হাওর বার্তা ডেস্কঃ জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট প্রসঙ্গ আসলে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়বেন এমন ক্রিকেট ভক্তের সংখ্যা অনেক। খোদ বাংলাদেশেই জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের শুভাকাঙ্খী আছেন শত সহস্র। পেছনে ফেলে আসা বাংলাদেশের দুর্দিনে পাশে এসে দাড়িয়েছিলো জিম্বাবুয়ে। অথচ বাংলাদেশের ক্রিকেট যেখানে উন্নত থেকে উন্নততর হয়েছে সেখানে শুধুই পিছিয়েছে তারা। এখন বাংলাদেশ যখন সেমি ফাইনাল স্বপ্নে বিভোর ঠিক তখনি অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত হওয়ার দিন গুনছে ক্রিকেটের জিম্বাবুরে।
দেশটির জাতীয় রাজনীতির প্রভাবে ক্রিকেটাঙ্গনেও দুর্নীতি এতটাই অসহনীয় পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, আগের টানা নয়টি বিশ্বকাপ আসরে খেলার পর বাজে ফর্মের কারণে এবারের বিশ্বকাপে খেলার টিকিটই মেলেনি। বিশ্বকাপ দুঃসংবাদ শেষে ফের বড় ধাক্কাই খেল জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট। সেদেশের ক্রিকেটাঙ্গন এতটাই টালমাটাল অবস্থা এরই মধ্যে জিম্বাবুয়ে সরকার দেশটির ক্রিকেট বোর্ডকে ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে!
জিম্বাবুয়ে সরকারের স্পোর্টস এন্ড রিক্রিয়েশন কমিটি (এসআরসি) জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গিভমোর মাকোনিকে বহিষ্কার করেছে। একই সাথে বোর্ডে অন্যান্য পদে কর্মরত সব সদস্যকেও সরিয়ে দিয়েছে এসআরসি।
গিভমোর মাকোনির জায়গায় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যানের পদে ফের বসানো হয়েছে তাবেঙগোয়া মুকুলানিকে। এছাড়া অন্যান্য পদে নতুন ভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ডেভিড এলমেন-ব্রাউন, আহমেদ ইব্রাহিম, চার্লি রবার্টসন, কিপ্রিয়ান মান্দেঙ্গে, রবার্টসন চিনিয়েঙ্গেতেরে, সেকেসাই নোকোয়ারা এবং ডানকান ফ্রস্টকে।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড বেশ কয়েক বছর ধরেই বিতর্কের মুখে। এর কারণ হিসেবে আগের কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডকে দায়ী করে আসছিলো দেশটির গণমাধ্যমগুলো। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর অভিযোগ আসে আগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় স্পোর্টস এন্ড রিক্রিয়েশন কমিটি এক বিজ্ঞপ্তিতে বোর্ডের সব কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, ‘গত কয়েক বছর ধরেই নানান বিতর্কে জড়িয়ে পরেছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট। তাদের বিপক্ষে ক্রিকেটে উন্নয়নের ঘাটতি এবং বোর্ডের নিয়মকানুন অবজ্ঞার অনেক অভিযোগ আসতে থাকে পুরো দেশ জুড়ে। ব্যাপারটা হলো জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) পূর্ণ সদস্য। এর মানে এই নয় যে, তারা (ক্রিকেট বোর্ড) জিম্বাবুয়ের আইনের বাইরে। বিশেষ করে এসআরসি আইনের অধীনে আছে তারা।’
পদ হারানোর পর মাকোনিও চুপ করে বসে থাকেননি। এক বক্তব্যে এসআরসির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, এসআরসি তাকে দিয়ে বেআইনি কাজ করাতে চায়। মাকোনির ভাষায়, ‘এসআরসির নির্দেশ পুরোপুরিভাবে আইনের বাইরে এবং তারা আমাদের জোর করছে বেআইনি কাজ করার জন্য।’ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের এমন তুলকালাম কাণ্ডে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। সামনে জুলাই মাসের আইসিসির বার্ষিক কনফারেন্সে তারা এই বিষয়ে কথা বলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।