হাওর বার্তা ডেস্কঃ সবজি চাষে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। প্রচলিত কৃষির বাইরে বিদেশি জাতের বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, ফলমূল চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সবজি রপ্তানির জন্য দু’টি কার্গো বিমান কিনতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সভাকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবজি বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছি। এখন কার্গো বিমান কেনার সময় এসেছে। দু’টি কার্গো কিনে ফেলেন। পরে অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বিমানের অবস্থা ভালো। বিমান নিজের টাকা দিয়েই দু’টি কার্গো বিমান কিনতে পারবে। একনেক সভায় ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জোরদারকরণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশ সবজি উৎপাদনে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সবজি রপ্তানি করা হচ্ছে। এ কাজে আমরা কার্গো বিমান ভাড়া করছি। তাই, দু’টি হিমায়িত কার্গো বিমান কেনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, একনেক সভায় ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ১৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সভায় বিদ্যুতের লাইন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে সব বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচে স্থাপন করতে হবে। এছাড়া, ৭১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা কর ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, খুলনা লবণাক্ততা-প্রবণ এলাকা। এখানে ভবন নির্মাণের সময় বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
বড় সরকারি ভবনে ‘ডে কেয়ার সেন্টার’র ব্যবস্থা করতে হবে। নানা দিক-নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৃষ্টির পানিতে ভাঙ্গন রোধে পার্বত্য এলাকায় সড়কের উভয় পাশে চিকন বাঁশ রোপণ করতে হবে। নদীভাঙন রোধে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে জোর দিতে হবে। ‘মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে ভোলা জেলার চরফ্যাশন পৌর শহর সংরক্ষণ’ প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৭৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে এক কর্মকর্তা গাফিলতি করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রকল্পের ভুল অ্যাসেসমেন্টের জন্য সংশিষ্ট কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সড়ক নির্মাণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে, বর্ষার সময় পানির প্রবাহ আটকে না থাকে।
মূল্যস্ফীতি বেড়েছে: বেড়েছে খাদ্য পণ্য ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি। জুলাই মাসে খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৫ দশমিক ৪২ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। গতকাল এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব তথ্য জানান। তবে, জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমেছে ৫ দশমিক ৬২ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ঈদের কারণে মানুষ কেনাকাটা বেশি করেছে। তাছাড়া বন্যার কারণে অনেক শাকসবজি নষ্ট হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে সরবরাহ চেইনের মধ্যে সমস্যা ছিল। তাই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে, গ্যাসের দাম বাড়ার কারণেও কিছুটা মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬০ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৭ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশে।