যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলায় অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় আগামী ২৯ জুন পরবর্তী প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছে ঢাকা সিএমএম আদালত।
মঙ্গলবার সিআইডি পুলিশের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান এই দিন ধার্য করেন।
গত ১৫ এপ্রিল মামলাটিতে ১২ জনকে অভিযুক্ত করে র্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার কাজেমুর রশিদ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে গত ৯ জুন আদালতে নারাজি দাখিল দাখিল করেন বাদী মিল্কির ভাই মেজর রাশিদুল হাসান খান। ওই নারাজি গ্রহণ করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, মিল্কির ড্রাইভার মারুফ রেজা সাগরের স্ত্রী ফাহিমা ইসলাম লোপা, এসএম জাহিদ সিদ্দকী ওরফে তারেক ওরফে কিলার তারেক (ঘটনার পর দিন বন্দুকযুদ্ধে নিহত), শাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, জাহাঙ্গীর মন্ডল, শহিদুল ইমলাম, আমিনুল ইসলাম হাবিব, সোহেল মাহমুদ, চুন্নু মিয়া, মো. আরিফ, ইব্রাহিম খলিলউল্লাহ, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ও শরিফ উদ্দিন চৌধুরী পাপ্পু।
চার্জশিটে হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন আসামি জাহিদুল ইসলাম টিপু ও ওহিদুল আলম আরিফ ভুঁইয়াকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।
২০১৩ সালের ২৬ জুন রাতে রাজধানীর গুলশানের শপার্স ওয়াল্ডের সামনে গুলিতে নিহত হন মিল্কি। ওই শপার্স ওয়াল্ডের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা চিত্রে দেখা যায়, ওই রাতে শপার্স ওয়াল্ডের সামনে প্রাইভেটকার থেকে মিল্কি নামার পর সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপি পরা এক যুবক বাম কানে মোবাইলে কথা বলতে বলতে মিল্কির সামনে এসে ডান হাতে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে প্রথমে একটি গুলি ছোড়েন।
গুলিবিদ্ধ মিল্কি বাম দিকে হেলে মাটিতে পড়ে হামাগুঁড়ি দিতে থাকেন। এসময় ওই যুবক মিল্কিকে লক্ষ্য করে সাত/আটটি গুলি ছোড়েন। এরপর পেছন থেকে এক যুবক মোটর সাইকেল চালিয়ে এলে গুলিবর্ষণকারী যুবক ওই মোটর সাইকেলের পেছনে বসে চলে যায়। সোদা পাঞ্জাবি পরা যে যুবকটিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায় তিনি ছিলেন তারেক ওরফে কিলার তারেক এবং তারেককে মটর সাইকেলে করে পালিয়ে যাওয়া যুবকের নাম সোহেল মাহমুদ।
চার্জশিটের ১২ আসামির মধ্যে তারেক, সোহেল, আরিফ, চুন্নু, চঞ্চল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মিল্কিকে গুলি করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা এবং লোপা, শহিদুল, জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহিম ঘটনাস্থলে না থেকে হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তার জন্য তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪/১০৯ ধারায় এবং শরীফ পাপ্পুর বিরুদ্ধে আসামিকে পলাতে সহায়তার জন্য দণ্ডবিধির ২১২ ধারায় ওই চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
মামলায় ১১ প্রকার আলামত জন্দ করার কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত চিত্র এবং ১৫ রাউন্ড গুলির খোসা রয়েছে।
অধিপত্য বিস্তার, সাংগঠনিক পদ দখল, নির্বাচনী মনোনয়ন, বিভিন্ন উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থবণ্টন নিয়ে মিল্কির সঙ্গে তারেকের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।