ঢাকা ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বোখারা সম্মেলনে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৩:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২০
  • ৩০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরদিন হোটেলের রেস্টুরেন্টে নাশতার জন্য গিয়ে দেখি বিশ্বের কত দেশের লোকজন যে এবার ট্যুরে এসেছে তা ভাবাই যায় না। বুফের লাইনে আরব, ইউরোপীয়, তুর্কী, আফগান, ভারতীয়, চৈনিক, সামান্য আফ্রো-আমেরিকানসহ নারী ও পুরুষ মেহমানের ভিড়। বাংলাদেশিও ৭০/৮০ জনের কম হবে না। ইমাম নকশবন্দ রহ.-এর ৭০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উজবেক সরকারের সহযোগিতায় এ ইভেন্টের আয়োজক সংস্থা ওয়ার্ল্ড সূফী সেন্টার মালয়েশিয়া তুরস্ক ও উজবেকিস্তানের মিলিত উদ্যোক্তারা। এর প্রেসিডেন্ট মালয়েশিয়ার সাবেক উপ-প্রধান মন্ত্রী শায়খ জাহিদ আর জেনারেল সেক্ট্রেটারি বন্ধুবর সূফী আবদুল করীম বিন খাদাইয়েদ।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল মুজাদ্দিদী ইজতিমা মালয়েশিয়ারও আহ্বায়ক। আমাকে এর সেক্রেটারিয়েট ওয়ার্ল্ড সূফী সেন্টারের বাংলাদেশ কান্ট্রি চেয়ারম্যান করেছে।  এ হিসাবে এই ইভেন্টের উদ্যোক্তা, আয়োজক কিংবা হোস্টদের আমিও একজন।

বাংলাদেশের সব ঘরানার প্রতিনিধিত্ব ছিল উজবেক নকশবন্দী ট্যুরিজম ফেস্টিভালে। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের একটি শক্তিশালী ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিনিধিদল যোগ দিয়েছিল এ ঐতিহাসিক সম্মিলনী অনুষ্ঠানে।
এর প্রধান ছিলেন, মহাসচিব হযরত মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী সাহেব, সম্মানিত সাথীগণের মধ্যে যশোরের মাওলানা নুরুল ইসলাম সাহেব, ঢাকার মাওলনা আ খ ম আবু বকর সিদ্দিক সাহেব, ময়মনসিংহের ড. মাওলানা ইদরীস খান সাহেব, পাবনার মাওলানা আসনারুল্লাহ সাহেব, সিলেটের মুফতি মাওলানা নোমান আহমদ সাহেব এবং মাওলানা শায়খ কুতুবুল আলম সাহেব। দেশের অন্যসব সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, দরবার ও তরিকার বিখ্যাত ব্যক্তিগণও এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

শ্রদ্ধেয় ও মজার মানুষ ছিলেন রাজশাহীর প্রফেসর ড. আবদুস সালাম মিয়া আল মাদানী। ভ্রমণের এই ক’টি দিন ড. ইদরীস খান, মাওলানা নোমান আহমদ, ড. আল মাদানী সাহেবদের সঙ্গে আলোচনা, সরস বাক্যালাপ আমাদের প্রত্যেককেই আনন্দ দিয়েছে। কষ্ট দুঃখ সুবিধা সমস্যা ও সঙ্কট হাসি মুখে মেনে নেয়া এবং বহু মত রুচি ও আচরণের মানুষকে একসাথে নিয়ে ধৈর্যসহ হাসিমুখে চলতে আল্লামা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীর তুলনা হয় না।

পূর্ব ও পশ্চিম মিলিয়ে প্রায় অর্ধেক পৃথিবী এমন টিম নিয়ে তিনি ঘুরে ফিরেছেন, কিন্তু কোনো অবস্থায়ই তার হাসিমুখে মালিন্য আসেনি। কোনো সঙ্কটও তাকে স্পর্শ করেনি। অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে তিনি সব বাধা ডিঙিয়ে যেতে পারেন। অন্যের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও স্নেহবোধ অতুলনীয়। প্রিন্সিপাল আ খ ম আবু বকর সিদ্দিক সাহেব তো এ যুগের এক বিরল ব্যক্তিত্ববান শুদ্ধ ও সাত্তি¡ক মানুষ। অধিকাংশ সময় চলতে পথে আমাকে পাশে বসাতেন।

