয়েছেন তারা যদি এজেন্ট হিসেবে কাজ দেন তাহলে অনেক যুবক এবং বিশেষ করে মেয়েরা কাজ করতে পারে ফলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির পিতা দেশের বীমা শিল্পের উন্নয়নে যেসব যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তার উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বীমা শিল্পকে অধিকতর অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে ‘বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স (জাতীয়করণ) আদেশ-১৯৭২’ জারি করে ৪৯টি দেশি-বিদেশি বীমা কোম্পানিকে জাতীয়করণের মাধ্যমে সুরমা, রূপসা, তিস্তা এবং কর্ণফুলী নামক ৪টি বীমা কর্পোরেশন গঠন করেছিলেন এবং একই সঙ্গে এই চারটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় বীমা কর্পোরেশন’ গঠন করেন।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে দেশের বীমা শিল্পের উন্নয়নে ‘ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন আইন-১৯৭৩’ প্রণয়ন করে এই ৪টি কর্পোরেশনকে ভেঙে লাইফ বীমা সেবা প্রদানের জন্য ‘জীবন বীমা কর্পোরেশন’ নামে এবং নন-লাইফ বীমার ‘সাধারণ বীমা কর্পোরেশন’ নামে দুটি পৃথক বীমা কর্পোরেশন গঠন করা হয়।

মুজিববর্ষ উদ্যাপনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আজ পহেলা মার্চ, কাজেই মুজিববর্ষে আমি সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এটুকু বলব, আসুন সবাই মিলে সে প্রত্যয় ব্যক্ত করি যে, বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব।