ঢাকা ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া সহনীয় মাত্রায় রাখুন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২০
  • ২১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবার হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করেছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা স্বাভাবিক ভাড়ার প্রায় তিনগুণ। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম হ্রাস পাওয়া এবং সৌদি সরকার এ বছর কোনো সার্ভিস চার্জ না বাড়ানো সত্ত্বেও এত বেশি ভাড়া কেন নির্ধারণ করা হল, এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

অভিযোগ উঠেছে, অন্যসব ক্ষেত্রে নিজেদের লোকসান পুষিয়ে নিতেই প্রতি বছরের মতো এবারও রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটি ‘হজ বাণিজ্যে’ নেমেছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীও হজযাত্রীদের বিমান ভাড়ার এ প্রস্তাব সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন। উল্লেখ্য, হজ চুক্তি অনুযায়ী এ বছর ১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যেতে পারবেন। বিপুলসংখ্যক এ হজযাত্রী পরিবহনের কাজটি যৌথভাবে সম্পন্ন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স।

ঢাকা-জেদ্দা রুটে সাধারণ যাত্রীরা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা ভাড়ায় সারা বছরই আসা-যাওয়া করতে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা, বছরের অন্য সময় আসন খালি গেলেও হজের সময় বিমানের কোনো আসন খালি যায় না। পুরো আসন বিক্রি সাপেক্ষে যেখানে ভাড়া কমার কথা, সেখানে উল্টো মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

এর ফলে সাধারণ যাত্রীদের তুলনায় এবার হজযাত্রীদের অতিরিক্ত প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা গুনতে হবে। দুঃখজনক হল, অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও হজযাত্রীরা বাড়তি কোনো সুবিধা পান না; বরং কখনও ফ্লাইট বাতিল, কখনও দীর্ঘ ট্রানজিট-ভোগান্তিতে পড়েন। আবার ফ্লাইট বিলম্বের কারণে দিনের পর দিন হজক্যাম্পে ইহরাম বেঁধে অপেক্ষা করতেও হয় হজযাত্রীদের।

দেশ থেকে প্রতি বছর যেসব মানুষ হজ করতে সৌদি আরব যান, তাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির। হজযাত্রী পরিবহনের নামে সিন্ডিকেট গঠন করে টিকিট বিক্রি বাবদ প্রতি বছর প্রচুর টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এখন যদি বিমানের ভাড়া তিনগুণ বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে হজ পালনেচ্ছু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়বে, যা মোটেই কাম্য নয়। বিমানের প্রধান সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি।

হজ ফ্লাইটের ভাড়া না বাড়িয়ে সরকার বরং বিমানকে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠানরূপে গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করতে পারে। এটি সম্ভব হলে হজযাত্রীদের কাছ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায়ের প্রয়োজন হবে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, হজ একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এর সঙ্গে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি ও বিশ্বাসের প্রশ্ন জড়িত। ভাড়া বৃদ্ধি করা হলে হজযাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ কারণে সরকারও বিপাকে পড়তে পারে। কাজেই হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া সহনীয় মাত্রায় রাখা উচিত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশ হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া সহনীয় মাত্রায় রাখুন

আপডেট টাইম : ০৭:৫৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবার হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করেছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা স্বাভাবিক ভাড়ার প্রায় তিনগুণ। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম হ্রাস পাওয়া এবং সৌদি সরকার এ বছর কোনো সার্ভিস চার্জ না বাড়ানো সত্ত্বেও এত বেশি ভাড়া কেন নির্ধারণ করা হল, এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

অভিযোগ উঠেছে, অন্যসব ক্ষেত্রে নিজেদের লোকসান পুষিয়ে নিতেই প্রতি বছরের মতো এবারও রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটি ‘হজ বাণিজ্যে’ নেমেছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীও হজযাত্রীদের বিমান ভাড়ার এ প্রস্তাব সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন। উল্লেখ্য, হজ চুক্তি অনুযায়ী এ বছর ১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যেতে পারবেন। বিপুলসংখ্যক এ হজযাত্রী পরিবহনের কাজটি যৌথভাবে সম্পন্ন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স।

ঢাকা-জেদ্দা রুটে সাধারণ যাত্রীরা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা ভাড়ায় সারা বছরই আসা-যাওয়া করতে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা, বছরের অন্য সময় আসন খালি গেলেও হজের সময় বিমানের কোনো আসন খালি যায় না। পুরো আসন বিক্রি সাপেক্ষে যেখানে ভাড়া কমার কথা, সেখানে উল্টো মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

এর ফলে সাধারণ যাত্রীদের তুলনায় এবার হজযাত্রীদের অতিরিক্ত প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা গুনতে হবে। দুঃখজনক হল, অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও হজযাত্রীরা বাড়তি কোনো সুবিধা পান না; বরং কখনও ফ্লাইট বাতিল, কখনও দীর্ঘ ট্রানজিট-ভোগান্তিতে পড়েন। আবার ফ্লাইট বিলম্বের কারণে দিনের পর দিন হজক্যাম্পে ইহরাম বেঁধে অপেক্ষা করতেও হয় হজযাত্রীদের।

দেশ থেকে প্রতি বছর যেসব মানুষ হজ করতে সৌদি আরব যান, তাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির। হজযাত্রী পরিবহনের নামে সিন্ডিকেট গঠন করে টিকিট বিক্রি বাবদ প্রতি বছর প্রচুর টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এখন যদি বিমানের ভাড়া তিনগুণ বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে হজ পালনেচ্ছু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়বে, যা মোটেই কাম্য নয়। বিমানের প্রধান সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি।

হজ ফ্লাইটের ভাড়া না বাড়িয়ে সরকার বরং বিমানকে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠানরূপে গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করতে পারে। এটি সম্ভব হলে হজযাত্রীদের কাছ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায়ের প্রয়োজন হবে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, হজ একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এর সঙ্গে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি ও বিশ্বাসের প্রশ্ন জড়িত। ভাড়া বৃদ্ধি করা হলে হজযাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ কারণে সরকারও বিপাকে পড়তে পারে। কাজেই হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া সহনীয় মাত্রায় রাখা উচিত।