১১ লাখ টাকা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে ভাগলেন প্রবাসীর স্ত্রী

দীর্ঘদিন পরকীয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে পালিয়ে গেছেন এক প্রবাসীর স্ত্রী। বিয়েও করেছেন তারা। পালানোর সময় স্বামীর পাঠানো ১১ লাখ ১৩ হাজার টাকাও নিয়ে গেছেন তিনি।

সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এ ঘটনায় ১৭ সেপ্টেম্বর নিজের স্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার এএসআই রাসেলের বিরুদ্ধে এসপির কাছে অভিযোগ করেছেন প্রবাসী মো. কবির হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রামে বিয়ে করেন কবির হোসেন। তাদের ঘরে রয়েছে তিন শিশুসন্তান। ২০১৭ সালের ২ আগস্ট সৌদি আরবে পাড়ি জমান কবির। ২০১৮ সালে কবিরের শ্যালক সাব্বিরের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে গিয়ে সদর মডেল থানা পুলিশের এএসআই রাসেল মিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় কবিরের স্ত্রীর। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন রাসেল।

কবিরের অভিযোগ, আমার স্ত্রীকে বিয়ে করে পুলিশ কর্মকর্তা রাসেল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। প্রবাসে থাকাকালে স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১ লাখ ১৩ হাজার টাকা পাঠাই। সেই টাকা নিয়ে রাসেলের সঙ্গে চলে গেছেন স্ত্রী।

জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রবাসীর স্ত্রীকে বিয়ে করেন দুই সন্তানের জনক রাসেল। প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর দ্রুত নোয়াখালী জেলায় বদলি হন রাসেল। তবে ঘটনার খবর পেয়ে ১ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব থেকে দেশে ছুটে আসেন প্রবাসী কবির। এরপর সংসার ভাঙার বিচার নিয়ে হাজির হন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে।

কবির বলেন, বিয়ের পর থেকে পর্দানশীল ছিল আমার স্ত্রী। কিন্তু প্রবাসে থাকার সময় সেই স্ত্রীর বেসামাল ছবি দেখতে পাই। স্ত্রী সিগারেট টানছেন, মদের বোতল বিছানায় ছড়ানো। এমন ছবি আমার কাছে পাঠানো হয়। বিদেশে যাওয়ার সময় শ্বশুরবাড়ি কান্দিপাড়া এলাকায় স্ত্রী-সন্তানকে রেখে যাই। কিন্তু রাসেলের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পর কান্দিপাড়া ছেড়ে কলেজপাড়ায় বাসা ভাড়া নেয় স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রবাসে থাকাকালে ৫ মে কবিরকে তালাক দেন স্ত্রী। তালাকের নোটিশ আগস্ট মাসে সৌদি আরবে কবিরের হাতে পৌঁছে। এরই মধ্যে রাসেলকে বিয়ে করেন তিনি।

এ বিষয়ে প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, আগের স্বামীর সঙ্গে গত দুই বছর ধরে বনিবনা ছিল না। আমি যদি কবিরের সংসার না করি তাহলে আরেকজনকে বিয়ে করার অধিকার আমার আছে। রাসেল পারিবারিকভাবে আমার পরিচিত। তার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মানুষ নানা কথা বলছে। সে কারণে রাসেলকে বিয়ে করেছি।

তিনি আরো বলেন, সংসার করা এই বিয়ের উদ্দেশ্যে নয়। যদি সংসার করার ইচ্ছা থাকতো তাহলে তার সঙ্গে নোয়াখালী চলে যেতাম। আমি জানি তার বউ-বাচ্চা আছে। এরপরও তাকে বিয়ে করেছি।

বিবাহিত হওয়ার পরও প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে উভয় সংকটে আছেন এএসআই রাসেল মিয়ে। নিজেকে পরিস্থিতির শিকার দাবি করে তিনি বলেন, বিয়ে না করলে ঝামেলা হবে বলেই বিয়ে করতে হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি মো. আনিসুর রহমান বলেন, অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর