ঢাকা ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

শিক্ষার্থীদের পাতে শুধু নুন-রুটি, ছবি প্রকাশে মামলা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২১৪ বার

স্কুল পড়ুয়া শিশুরা লাইন ধরে বসে শুধু নুন দিয়ে রুটি খাচ্ছে—ভারতের উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর জেলার একটি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন ছবি প্রকাশ করেছেন এক সাংবাদিক।

ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ওই সাংবাদিক। উত্তর প্রদেশ সরকারকে অপমান করতেই তিনি এ কাজ করেছেন—এমন অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে।

ওই অঞ্চলের ব্লক এডুকেশন অফিসার অভিযোগ করেন, এই ছবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি সাংবাদিকের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।

রাজ্যের ‘মিড-ডে মিল’ দেখভালকারী সংস্থা সরকারি ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সরকার পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের নিয়মিত ডাল, ভাত, রুটি ও তরকারি খেতে দেওয়া হয়। এছাড়া ফল ও দুধ দেওয়া হয় নির্দিষ্ট দিনে।

ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরেই সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চাওয়া হলে তিন পৃষ্ঠার প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিডিওটি তোলার দিন স্কুলে কেবল রুটিই বানানো হয়েছিল। সেদিন কোনো সবজি বা অন্য কিছু রান্না হয়নি।

এরপরেও সাংবাদিক ও গ্রাম প্রধানের প্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে উত্তর প্রদেশ সরকার।

প্রকৃত সত্য সামনে আনতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অনুরাগ প্যাটেল নামে সরকারের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে।

ভিডিও ধারণ করার সময় সাংবাদিক পবন জয়সওয়ালকে একজন অভিভাবক জানান, এখানে সব কিছুই খুব খারাপভাবে চলছে। কখনও কখনও স্কুল কর্তৃপক্ষ বাচ্চাদের শুধু নুন ও রুটি খেতে দেয়। কখনও শুধু নুন-ভাত। দুধ যখন আসে তখন তার বেশির ভাগ অংশ শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় না। আর কলা কখনও দেওয়া হয় না শিক্ষার্থীদের। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে।

উত্তর প্রদেশ সরকারের তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে দেড় লাখের বেশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল সরবরাহ করা হচ্ছে। এক কোটিরও বেশি শিশু এ প্রকল্প থেকে উপকৃত হওয়ার কথা।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য মতে, মিড-ডে মিল স্কিমটি প্রতিটি শিশুকে প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৪৫০ ক্যালোরি সরবরাহ করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে অন্তত ১২ গ্রাম প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। এই খাবার প্রতিটি শিশুকে বছরে কমপক্ষে ২শ’ দিন পরিবেশন করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

তিতুমীর কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এক সপ্তাহে কমিটি গঠন

শিক্ষার্থীদের পাতে শুধু নুন-রুটি, ছবি প্রকাশে মামলা

আপডেট টাইম : ০১:০১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

স্কুল পড়ুয়া শিশুরা লাইন ধরে বসে শুধু নুন দিয়ে রুটি খাচ্ছে—ভারতের উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর জেলার একটি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন ছবি প্রকাশ করেছেন এক সাংবাদিক।

ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ওই সাংবাদিক। উত্তর প্রদেশ সরকারকে অপমান করতেই তিনি এ কাজ করেছেন—এমন অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে।

ওই অঞ্চলের ব্লক এডুকেশন অফিসার অভিযোগ করেন, এই ছবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি সাংবাদিকের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।

রাজ্যের ‘মিড-ডে মিল’ দেখভালকারী সংস্থা সরকারি ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সরকার পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের নিয়মিত ডাল, ভাত, রুটি ও তরকারি খেতে দেওয়া হয়। এছাড়া ফল ও দুধ দেওয়া হয় নির্দিষ্ট দিনে।

ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরেই সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চাওয়া হলে তিন পৃষ্ঠার প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিডিওটি তোলার দিন স্কুলে কেবল রুটিই বানানো হয়েছিল। সেদিন কোনো সবজি বা অন্য কিছু রান্না হয়নি।

এরপরেও সাংবাদিক ও গ্রাম প্রধানের প্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে উত্তর প্রদেশ সরকার।

প্রকৃত সত্য সামনে আনতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অনুরাগ প্যাটেল নামে সরকারের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে।

ভিডিও ধারণ করার সময় সাংবাদিক পবন জয়সওয়ালকে একজন অভিভাবক জানান, এখানে সব কিছুই খুব খারাপভাবে চলছে। কখনও কখনও স্কুল কর্তৃপক্ষ বাচ্চাদের শুধু নুন ও রুটি খেতে দেয়। কখনও শুধু নুন-ভাত। দুধ যখন আসে তখন তার বেশির ভাগ অংশ শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় না। আর কলা কখনও দেওয়া হয় না শিক্ষার্থীদের। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে।

উত্তর প্রদেশ সরকারের তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে দেড় লাখের বেশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল সরবরাহ করা হচ্ছে। এক কোটিরও বেশি শিশু এ প্রকল্প থেকে উপকৃত হওয়ার কথা।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য মতে, মিড-ডে মিল স্কিমটি প্রতিটি শিশুকে প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৪৫০ ক্যালোরি সরবরাহ করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে অন্তত ১২ গ্রাম প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। এই খাবার প্রতিটি শিশুকে বছরে কমপক্ষে ২শ’ দিন পরিবেশন করতে হবে।