হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় বৈরাটী ইউনিয়নে পানির ওপর ভাসমান হিসাবে দাড়িয়ে আছে বৈরাটীএস ডি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্টান ভবনটি। প্রতিনিয়ত নৌকায় করে স্কুলে যাতায়াত করে সকল শিক্ষার্থী ছেলে মেয়েরা এবং শিক্ষক সহ কর্চারীরা।
হঠাৎ করে কেউ দেখলে মনে হবে বন্যার জন্য বানভাসিদের দুর্যোগকালীন কোনো আশ্রয়শিবির তৈরী করা হয়েছে। আসলে তা না স্কুলের চারদিকে পানি থৈথৈ করে। দেখলে মনে ভয় চলে আসে এর মধ্যেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে হাওরের বুকে একটি তিনতলা ভবন। যেন দেখা যায় পানিতে ভাসছে ভবনটি। এই ভবনে যাতায়াতের রাস্তা ছয় মাস পানি থাকে এবং ছয় মাস ভাসমান থাকে ।বর্ষা কালে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌকা দিয়ে চলাচল করা। দূর থেকে আশ্রয়শিবির মনে হলেও এটি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বটে। এখানে নিয়মিতই চলছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া অন্য যে কোনো বিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এটি কিশোরগঞ্জ মিঠামইন উপজেলার বৈরাটী ইউনিয়নের মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। বছরের ৩ থেকে ৪ মাস এ বিদ্যালয়ের চারপাশে জমে থাকে পানি। যাতায়াতের জন্য বিদ্যালয় নৌকার ব্যবস্থা করে রাখে গ্রামের লোকজন। এভাবেই এই হাওর এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে বিদ্যালয় গুলো। মিঠামইনে এমন অনেকগুলো বিদ্যাপাঠ কেন্দ্র আছে। এই মাধ্যমিক শিক্ষা ভবনগুলো দেখতে খুবই সুন্দর ।
২০১১ সালে শেষের দিকে মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (এসইএমডিপি) আওতায় সরকারি অর্থায়নে তিনতলা ভবনের এই মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপনের পর ২০১৩ সালে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় হাওর। ভবনের নিচতলা পুরোটাই খালি জায়গা থাকে, যা বছরের অধিকাংশ সময় হাওরের পানিতে তলিয়ে যায়। একমাত্র দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। হাওরঘেঁষা এই প্রত্যন্ত জনপদে আর কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জন্য এটিই হয়ে ওঠে শিক্ষার নির্ভরযোগ্য পাঠপীঠ। দুটি তলায় ১৪টি সুপরিসর শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। ভবনের ছাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শ্রমে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ফল ও ফুলের অসাধারণ বাগানের গাছ। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে যেন সবুজের সমারোহ। ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসের অবসরে বিদ্যালয়ের এই ছাদবাগানে পড়াশোনা করে থাকে। নিবিড় পাঠাদানের জন্য এখানে রয়েছেন ১৮ জন অভিজ্ঞ ও দায়িত্বশীল শিক্ষক। বছর শেষে বিদ্যালয়ের ফলও অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। হাওরবেষ্টিত গ্রামের প্রায় চার শতাধিক ছেলেমেয়ে এখানে পড়াশোনা করছেন।