ঢাকা ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমার গতি কমেছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৬৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দারিদ্র্য বিমোচনে শীর্ষ ১৫ দেশের মধ্যে নেই বাংলাদেশ। চলতি মাসের ১২ নভেম্বর দারিদ্র্য বিমোচন সম্পর্কিত এমন একটি তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। সেখানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের এই চিত্র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমার গতি কমেছে। এ কারণে তালিকা থেকে বাদ পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।

অথচ ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর দারিদ্র্য বিমোচনের সাফল্য তুলে ধরতে রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একটি শোকেসের আয়োজন করে বিশ্বব্যাংক। সেখানে গত কয়েক দশকে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্যগুলো তুলে ধরা হয়েছিল।

সেই বিশ্বব্যাংকই তিন বছর পরে এসে বলছে, গত দেড় দশকে দ্রুত গতিতে দারিদ্র্য কমানোর দিক দিয়ে শীর্ষ ১৫ দেশের তালিকায় নেই বাংলাদেশ। তালিকায় স্থান করে নেওয়া ১৫টি দেশ দ্রুত দারিদ্র্য কমিয়েছে, সেই তুলনায় বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমেছে এর চেয়ে কম।

২০০০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দ্রুত গতিতে দারিদ্র্য কমানো শীর্ষ ১৫ দেশ হলো- চীন, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তানজানিয়া, ভিয়েতনাম, কঙ্গো, চাদ, বারকিনো ফাসো, মালদোভা, নামিবিয়া, ইথিওপিয়া ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। এই দেশগুলোর মোট ৮০ কোটি মানুষ ওই দেড় দশকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে আসে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে বাংলাদেশে অতি দারিদ্র্যের হার ছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ, আর ২০১৬ সালে এসে সেটি ১২ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে এখনো সোয়া দুই কোটি হতদরিদ্র মানুষ আছে বাংলাদেশে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, ২০১০ সালের পর থেকে গতি কমে গেছে দারিদ্র্য বিমোচন কমানোর। তবে ওই সময়ের পরে প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচনের গতি কমে যাওয়ার হিসাবের সঙ্গে তা মিলছে না। হয়তো কোথাও কোনো পরিসংখ্যানগত অসংগতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে শিল্প এবং আবাসন দুইটি খাতেই শ্রমঘন কর্মসংস্থান হয়েছে, মজুরিও বেড়েছে। বর্তমানে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি আগের তুলনায় বলা যায় শ্রমঘন নয়। এ কারণে কর্মসংস্থান ও মজুরি আগের মতো বাড়েনি। উদ্যোক্তারা শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধির সুফল পেয়েছে বেশি, যা বৈষম্য বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশে বৈষম্য প্রবল

২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দেশে প্রায় ৫০ লাখের বেশি গরিবের সংখ্যা কমেছে। তবে বাংলাদেশে বৈষম্য প্রবল। বর্তমানে দেশে সবচেয়ে গরিব প্রায় পৌনে ২০ লাখ পরিবার। এই পরিবারগুলোর প্রতি মাসে গড় আয় মাত্র ৭৪৬ টাকা। এরা হলো এ দেশের সবচেয়ে গরিব ৫ শতাংশ পরিবার। আর দেশে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশ পরিবার রয়েছে। ধনী পরিবারের আয় প্রায় লাখ টাকা। এমন ধনী ১৯ লাখ ৬৫ হাজার পরিবারের প্রতি মাসে গড় আয় ৮৯ হাজার টাকা। সেই হিসাবে হতদরিদ্র পরিবারের চেয়ে ধনী পরিবারের আয় প্রায় ১১৯ গুণ বেশি। এই চিত্র উঠে এসেছে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত ২০১৬ সালের খানা আয় ও ব্যয় জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমার গতি কমেছে

আপডেট টাইম : ০৮:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দারিদ্র্য বিমোচনে শীর্ষ ১৫ দেশের মধ্যে নেই বাংলাদেশ। চলতি মাসের ১২ নভেম্বর দারিদ্র্য বিমোচন সম্পর্কিত এমন একটি তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। সেখানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের এই চিত্র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমার গতি কমেছে। এ কারণে তালিকা থেকে বাদ পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।

অথচ ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর দারিদ্র্য বিমোচনের সাফল্য তুলে ধরতে রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একটি শোকেসের আয়োজন করে বিশ্বব্যাংক। সেখানে গত কয়েক দশকে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্যগুলো তুলে ধরা হয়েছিল।

সেই বিশ্বব্যাংকই তিন বছর পরে এসে বলছে, গত দেড় দশকে দ্রুত গতিতে দারিদ্র্য কমানোর দিক দিয়ে শীর্ষ ১৫ দেশের তালিকায় নেই বাংলাদেশ। তালিকায় স্থান করে নেওয়া ১৫টি দেশ দ্রুত দারিদ্র্য কমিয়েছে, সেই তুলনায় বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমেছে এর চেয়ে কম।

২০০০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দ্রুত গতিতে দারিদ্র্য কমানো শীর্ষ ১৫ দেশ হলো- চীন, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তানজানিয়া, ভিয়েতনাম, কঙ্গো, চাদ, বারকিনো ফাসো, মালদোভা, নামিবিয়া, ইথিওপিয়া ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। এই দেশগুলোর মোট ৮০ কোটি মানুষ ওই দেড় দশকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে আসে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে বাংলাদেশে অতি দারিদ্র্যের হার ছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ, আর ২০১৬ সালে এসে সেটি ১২ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে এখনো সোয়া দুই কোটি হতদরিদ্র মানুষ আছে বাংলাদেশে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, ২০১০ সালের পর থেকে গতি কমে গেছে দারিদ্র্য বিমোচন কমানোর। তবে ওই সময়ের পরে প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচনের গতি কমে যাওয়ার হিসাবের সঙ্গে তা মিলছে না। হয়তো কোথাও কোনো পরিসংখ্যানগত অসংগতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে শিল্প এবং আবাসন দুইটি খাতেই শ্রমঘন কর্মসংস্থান হয়েছে, মজুরিও বেড়েছে। বর্তমানে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি আগের তুলনায় বলা যায় শ্রমঘন নয়। এ কারণে কর্মসংস্থান ও মজুরি আগের মতো বাড়েনি। উদ্যোক্তারা শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধির সুফল পেয়েছে বেশি, যা বৈষম্য বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশে বৈষম্য প্রবল

২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দেশে প্রায় ৫০ লাখের বেশি গরিবের সংখ্যা কমেছে। তবে বাংলাদেশে বৈষম্য প্রবল। বর্তমানে দেশে সবচেয়ে গরিব প্রায় পৌনে ২০ লাখ পরিবার। এই পরিবারগুলোর প্রতি মাসে গড় আয় মাত্র ৭৪৬ টাকা। এরা হলো এ দেশের সবচেয়ে গরিব ৫ শতাংশ পরিবার। আর দেশে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশ পরিবার রয়েছে। ধনী পরিবারের আয় প্রায় লাখ টাকা। এমন ধনী ১৯ লাখ ৬৫ হাজার পরিবারের প্রতি মাসে গড় আয় ৮৯ হাজার টাকা। সেই হিসাবে হতদরিদ্র পরিবারের চেয়ে ধনী পরিবারের আয় প্রায় ১১৯ গুণ বেশি। এই চিত্র উঠে এসেছে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত ২০১৬ সালের খানা আয় ও ব্যয় জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।