শত মানুষের ভিড়ে সবার সাথে মিলে মিশেও একা থাকার লোক আমি। হৈ-চৈ হট্টগোলেও নিশ্চিদ্র নীরবতায় ডুব দিয়ে থাকতে আমার এতটুকু কষ্ট হয় না। এভাবেই আমি পার্থিব জীবনে সংসার ও সামাজিকতার অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছি। হাজারো ভাঙন ও অনন্ত রোদন চাপা রেখে আমি দিব্যি অফিস করতে, ক্লাস করাতে, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করতে, আড্ডা দিতে এমনকি হাসি তামাশাও চালিয়ে যেতে পারি।

এমনটি কিছুটা বোঝেন বলেই হয়তো সার্বক্ষণিক সঙ্গী ও দোসর হয়ে ছিলেন যশোরের হযরত মাওলানা নূরুল ইসলাম সাহেব। সব শহরেই আমার হোটেল কক্ষের সাথী। আমাকে যিনি বোঝেন, স্নেহছায়ায় ঢেকে রাখেন। আমার অযোগ্যতা, নীরবতা, উদাসীনতা, ভাবনা, দুর্বলতা, অস্থিরতা, দোষক্রটি, আবেগ ও হাসি-কান্না তিনি ভালোই বোঝেন। ধন্যবাদ নুরু ভাইকে।

দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে এবং দেশেও দ্বীনি কাজে সাধ্যমতো ভ‚মিকা ও অবদান রাখতে জ্যেষ্ঠভ্রাতাতুল্য ছায়া আর অকৃত্রিম অভিভাবকত্ব দিয়ে নীরবে স্নেহ ও মমতার চাদরে জড়িয়ে রাখা আমার শ্রদ্ধেয় সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন সাহেব ও মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীকেও হৃদয় থেকে মোবারকবাদ। তাদের সবাইকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বোখারা সম্মেলনে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন

আপডেট টাইম : ০১:৩৩:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরদিন হোটেলের রেস্টুরেন্টে নাশতার জন্য গিয়ে দেখি বিশ্বের কত দেশের লোকজন যে এবার ট্যুরে এসেছে তা ভাবাই যায় না। বুফের লাইনে আরব, ইউরোপীয়, তুর্কী, আফগান, ভারতীয়, চৈনিক, সামান্য আফ্রো-আমেরিকানসহ নারী ও পুরুষ মেহমানের ভিড়। বাংলাদেশিও ৭০/৮০ জনের কম হবে না। ইমাম নকশবন্দ রহ.-এর ৭০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উজবেক সরকারের সহযোগিতায় এ ইভেন্টের আয়োজক সংস্থা ওয়ার্ল্ড সূফী সেন্টার মালয়েশিয়া তুরস্ক ও উজবেকিস্তানের মিলিত উদ্যোক্তারা। এর প্রেসিডেন্ট মালয়েশিয়ার সাবেক উপ-প্রধান মন্ত্রী শায়খ জাহিদ আর জেনারেল সেক্ট্রেটারি বন্ধুবর সূফী আবদুল করীম বিন খাদাইয়েদ।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল মুজাদ্দিদী ইজতিমা মালয়েশিয়ারও আহ্বায়ক। আমাকে এর সেক্রেটারিয়েট ওয়ার্ল্ড সূফী সেন্টারের বাংলাদেশ কান্ট্রি চেয়ারম্যান করেছে।  এ হিসাবে এই ইভেন্টের উদ্যোক্তা, আয়োজক কিংবা হোস্টদের আমিও একজন।

