হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাদা বসন আর জাফরান রঙে মোড়া শুভ্রকুমারী শিউলির কথা বলে শেষ করা যাবে না। অতি সাধারণ এক ফুল শিউলি। তারপরও তাকে হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখার অনুভূতি সবারই প্রত্যাশা। এ যেন কিছুটা সুখানুভূতি, একরাশ ভালো লাগা।
রাজধানী ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে দণ্ডায়মান শিউলি ফুলের গাছ। ফাঁকা জায়গার ঠিক মাঝখানে এমন একটা পাতায় ভরা গাছ থাকলে যতটা না সুন্দর লাগে দেখতে, তার চেয়েও অনেক বেশি নজরকাড়া হয় যখন শিউলি ফুল ফোটে গাছে।
শিউলি ফুল ছুঁয়ে দেখা আনন্দের; কুড়িয়ে ছোঁয়া ভালো লাগার। কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা কখনো জোড়াবেধে, কখনোবা একাকী বসে ফুল কুড়াতে থাকে গাছের নিচে। সকাল সকাল কলেজে গিয়ে শিউলি ফুল কুড়াতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও বেশ জমজমাট উপস্থিতি চোখে পড়ে ফুল কুড়ানোর প্রাক্কালে। কুড়ানো শেষে কেউ মালা গাঁথে, কেউ ব্যাগে রাখে, কেউবা ফুল কুড়িয়ে ঘ্রাণ নিয়ে ফেলে দেন। তবে এসবের সবকিছুই আনন্দের।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও মুগ্ধ হয়েছিলেন এই শিউলির রূপে। ‘শেফালী বনের মনের কামনা’, ‘শিউলি ফুল, শিউলি ফুল, কেমন ভুল, এমন ভুল’, ‘শরৎ, তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি…শিউলি বনের বুক যে ওঠে আন্দোলি’, ‘শিউলি বনের উদাস বায়ু পড়ে থাকে তরুতলে’- রবি ঠাকুরের এ গানগুলোতে এভাবে ওঠে এসেছে শিউলির কথা।
এই শিউলি ফুলের রূপে মুগ্ধ হয়েছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও। তিনি লিখেছেন, ‘শিউলি তলায় ভোর বেলায় কুসুম কুড়ায় পল্লী-বালা।’ আবার নিজের বুকের হাহাকারের কথা প্রকাশ করতে গিয়ে লিখেছেন, শিউলি ফুলের মালা দোলে শারদ-রাতের বুকে ঐ /এমন রাতে একলা জাগি সাথে জাগার সাথী কই…’।
হাঁটুগেড়ে শিউল ফুল কুড়ানোর সময় শিক্ষার্থী রোদেলা চৌধুরী বলেন, আমি সচরাচর একটু সকাল করেই কলেজে আসি। অডিটোরিয়ামের সামনের জায়গাটা সবসময় নিরিবিলি থাকে বলে এখানে কিছুটা সময় পার করতে পারি বান্ধবীদের সঙ্গে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে শিউলি গাছের ফুলগুলো কুড়াতে থাকি সকালে এসে। সারারাত এগুলো সুবাস ছড়িয়ে সকাল বেলা ঝরে যায়। আমি অনেক মোহিত হই।