হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুজিববর্ষে প্রাথমিকভাবে দেশের ৮টি বিভাগের ১৬টি গ্রামে শহরের মতো নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দিবে সরকার। এর জন্য ইতোমধ্যেই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ ও ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল (ডিপিপি) প্রস্তত কাজ শুরু করেছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।
আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিল, গ্রামে শহরের সুবিধা দেয়া হবে। গত নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া এ ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রথম ধাপে ব্যয় হবে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে অন্যান্য এলাকাতেও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে শহরের মতো উন্নত নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দিতে আমরা ১৬টি গ্রামকে প্রাথমিকভাবে বেছে নিয়েছি। এটি ‘আদর্শ প্রকল্প’ হিসেবে বাস্তবায়ন করা হবে। তারপর ধাপে ধাপে এ প্রকল্প সম্প্রসারণ করা হবে বিভিন্ন এলাকায়। এ জন্য গ্রামের মানুষেরা কী কী সুবিধা চায়, তা তাদের কাছ থেকেই আমরা জেনে নিয়েছি। তাদের পরামর্শ ও মতামতের আলোকে এ প্রকল্প ডিজাইন করা হচ্ছে।’
জানা যায়, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের ‘পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের’ তত্ত্বাবধানে এ প্রকল্প প্রণয়ন শুরু করেছে সমবায় অধিদফতর। এছাড়া একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ঐ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ পাওয়ার পর ডিপিপি পূর্ণাঙ্গ করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে সমবায় অধিদফতর।
গ্রামের মানুষের নিজস্ব শক্তি জাগিয়ে তুলতে বাছাইকৃত গ্রামগুলোতে একটি সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা যায়। এ সমিতির মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং কৃষকের পণ্য বাজারজাতকরণসহ প্রভৃতি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এছাড়া গ্রামের মানুষের মাঝে হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ জোরদার করতে প্রতিটি গ্রামে একটি করে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হবে। কমিউনিটি সেন্টারে ‘সমবায় সমিতির কার্যালয়’ থাকবে এবং সেটি বিয়েসহ পারিবারিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহার করা হবে।
বাছাইকৃত গ্রামগুলোতে শতভাগ বিদ্যুৎ এবং পাকা সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন সমবায় অধিদফতরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এর বাইরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি ও স্যানিটেশন এবং পরিবেশ বান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। গ্রাম পর্যায়ে সমবায় সমিতি এবং নাগরিক সেবা কার্যক্রম তদারকি করতে উপজেলা পর্যায় থেকে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হবে। সেখানে জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা পর্যায়ের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য বা প্রয়োজনে সরকারের অন্যান্য বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।’
এদিকে মুজিববর্ষে রাজধানীবাসীকে বিশুদ্ধ দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাহ করতে ঢাকার ৫০টি থানায় ৫০টি ‘মিল্ক ভিটা কর্নার’ স্থাপন করা হবে।প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে ২ জন করে নারী বিক্রয়কর্মী থাকবে। এর ফলে দুগ্ধখাত আরও বিকশিত হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া মুজিববর্ষে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)। প্রকল্পের অধীনে গ্রামীণ জনগণের অংশগ্রহণে মূল সড়ক থেকে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। গ্রামের মানুষ বাড়ি থেকে বের হয়ে কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ, মন্দির, কবর, শ্মশান, স্কুল ও অন্যান্য জায়গায় চলাচলের জন্য এ সংযোগ সড়ক ব্যবহার করবে।