হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের দেশের মানুষ তেমন স্বাস্থ্য সচেতন নয়। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে দেখা দিচ্ছে নানা রোগ। এদের মধ্যে কিছু কিছু রোগ আমাদের সবার জন্য খুব বিপজ্জনক। এসব রোগে প্রাণহানিরও আশঙ্কা থাকে। স্ট্রোক তাদের মধ্য অন্যতম। আমাদের দেহের রক্তে অনেক সময় চর্বি বেড়ে যায়। রক্তে চর্বি বেড়ে গেলে তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন কারণেই এরকম হতে পারে। তবে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে আছে অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণ এবং ব্যায়াম না করা। কারণ যাই হোক রক্তে চর্বি বেশি থাকলে ধমনির গায়ে চর্বি জমা হতে থাকে। এর ফলে ধমনি সরু হতে থাকে। ধমনি সরু হলে রক্তের সঞ্চালন সীমিত হতে থাকে। কখনো কখনো রক্ত সঞ্চালন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই বন্ধ হওয়া যদি হার্টের করোনারি ধমনিতে হয় তখন দেখা দেয় হার্ট এটাক। হার্ট এটাক খুব বিপজ্জনক। এর ফলে বিভিন্ন জটিলতাসহ তাত্ক্ষণিক মৃত্যুও হতে পারে। আর যদি মস্তিষ্কের মধ্যে এই ঘটনা হয় তবে সেটা হয় স্ট্রোক।
যেহেতু চর্বির আধিক্যের কারণেই বিভিন্ন জটিলতা ঘটে তাই চর্বির ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। চর্বি গ্রহণ কমাতে হবে। ফলমূল এবং শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। তেলে ভাজা খাবার কম খেতে হবে। বছরে অন্তত একবার রক্তের চর্বি পরিমাপ করতে হবে। এর জন্য লিপিড প্রোফাইল টেস্ট বলে একটি পরীক্ষা আছে। এই পরীক্ষা করাতে হবে। রক্তের বিভিন্ন ধরনের চর্বি থাকে। এর মধ্যে আছে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল ও এইচডিএল। রক্তে এসবের নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। প্রতি বছর পরীক্ষা করে দেখতে হবে এই মাত্রা স্বাভাবিক আছে কি না। এগুলোর আদর্শ মাত্রা হচ্ছে কোলেস্টেরল ২০০ মিলি গ্রামের কম, ট্রাইগ্লিসারাইড ১৫০ মিলি গ্রামের কম, এলডিএল ১০০ মিলি গ্রামের কম এবং এইচডিএল ৪০ মিলিগ্রামের বেশি। এই মাত্রার বেশি হলেই হূদেরাগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার ফ্যাটি লিভারসহ নানারকম রোগ দেখা দেয়।
খাবারে যত বেশি চর্বি থাকবে রক্তের চর্বি তত বেশি বেড়ে যাবে। তাই সচেতন হতেই হবে। আবার হোটেল-রেস্টুরেন্টের খাবার, দাওয়াতের খাবারে প্রচুর তেল চর্বি থাকে। এসব বেশি খেলে রক্তের চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। কোনো কোনো পরিবারে বংশানুক্রমিকভাবে চর্বির মাত্রা বেশি থাকতে দেখা যায়। মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেলেও রক্তে চর্বি বেড়ে যায়। স্ট্রোক এবং হূদেরাগের হাত থেকে বাঁচতে অবশ্যই চর্বি গ্রহণ কমাতে হবে। নাহলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।