ঢাকা ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সচিবালয়ে ২০ তলা ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ বাতিল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:০২:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৪০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের স্বত্বাধিকারী মেসার্স জি কে বিল্ডার্সের নির্মাণাধীন ঢাকায় সচিবালয়ের ২০ তলা নতুন ভবনের কার্যাদেশ বাতিল করেছে গণপূর্ত অধিদফতর।

নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না করে ‘পারফরম্যান্স গ্যারান্টি’ এবং ‘মৌলিক চুক্তি’ ভঙ্গের অভিযোগে কার্যাদেশটি বাতিল করা হল বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ১৪ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি ১৭ নভেম্বর গণপূর্ত বিভাগ থেকে গণপূর্ত অধিদফতর ও সরকারের বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। সোমবার জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জি কে বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী বরাবরও কার্যাদেশ বাতিলের চিঠি পাঠায় গণপূর্ত বিভাগ। ২০ তলা ভবন নির্মাণের সঙ্গে জড়িত জি কে বিল্ডার্সের প্রকৌশলীরা চিঠিটি গ্রহণ করেছেন বলে গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেন মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেছেন, পিপিআর ও পিপিএ অনুযায়ী জি কে শামীমসহ যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শর্ত লঙ্ঘন করছে, তাদের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

টানা ২৮ দিন কোনো প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকলে কাজটি বাতিল করা যায়। জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠানের অধীন এককভাবে বাস্তবায়নাধীন কয়েকটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য হওয়ায় সেসব কাজ শিগগির বাতিল হবে। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীদের নির্দেশা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন সচিবালয়ে ২০ তলা ভবনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন আরও বেশকিছু প্রকল্পের কাজ বন্ধ আছে।

ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জি কে শামীমের একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ হচ্ছে না। তবে যৌথভাবে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে।

প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট (পিপিএ) অনুযায়ী কাজ বন্ধের সুযোগ নেই। ওইসব প্রকল্পের কাজও যদি বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত হয়, তখন সেসব প্রকল্পের কাজের ব্যাপারেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একক ও যৌথভাবে গণপূর্ত অধিদফতরের অর্ধশতাধিক প্রকল্পের কাজ পেয়েছে। এগুলোর কোনোটির ৯৫-৯৯ ভাগ, কোনোটির অর্ধেক এবং কোনোটির কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। পিপিআর ও পিপিএ অনুযায়ী জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠানের চলমান প্রকল্পগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে গণপূর্ত অধিদফতর।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনা আছে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

গণপূর্ত বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, সচিবালয়ের ২০ তলা নতুন ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত সিভিল ও বৈদ্যুতিক অবশিষ্ট কাজ এবং ষষ্ঠ তলা থেকে ২০ তলা পর্যন্ত সিভিল ও বৈদ্যুতিক বিভাগের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের কার্যাদেশ বাতিল করা হল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দুটি পর্বের চুক্তির সময়কাল গত ৪ জুলাই এবং ২০ জুলাই শেষ হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না করে ‘পারফরম্যান্স গ্যারান্টি’ এবং ‘মৌলিক চুক্তি’ ভঙ্গ হয়েছে।

চুক্তির সাধারণ শর্তাবলি অংশের শর্ত ৪৪.২ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করার কারণ বা সময় বাড়ানোর আবেদনও করা হয়নি। কাজের সর্বশেষ অবস্থা অনুযায়ী শর্তাবলির ১৭.১, ৪২.১, ৪৩.১ নম্বর শর্ত সুনির্দিষ্টভাবে ভঙ্গ হয়েছে। তাই এ চুক্তিপত্রের সব আইনগত বৈধতা নিঃশেষ হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, পিপিআর-২০০৮-এর ৩৮(৫)-এর বিধিমতে চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজের জন্য চুক্তির সব কার্যকারিতা বাতিল করা হল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সচিবালয়ে ২০ তলা ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ বাতিল

আপডেট টাইম : ০৭:০২:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের স্বত্বাধিকারী মেসার্স জি কে বিল্ডার্সের নির্মাণাধীন ঢাকায় সচিবালয়ের ২০ তলা নতুন ভবনের কার্যাদেশ বাতিল করেছে গণপূর্ত অধিদফতর।

নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না করে ‘পারফরম্যান্স গ্যারান্টি’ এবং ‘মৌলিক চুক্তি’ ভঙ্গের অভিযোগে কার্যাদেশটি বাতিল করা হল বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ১৪ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি ১৭ নভেম্বর গণপূর্ত বিভাগ থেকে গণপূর্ত অধিদফতর ও সরকারের বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। সোমবার জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জি কে বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী বরাবরও কার্যাদেশ বাতিলের চিঠি পাঠায় গণপূর্ত বিভাগ। ২০ তলা ভবন নির্মাণের সঙ্গে জড়িত জি কে বিল্ডার্সের প্রকৌশলীরা চিঠিটি গ্রহণ করেছেন বলে গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেন মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেছেন, পিপিআর ও পিপিএ অনুযায়ী জি কে শামীমসহ যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শর্ত লঙ্ঘন করছে, তাদের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

টানা ২৮ দিন কোনো প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকলে কাজটি বাতিল করা যায়। জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠানের অধীন এককভাবে বাস্তবায়নাধীন কয়েকটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য হওয়ায় সেসব কাজ শিগগির বাতিল হবে। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীদের নির্দেশা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন সচিবালয়ে ২০ তলা ভবনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন আরও বেশকিছু প্রকল্পের কাজ বন্ধ আছে।

ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জি কে শামীমের একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ হচ্ছে না। তবে যৌথভাবে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে।

প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট (পিপিএ) অনুযায়ী কাজ বন্ধের সুযোগ নেই। ওইসব প্রকল্পের কাজও যদি বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত হয়, তখন সেসব প্রকল্পের কাজের ব্যাপারেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একক ও যৌথভাবে গণপূর্ত অধিদফতরের অর্ধশতাধিক প্রকল্পের কাজ পেয়েছে। এগুলোর কোনোটির ৯৫-৯৯ ভাগ, কোনোটির অর্ধেক এবং কোনোটির কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। পিপিআর ও পিপিএ অনুযায়ী জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠানের চলমান প্রকল্পগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে গণপূর্ত অধিদফতর।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনা আছে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

গণপূর্ত বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, সচিবালয়ের ২০ তলা নতুন ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত সিভিল ও বৈদ্যুতিক অবশিষ্ট কাজ এবং ষষ্ঠ তলা থেকে ২০ তলা পর্যন্ত সিভিল ও বৈদ্যুতিক বিভাগের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের কার্যাদেশ বাতিল করা হল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দুটি পর্বের চুক্তির সময়কাল গত ৪ জুলাই এবং ২০ জুলাই শেষ হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না করে ‘পারফরম্যান্স গ্যারান্টি’ এবং ‘মৌলিক চুক্তি’ ভঙ্গ হয়েছে।

চুক্তির সাধারণ শর্তাবলি অংশের শর্ত ৪৪.২ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করার কারণ বা সময় বাড়ানোর আবেদনও করা হয়নি। কাজের সর্বশেষ অবস্থা অনুযায়ী শর্তাবলির ১৭.১, ৪২.১, ৪৩.১ নম্বর শর্ত সুনির্দিষ্টভাবে ভঙ্গ হয়েছে। তাই এ চুক্তিপত্রের সব আইনগত বৈধতা নিঃশেষ হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, পিপিআর-২০০৮-এর ৩৮(৫)-এর বিধিমতে চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজের জন্য চুক্তির সব কার্যকারিতা বাতিল করা হল।