ঢাকা ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেসবুক ভেঙ্গে ৩টি কোম্পানি করার প্রস্তাব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯
  • ২৫৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট ফেসবুক ভেঙে তিনটি পৃথক কোম্পানি করার প্রস্তাব দিয়েছেন এর সহ–প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস হিউস। গত বৃহস্পতিবার (০৯মে) প্রকাশিত এক নিবন্ধে হিউজ এই প্রস্তাব করেন। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।

নিউনিয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত ওই নিবন্ধে হিউস লিখেছেন, জুকারবার্গ ভালো মানুষ। কিন্তু আমার ক্ষোভ সেখানে যে লাভের লোভে সে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিসর্জন দিয়েছে, ক্লিকের লোভে বিসর্জন দিয়েছে সহনশীলতাকে।” জুকারবার্গ বিশ্বে একচ্ছত্র ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন। তার মতো ক্ষমতা কোনো বেসরকারি কোম্পানি তো দূরের কথা কোনো সরকারের কারও নেই। প্রযুক্তি খাতে ফেসবুকের মতো একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে নতুন তদারকি সং স্থা গড়ে তোলতে হবে।

তিনি বলেন, “জুকারবার্গ একটি দানব তৈরি করেছে। যে কারণে অন্য উদ্যোক্তাদের পথে বসাচ্ছে। গ্রাহকের পছন্দও নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সরকারের এটা নিশ্চিত করা উচিৎ যে অদৃশ্য হাতের জাদুতে আমরা যাতে হেরে না যাই।”

হিউসের কঠোর এই লেখার প্রতিক্রিয়ায় ফেইসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ সিএনএনকে বলেছেন, “এটা আমরা স্বীকার করছি যে সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। কিন্তু সফল একটি কোম্পানি জোর করে বন্ধের দাবি তুলে দায়িত্বশীলতা আনা যায় না।”

হিউস বলেন, ‘১৫ বছর হয়ে গেল হারভার্ডে আমি ফেসবুক সহ-প্রতিষ্ঠা করি। এটাও সত্যি যে গত এক দশকে আমি ওই সংস্থার জন্য কোনও নকাজ করিনি। তিন্তু তবু আমি ক্ষোভ ও দায়িত্ববোধে ভুগি।’

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা দেশটির বিচার বিভাগের কাছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ‘অ্যান্টি–ট্রাস্ট তদন্ত’ চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরাও বলছেন, ফেসবুক এখন এত সুবিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে যে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় হিউসহ কয়েকজন বন্ধুর যৌথ উদ্যোগে জাকারবার্গ যে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, তা-ই বিশাল কলেবর নিয়ে আজকের ফেসবুকে পরিণত হয়েছে।

২০০৬ সালে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরুর পর ইন্টারনেট জগতে কোটি কোটি মানুষ এখন ফেসবুকে যুক্ত। এই কোম্পানির সম্পদমূল্য এখন শত বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই। কোম্পানির রমরমা অবস্থার সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জাকারবার্গ।

জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকলেও নানা বিতর্কের সঙ্গী হয়েছে ফেসবুক। গ্রাহকের তথ্য চুরি, ভুয়া তথ্য প্রচার, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, তথ্য বিনিময় করার চর্চা, ঘৃণিত বক্তব্য ও ভুয়া খবর ছড়ানো ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগ আছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ফেসবুক ভেঙ্গে ৩টি কোম্পানি করার প্রস্তাব

আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট ফেসবুক ভেঙে তিনটি পৃথক কোম্পানি করার প্রস্তাব দিয়েছেন এর সহ–প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস হিউস। গত বৃহস্পতিবার (০৯মে) প্রকাশিত এক নিবন্ধে হিউজ এই প্রস্তাব করেন। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।

নিউনিয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত ওই নিবন্ধে হিউস লিখেছেন, জুকারবার্গ ভালো মানুষ। কিন্তু আমার ক্ষোভ সেখানে যে লাভের লোভে সে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিসর্জন দিয়েছে, ক্লিকের লোভে বিসর্জন দিয়েছে সহনশীলতাকে।” জুকারবার্গ বিশ্বে একচ্ছত্র ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন। তার মতো ক্ষমতা কোনো বেসরকারি কোম্পানি তো দূরের কথা কোনো সরকারের কারও নেই। প্রযুক্তি খাতে ফেসবুকের মতো একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে নতুন তদারকি সং স্থা গড়ে তোলতে হবে।

তিনি বলেন, “জুকারবার্গ একটি দানব তৈরি করেছে। যে কারণে অন্য উদ্যোক্তাদের পথে বসাচ্ছে। গ্রাহকের পছন্দও নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সরকারের এটা নিশ্চিত করা উচিৎ যে অদৃশ্য হাতের জাদুতে আমরা যাতে হেরে না যাই।”

হিউসের কঠোর এই লেখার প্রতিক্রিয়ায় ফেইসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ সিএনএনকে বলেছেন, “এটা আমরা স্বীকার করছি যে সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। কিন্তু সফল একটি কোম্পানি জোর করে বন্ধের দাবি তুলে দায়িত্বশীলতা আনা যায় না।”

হিউস বলেন, ‘১৫ বছর হয়ে গেল হারভার্ডে আমি ফেসবুক সহ-প্রতিষ্ঠা করি। এটাও সত্যি যে গত এক দশকে আমি ওই সংস্থার জন্য কোনও নকাজ করিনি। তিন্তু তবু আমি ক্ষোভ ও দায়িত্ববোধে ভুগি।’

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা দেশটির বিচার বিভাগের কাছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ‘অ্যান্টি–ট্রাস্ট তদন্ত’ চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরাও বলছেন, ফেসবুক এখন এত সুবিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে যে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় হিউসহ কয়েকজন বন্ধুর যৌথ উদ্যোগে জাকারবার্গ যে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, তা-ই বিশাল কলেবর নিয়ে আজকের ফেসবুকে পরিণত হয়েছে।

২০০৬ সালে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরুর পর ইন্টারনেট জগতে কোটি কোটি মানুষ এখন ফেসবুকে যুক্ত। এই কোম্পানির সম্পদমূল্য এখন শত বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই। কোম্পানির রমরমা অবস্থার সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জাকারবার্গ।

জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকলেও নানা বিতর্কের সঙ্গী হয়েছে ফেসবুক। গ্রাহকের তথ্য চুরি, ভুয়া তথ্য প্রচার, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, তথ্য বিনিময় করার চর্চা, ঘৃণিত বক্তব্য ও ভুয়া খবর ছড়ানো ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগ আছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।