বাংলাদেশের সব ঘরানার প্রতিনিধিত্ব ছিল উজবেক নকশবন্দী ট্যুরিজম ফেস্টিভালে। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের একটি শক্তিশালী ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিনিধিদল যোগ দিয়েছিল এ ঐতিহাসিক সম্মিলনী অনুষ্ঠানে।
এর প্রধান ছিলেন, মহাসচিব হযরত মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী সাহেব, সম্মানিত সাথীগণের মধ্যে যশোরের মাওলানা নুরুল ইসলাম সাহেব, ঢাকার মাওলনা আ খ ম আবু বকর সিদ্দিক সাহেব, ময়মনসিংহের ড. মাওলানা ইদরীস খান সাহেব, পাবনার মাওলানা আসনারুল্লাহ সাহেব, সিলেটের মুফতি মাওলানা নোমান আহমদ সাহেব এবং মাওলানা শায়খ কুতুবুল আলম সাহেব। দেশের অন্যসব সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, দরবার ও তরিকার বিখ্যাত ব্যক্তিগণও এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

শ্রদ্ধেয় ও মজার মানুষ ছিলেন রাজশাহীর প্রফেসর ড. আবদুস সালাম মিয়া আল মাদানী। ভ্রমণের এই ক’টি দিন ড. ইদরীস খান, মাওলানা নোমান আহমদ, ড. আল মাদানী সাহেবদের সঙ্গে আলোচনা, সরস বাক্যালাপ আমাদের প্রত্যেককেই আনন্দ দিয়েছে। কষ্ট দুঃখ সুবিধা সমস্যা ও সঙ্কট হাসি মুখে মেনে নেয়া এবং বহু মত রুচি ও আচরণের মানুষকে একসাথে নিয়ে ধৈর্যসহ হাসিমুখে চলতে আল্লামা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীর তুলনা হয় না।

পূর্ব ও পশ্চিম মিলিয়ে প্রায় অর্ধেক পৃথিবী এমন টিম নিয়ে তিনি ঘুরে ফিরেছেন, কিন্তু কোনো অবস্থায়ই তার হাসিমুখে মালিন্য আসেনি। কোনো সঙ্কটও তাকে স্পর্শ করেনি। অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে তিনি সব বাধা ডিঙিয়ে যেতে পারেন। অন্যের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও স্নেহবোধ অতুলনীয়। প্রিন্সিপাল আ খ ম আবু বকর সিদ্দিক সাহেব তো এ যুগের এক বিরল ব্যক্তিত্ববান শুদ্ধ ও সাত্তি¡ক মানুষ। অধিকাংশ সময় চলতে পথে আমাকে পাশে বসাতেন।

শত মানুষের ভিড়ে সবার সাথে মিলে মিশেও একা থাকার লোক আমি। হৈ-চৈ হট্টগোলেও নিশ্চিদ্র নীরবতায় ডুব দিয়ে থাকতে আমার এতটুকু কষ্ট হয় না। এভাবেই আমি পার্থিব জীবনে সংসার ও সামাজিকতার অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছি। হাজারো ভাঙন ও অনন্ত রোদন চাপা রেখে আমি দিব্যি অফিস করতে, ক্লাস করাতে, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করতে, আড্ডা দিতে এমনকি হাসি তামাশাও চালিয়ে যেতে পারি।

এমনটি কিছুটা বোঝেন বলেই হয়তো সার্বক্ষণিক সঙ্গী ও দোসর হয়ে ছিলেন যশোরের হযরত মাওলানা নূরুল ইসলাম সাহেব। সব শহরেই আমার হোটেল কক্ষের সাথী। আমাকে যিনি বোঝেন, স্নেহছায়ায় ঢেকে রাখেন। আমার অযোগ্যতা, নীরবতা, উদাসীনতা, ভাবনা, দুর্বলতা, অস্থিরতা, দোষক্রটি, আবেগ ও হাসি-কান্না তিনি ভালোই বোঝেন। ধন্যবাদ নুরু ভাইকে।

দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে এবং দেশেও দ্বীনি কাজে সাধ্যমতো ভ‚মিকা ও অবদান রাখতে জ্যেষ্ঠভ্রাতাতুল্য ছায়া আর অকৃত্রিম অভিভাবকত্ব দিয়ে নীরবে স্নেহ ও মমতার চাদরে জড়িয়ে রাখা আমার শ্রদ্ধেয় সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন সাহেব ও মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীকেও হৃদয় থেকে মোবারকবাদ। তাদের সবাইকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন।