ঢাকা ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়ক আইনের প্রতিবাদ : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবহন শ্রমিকরা ১০ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৫৪:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৫৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করার প্রতিবাদে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে  পরিবহন শ্রমিকরা। গতকাল সকাল থেকে পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই এই কর্মবিরতি পালন করছে তারা। তাদের হঠাৎ এই কর্মসূচির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই বাস স্ট্যান্ডে এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে ফিরে গেছেন।   নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার পরিবহন শ্রমিকরা এই কর্মবিরতি পালন করছেন।
গতকাল সকাল থেকে হঠাৎ করেই রাজশাহীর সঙ্গে বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। মোটর শ্রমিকরা রাজশাহী নগরীর শিরোইল ও নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল এবং ভদ্রা মোড়ে অবস্থান নিয়ে নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ডাকা কোনো ধর্মঘট নয়। সকাল থেকে শ্রমিকরা নিজেরাই বাস বন্ধ রেখেছেন। রাজশাহীর মালিকদের বাস দু’একটি করে নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে ছেড়ে যাচ্ছে। তবে বাইরের জেলার মালিকদের বাসগুলো রাজশাহী আসার পর পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।’ নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে সাতক্ষীরার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা। গতকাল সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবি, আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়ন করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
হঠাৎ করেই সাতক্ষীরার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নছিমন, করিমন ও ইজিবাইক যোগে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
বাসচালকসহ মোটর শ্রমিক নেতারা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদÐ এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আমাদের এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই। একজন চালকের বেতন সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এ কারণেই নতুন পরিবহন আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়নের জন্য তারা জোর দাবী জানান। আর তা না হলে তারা বাস চালাবেন না।
জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। তারা চান, আগে এটি সংশোধন করা হোক। এরপর এটি বাস্তবায়ন করা হোক। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিলে এতে মালিক পক্ষের তো কিছুই করার থাকেনা।’

নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে মেহেরপুর থেকে সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মেহেরপুর জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়ন। গতকাল সকাল সাড়ে দশটার দিকে কোন ধরণের ঘোষণা ছাড়া চালকরা গাড়িচালনা বন্ধ করে দেন। হঠাৎ করে বাস বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। সকালে যাত্রীরা বাস টার্মিনালগুলোতে এসে বাস না পেয়ে বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।

মেহেরপুর জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান জানান, বর্তমানে নতুন আইন তৈরি হয়েছে তাতে করে চালকরা আর গাড়ি চালাতে চাচ্ছেন না। মেহেরপুর কুষ্টিয়া -চুয়াডাঙ্গা ও মুজিবনগর সহ সকল আন্তঃজেলার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর শুক্রবার একই দাবীতে মেহেরপুর থেকে চালকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে বাস চলাচল শুরু হয়েছিল।

নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে গতকাল সকাল থেকে খুলনার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। এতে দূর-দূরান্তের যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

পরিবহন শ্রমিক নেতারা দুর্ঘটনার মামলায় জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারায় সংশোধন চান। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চলবে।

তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বারবার অনুরোধ সত্তে¡ও আইনটি সংশোধন ছাড়াই বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খুলনায় সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে ঝিনাইদহের স্থানীয় সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বাস শ্রমিকরা।

গতকাল সকাল থেকে ঝিনাইদহ-যশোর, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অনেকে ইজিবাইক ও মহাসড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহনে চলাচল করছেন। ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না চাকরিজীবীরা।
এদিকে বাস চালকদের দাবি, নতুন সড়ক আইন সংশোধন করা হোক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সড়ক আইনের প্রতিবাদ : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবহন শ্রমিকরা ১০ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ

আপডেট টাইম : ০৮:৫৪:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করার প্রতিবাদে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে  পরিবহন শ্রমিকরা। গতকাল সকাল থেকে পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই এই কর্মবিরতি পালন করছে তারা। তাদের হঠাৎ এই কর্মসূচির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই বাস স্ট্যান্ডে এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে ফিরে গেছেন।   নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার পরিবহন শ্রমিকরা এই কর্মবিরতি পালন করছেন।
গতকাল সকাল থেকে হঠাৎ করেই রাজশাহীর সঙ্গে বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। মোটর শ্রমিকরা রাজশাহী নগরীর শিরোইল ও নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল এবং ভদ্রা মোড়ে অবস্থান নিয়ে নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ডাকা কোনো ধর্মঘট নয়। সকাল থেকে শ্রমিকরা নিজেরাই বাস বন্ধ রেখেছেন। রাজশাহীর মালিকদের বাস দু’একটি করে নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে ছেড়ে যাচ্ছে। তবে বাইরের জেলার মালিকদের বাসগুলো রাজশাহী আসার পর পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।’ নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে সাতক্ষীরার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা। গতকাল সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবি, আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়ন করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
হঠাৎ করেই সাতক্ষীরার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নছিমন, করিমন ও ইজিবাইক যোগে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
বাসচালকসহ মোটর শ্রমিক নেতারা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদÐ এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আমাদের এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই। একজন চালকের বেতন সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এ কারণেই নতুন পরিবহন আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়নের জন্য তারা জোর দাবী জানান। আর তা না হলে তারা বাস চালাবেন না।
জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। তারা চান, আগে এটি সংশোধন করা হোক। এরপর এটি বাস্তবায়ন করা হোক। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিলে এতে মালিক পক্ষের তো কিছুই করার থাকেনা।’

নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে মেহেরপুর থেকে সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মেহেরপুর জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়ন। গতকাল সকাল সাড়ে দশটার দিকে কোন ধরণের ঘোষণা ছাড়া চালকরা গাড়িচালনা বন্ধ করে দেন। হঠাৎ করে বাস বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। সকালে যাত্রীরা বাস টার্মিনালগুলোতে এসে বাস না পেয়ে বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।

মেহেরপুর জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান জানান, বর্তমানে নতুন আইন তৈরি হয়েছে তাতে করে চালকরা আর গাড়ি চালাতে চাচ্ছেন না। মেহেরপুর কুষ্টিয়া -চুয়াডাঙ্গা ও মুজিবনগর সহ সকল আন্তঃজেলার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর শুক্রবার একই দাবীতে মেহেরপুর থেকে চালকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে বাস চলাচল শুরু হয়েছিল।

নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে গতকাল সকাল থেকে খুলনার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। এতে দূর-দূরান্তের যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

পরিবহন শ্রমিক নেতারা দুর্ঘটনার মামলায় জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারায় সংশোধন চান। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চলবে।

তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বারবার অনুরোধ সত্তে¡ও আইনটি সংশোধন ছাড়াই বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খুলনায় সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে ঝিনাইদহের স্থানীয় সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বাস শ্রমিকরা।

গতকাল সকাল থেকে ঝিনাইদহ-যশোর, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অনেকে ইজিবাইক ও মহাসড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহনে চলাচল করছেন। ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না চাকরিজীবীরা।
এদিকে বাস চালকদের দাবি, নতুন সড়ক আইন সংশোধন করা হোক।