হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহীতে পাট কাটা শুরু হয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ আগেই। পানিতে জাগ দেয়ার পর পাটের সোনালী আঁশ ছড়ানোর কাজও শুরু হয়েছে। রোদে শুকানোর পর কোনো কোনো কৃষক বিক্রিও করছেন আড়তে নিয়ে। পাট মৌসুমের শুরুতেই তারা ভাল দামও পাচ্ছেন। ফলে এ বছর সোনালী আঁশে রাজশাহীর কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, গেল বছর রাজশাহীতে পাটের আবাদ হয়েছিল ১৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে।
এবার এই পরিমাণ জমিকেই পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার পাটের আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে। দুই সপ্তাহ ধরে পাট কাটা শুরু হয়েছে। জাগ দেয়ার পর পাটের আঁশ আলাদা করে বিক্রিও শুরু হয়েছে কোথাও কোথাও।
জেলার পবা উপজেলার নতুন ফুদকিপাড়া গ্রামের পাটচাষি আবু আসলাম জানান, এবার চার বিঘা জমিতে তিনি পাট চাষ করেছেন। গত সপ্তাহে দুই বিঘা জমির পাট কেটে জাগ দিয়েছেন। এবার বৃষ্টি হওয়ায় খালে-বিলে পানিও আছে। পাটের আবাদ ভাল হয়েছিল। খালে পানি থাকায় আঁশের মান ভাল হবে বলেই তিনি আশা করছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি পাটের আঁশ বিক্রি করতে পারবেন।
দুর্গাপুর উপজেলার পুরানতাহিরপুর গ্রামের পাটচাষি কালাম শেখ জানান, এবার তিনি এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করে ফলন পেয়েছেন নয় মণ। প্রতি মণ বিক্রি করেছেন এক হাজার ৬০০ টাকা দরে। এক বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছিল সাড়ে সাত হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করে শুধু সোনালী আঁশ বিক্রি করেই তার প্রায় সাত হাজার টাকা লাভ হয়েছে। পেয়েছেন কিছু পাটখড়ি। সেগুলো বাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করবেন।
জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার ফুলতলা গ্রামের পাটের আড়তদার আবুল হোসেন জানান, তিনি বর্তমানে পুরাতন পাট কিনছেন দুই হাজার টাকা মণ দরে। নতুনের দাম দেড় হাজার থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। তবে এখন নতুন পাট খুব কম আসছে। আগামী দুই সপ্তাহ পর প্রচুর পরিমাণে পাটের এ বছরের নতুন আঁশ আড়তে আসবে। তবে দাম খুব একটা কমবে না বলেই জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুল হক বলেন, পাট চাষে তেমন একটা খরচ নেই। বীজ কেনা এবং মাঝে দুটি নিড়ানি দেয়ার প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে বিঘাপ্রতি খরচ হয় সর্বোচ্চ আট হাজার টাকা। আর পাটের গড় উৎপাদন সাড়ে আট মণ। দাম ভাল থাকলে চাষিরা লাভবান হন। তিনি বলেন, সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। এখন পাটের আঁশের বহুমুখি ব্যবহার হচ্ছে। তাই দাম ভাল থাকছে। চাষিরা লাভবান হচ্ছেন