হাওর বার্তা ডেস্কঃ তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার ক্রিকেট ও ফুটবলের পাশাপাশি টেনিসসহ অন্যান্য খেলার প্রসারেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি একইসঙ্গে ক্রি কেট ও ফুটবলের পাশাপাশি টেনিস অনুশীলনের জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।–খবর বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রিকেট, ফুটবল নিয়েই আমরা সবসময় মেতে থাকি। তবে, টেনিসও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর খেলাধুলার প্রতি আমরা সবসময়ই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ, খেলাধুলা আমাদের ছেলে-মেয়েদের মানসিক শক্তি জোগায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবনে ‘শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট-২০১৯ এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি এবং কূটনীতিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে একথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রিকেট ও ফুটবল জনপ্রিয় খেলা হলেও এখন মানুষ টেনিসের সঙ্গেও পরিচিত হচ্ছে। আর এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরে তরুণ প্রজন্ম আরো বেশি করে টেনিসের প্রতি আকৃষ্ট হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার টেনিস কোর্ট তৈরি এবং প্রশিক্ষণ দেয়াসহ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই খেলাটির প্রসারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি ছেলে-মেয়েদের এই খেলায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন এই খেলাধুলায় এগিয়ে আসে, তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খেলাধুলাকে আরো বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এইজন্য যে, তরুণ প্রজন্ম যত বেশি অংশ নেবে ততই তাদের মন-মানসিকতা ভাল হবে। ফলে শারীরিকভাবে সুস্থ হবে এবং নিজেদের আরো বেশি তৈরি করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলায় বিদেশিরা যখন অংশগ্রহণ করেন, তখন একে অপরের সঙ্গে ওঠা-বসার মাধ্যমে পরস্পরকে জানার একটি সুযোগ পাওয়া যায়। কাজেই সেইদিক থেকে আমি মনে করি এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেব, যেটা খুব জরুরি। আমরা টেনিসের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেব।’
প্রধানমন্ত্রী খুলনায় শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট-২০১৯’র মতো একটি টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করায় সব আয়োজককে ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বাফুফে সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
অন্য অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় প্রধানমন্ত্রী সেখানে যেতে না পারার কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি বিজয়ী এবং বিজিতসহ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ১৯টি দেশের ২১টি ক্লাবের সব সদস্যকে শুভেচ্ছা জানান। এই টুর্নামেন্টকে গুরুত্ব দিয়ে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন প্রতিযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহ্সান রাসেল এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী এবং শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সহযোগিতায় ১৩ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনার শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক টেনিস কমপ্লেক্সে ‘শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট’ আয়োজন করে খুলনা জেলা প্রশাসন।
বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৫৪তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই টুর্নামেন্ট গত ১৩ নভেম্বর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ভূটান, ভারত, পাকিস্তান, ইরাক, দক্ষিণ কোরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, তিউনিশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, ক্যামেরুন এবং বাংলাদেশের মোট ৭৪জন প্রতিযোগী তিনটি বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
প্রতিযোগিতার পুরুষ এককে ভারতের নিতিন কুমার সিনহা এবং নারী এককে মঙ্গোলিয়ার মারালোগো চগসোমজাত শিরোপা জয় করেন। আর পুরুষ দ্বৈতে থাইল্যান্ডের চায়ানন কেউসুতো ও উনশায়াট্রং চারোয়েন চাইকুল জুটি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।